শিরোনাম
ইরানে বিক্ষোভ ‘শক্ত হাতে’ দমনের হুমকি, নিহত ২
প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৬:২১
ইরানে বিক্ষোভ ‘শক্ত হাতে’ দমনের হুমকি, নিহত ২
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দোরুদ শহরে শনিবার রাতে দুই বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। সরকার বিরোধী বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে এ ঘটনা ঘটে। প্রদেশের ডেপুটি গভর্ণর রবিবার এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।


সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন চলতে থাকলে তা শক্ত হাতে তা দমন করা হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে দেশটির রেভ্যুলেশনারি গার্ড বাহিনী। দেশটিতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জীবনমান নিম্নমুখী হয়েছে, এমন অভিযোগে তৃতীয় দিনের মতো ইরানের বিভিন্ন বড় শহরে বিক্ষোভ চলছে।


রাজধানী তেহরানে শনিবার বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় ও কয়েকটি সরকারি ভবনে হামলা চালায়। শহরের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে অবস্থান নিয়ে তারা পুলিশের দিকে পাথর ছুড়ে মারে, এর অদূরেই সরকারপন্থি মিছিলকারীরা অবস্থান করছিল।



খোরামাবাদ, যানজান ও আহভাজ শহরে রবিবার মিছিল থেকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনির পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেয় হয়।


লোরেস্তান প্রদেশের ডেপুটি গভর্ণর হাবিবুল্লাহ্ খোজাস্তেহপোউর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় দোরুদে অবৈধ বিক্ষোভ চলছিল এবং বেশ কয়েকজন লোক বিরোধী পক্ষের আহ্বানে রাস্তায় নামে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।


তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই সংঘর্ষে দোরুদের দুই বাসিন্দা নিহত হয়েছে। বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে তিনি আরো বলেন, তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের গুলি করেনি।


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাশহাদ থেকে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা দাঙ্গা পুলিশের একটি গাড়ি উল্টে ফেলছে ও পুলিশের একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।


রেভ্যুলেশনারি গার্ডের কমান্ডার অভিযোগ করে বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা দ্রব্যমূল্যের বাইরে রাজনৈতিক ইস্যুতে স্লোগান দিচ্ছে এবং তারা সরকারি সম্পত্তিতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। ইরানের এক সংবাদ সংস্থাকে ব্রিগেডিয়ার ইসমাইল কাওসারি বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা যদি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদেই রাস্তায় নামত, তাহলে তারা সরকার বিরোধী স্লোগান দিত না।


ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হুশিয়ারি দিয়েছেন, আইন ভঙ্গকারী এবং সরকারি সম্পদ নষ্টকারীদের পরে জবাবদিহি করতে হবে এবং আজকের বিক্ষোভের জন্য কঠিন মূল্য দিতে হবে।



২০০৯ সালে সংস্কারের দাবীর ব্যাপক বিক্ষোভের পর এই প্রথম দেশটিতে এরকম বড় প্রতিবাদ হচ্ছে। ২০০৯ সালের ব্যাপক বিক্ষোভও ইরানের সরকার কঠোরভাবে দমন করেছিল।


এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিক্ষোভ নিয়ে বলেছেন, দেশটির জনগণ পরিবর্তন চায় এবং নিপীড়নমূলক সরকার চিরকাল টিকে থাকতে পারে না। সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেয়া ভাষণের দু’টি অংশ টুইটারে পোস্ট করেন ট্রাম্প। তার ভাষণের এ দু’টি অংশে ইরান সরকারকে লক্ষ্য করে বক্তব্য রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ওয়াশিংটনের প্রধান প্রতিপক্ষ হচ্ছে ইরান।


জাতিসংঘে দেয়া বক্তব্যের বরাত দিয়ে ট্রাম্প টুইটার বার্তায় বলেন, নিপীড়নমূলক সরকার চিরকাল টিকে থাকতে পারে না এবং এমন একদিন আসবে যখন ইরানের জনগণ তাদের সরকার নির্বাচন করবে। সারাবিশ্ব ইরানকে পর্যবেক্ষণ করছে।


এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ট্রাম্পের সুরে সুর মিলিয়ে বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, দুর্নীতি এবং তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অবসানে ইরানের এ সরকারের চলে যাওয়ার সময় এসে গেছে। সূত্র: এএফপি ও বিবিসি


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com