শিরোনাম
ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ, যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি
প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭, ১২:৫৪
ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ, যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি
মাশহাদে প্রথমে বিক্ষোভ শুরু হয়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ার পর কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ার করে বলেছে, বিশ্ব সব দেখছে।


হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে বলেছে, সরকারের দুর্নীতি এবং দেশের সম্পদ সন্ত্রাসবাদ খাতে ব্যয় করায় ইরানি জনগণ রুষ্ট-বিরক্ত। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরও বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়েছে।


হাজার হাজার মানুষ ইরানের কেরমানশাহ, রাশত, ইসফাহান ও কোম শহরে বিক্ষোভ করছে। রাজধানী তেহরানেও শুক্রবার বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিতে সেখানে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়।


দেশটির দ্বিতীয় জনবহুল শহর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় মাশহাদে বৃহস্পতিবার প্রথমে বিক্ষোভ শুরু হয়, পরে বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ে। উচ্চ দ্রব্যমূল্য নিয়ে ক্ষুব্ধ লোকজন মাশহাদের রাস্তায় নেমে এসে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে। তারা প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির বিরুদ্ধে শ্লোগান দেন। বিক্ষোভ চলাকালে ‘কটু শ্লোগান’ দেয়ায় ৫২ জনকে গ্রেফতার করা হয়।


পরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য শহরে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে রাজবন্দিদের মুক্তি ও পুলিশি নির্যাতন বন্ধেরও দাবি জানানো হয়েছে। প্রথম দিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হলেও পরে তা মোল্লাতন্ত্র ও সরকারি নীতিবিরোধী বিক্ষোভে রূপ নেয়।


মাশহাদ শহরে বিক্ষোভ


২০০৯ সালে সংস্কারপন্থীদের ব্যাপক বিক্ষোভের পর এবারের বিক্ষোভকেই জন অসন্তোষের সবচেয়ে গুরুতর ও ব্যাপক অভিব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করছেন পর্যবেক্ষকরা। এদিকে তেহরানের গভর্ণর হুঁশিয়ার করে বলেছেন, এরকম সরকারবিরোধী বিক্ষোভের কোনো অনুমতি নেই এবং পুলিশ এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।


ইরানের এরকম স্বতস্ফূর্ত সরকারবিরোধী বিক্ষোভ বেশ বিরল। ইরানের রেভ্যুলেশনারি গার্ড বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এমন বিক্ষোভ যেন হতে না পারে, সেজন্যে বেশ সতর্ক থাকে। ইরানের সরকার এই বিক্ষোভের জন্য ‘প্রতি বিপ্লবী’ ও ‘বিদেশি এজেন্টদের’ দায়ী করছে।


সম্প্রতি চালানো এক জরিপে দেখা যায়, গত ১০ বছরে ইরানের গড়ে একজন মানুষের আয় প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে। অনেকে মনে করেন, ইরান বিদেশে যুদ্ধ চালাতে গিয়ে প্রচুর অর্থ খরচ করছেন, যা তাদের দেশেই ব্যয় করা উচিৎ। শিয়া ইসলামের প্রচারের কাজেও তারা শত শত কোটি ডলার খরচ করছে।


কেরমানশাহ শহরে বিক্ষোভ


বিক্ষোভের শুরুর দিকে অর্থনৈতিক অবস্থা ও দুর্নীতি আন্দোলনকারীদের মনোযোগের কেন্দ্রে থাকলেও পরে তা রাজনৈতিক দিকে মোড় নেয়। কেবল প্রেসিডেন্ট রুহানিই নন, দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খোমেনি ও সর্বোপরি ধর্মীয় শাসনের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছে।


বিক্ষোভকারীদের ‘জনগণ ভিক্ষা করছে, মোল্লারা ঈশ্বরের মতো আচরণ করছে’ এমন স্লোগান দিতে দেখা গেছে।


অনেক বিক্ষোভকারী বহির্বিশ্বে ইরানের হস্তক্ষেপের বিষয়েও ক্ষোভ জানিয়েছে। মাশহাদ শহরে অনেককে ‘গাজা নয়, লেবানন নয়, আমার জীবন ইরানের জন্য’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে। ইরানের বর্তমান প্রশাসন অভ্যন্তরীণ বিষয়ের চেয়ে পররাষ্ট্র বিষয়ে বেশি মনোযোগী বলেও অভিযোগ তাদের।


অনলাইনে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি ভিডিওতে বিক্ষোভকারীদের ‘সিরিয়া ছাড়, আমাদের নিয়ে ভাবো’ বলতে শোনা গেছে। সূত্র: বিবিসি


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com