সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা চালানোর কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তোপের মুখে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সুচি। বুধবার সুচির কার্যালয়ের মুখপাত্র জ্য হতে এ তথ্য জানান।
জ’ হতে বলেন, সাধারণ পরিষদের বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন না রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা (সুচি)। সুচি নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, অভ্যন্তরীণ শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য এবং সাম্প্রদায়িক সংঘাতের বিস্তার রোধের চেষ্টা করছেন।
সুচি নেতৃত্বাধীন দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, জাতিগত সহিংসতার জেরে প্রচণ্ড চাপের মুখে থাকা অং সান সুচি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেবেন না। তবে তিনি বলেন, সমস্যা মোকাবেলা অথবা সমালোচনার মুখোমুখি হতে সুচি ভীত নন।
বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা সুচির কার্যালয় জানায়, বিদ্রোহীদের নিরাপত্তা হুমকি, শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে তার নেয়া পদক্ষেপ বাস্তবায়নের জন্যই তিনি সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেবেন না।
জানা যায়, সুচির পরিবর্তে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেবেন মিয়ানমারের ভাইস প্রেসিডেন্ট হেনরি ভান থিও। আগামী ১৯ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে এ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো লক্ষ্য করে অভিযান চালাচ্ছে। এ অভিযানে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা হত্যা-ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ অভিযানকালে এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে এবং প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তিন লাখ ৭০ হাজার। এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ চাপের মুখে আছেন রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টার পদমর্যাদায় দেশটির শাসন ক্ষমতায় থাকা সুচি।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে মিয়ানমারের জাতীয় নেতা হিসেবে সুচি প্রথমবারের মতো ভাষণ দেন। ওই সময় তিনি সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ঘিরে চলমান সঙ্কটে তার সরকারের নেয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তবে তিনি এ সমস্যা সমাধান করতে পারেননি। উল্টো যেকোনো সময়ের চেয়ে রোহিঙ্গা সংকট বেড়েছে বহুগুণ।
গত বছরের অধিবেশনে দেয়া ওই বক্তব্যের পরের মাস অক্টোবরেই রোহিঙ্গাদের ওপর বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ জাতিগত নিধন অভিযান চললেও তা বন্ধে সুচির কোনো ভূমিকা ছিল না। বরং তিনি গণহত্যাকারী নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যক্রমকে সমর্থন করছেন। সূত্র: বিবিসি
বিবার্তা/নিশি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]