ভারতের কেরালায় তিরুঅনন্তপুরমে ধর্ষণচেষ্টাকালে এক ধর্মগুরুর লিঙ্গ কেটে দিয়েছেন ২৩ বছর বয়সী এক নারী। কিশোরী বয়স থেকেই ওই নারী তথাকথিত স্বামী বা ধর্মগুরুকর্তৃক যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছেন। শুক্রবার রাতে ওই ধর্মগুরু তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে এ ঘটনা ঘটায় ওই নারী।
হরি স্বামী কেরালার কোল্লামের পনমানা আশ্রমের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি এখন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
আইন বিষয়ে পড়ুয়া ওই তরুণী পুলিশকে জানিয়েছে, তার বাবা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত। তাকে সারিয়ে তুলতে স্বামী গঙ্গেশানন্দের শরণাপন্ন হন তার মা। রোগ সারিয়ে তোলার নামে ওই ‘বাবা’ প্রায়ই তাদের বাড়িতে আসতেন। বিগত প্রায় আট বছর ধরে তাকে বিভিন্ন সময় হরি স্বামী ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ তরুণীর। তার যখন ১৬ বছর বয়স, তখনই প্রথমবার এই স্বঘোষিত গুরুর ধর্ষণের শিকার হতে হয় তাকে।
ঘটনাটি নাকি জানতেন ওই তরুণীর মা। কিন্তু ধর্মবাবার হুমকির কারণে কোনোদিনো বাধা দেয়ার সাহস পাননি। বাবার অসুস্থতা, মায়ের ভয়, এইসব কিছু মিলিয়ে এতদিন মুখ বুজেই সব সহ্য করে গেছেন বলে জানিয়েছেন এই ছাত্রী। তবে আর পেরে ওঠেননি। শুক্রবার রাতে আবার বাড়িতে আসেন ওই গুরু এবং যথারীতি ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তখনই হাতের কাছে থাকা ধারালো ছুরি নিয়ে স্বামী গঙ্গেশানন্দের যৌনাঙ্গ কেটে ফেলেন ওই তরুণী। তারপর নিজেই ফোন করে ঘটনার কথা জানান পুলিশকে। পুলিশ এসে ‘স্বঘোষিত বাবা’কে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, যৌনাঙ্গের ৯০ শতাংশ ছিন্ন হয়ে গেছে। ফলে অস্ত্রোপচার করে সেটাকে ঠিক করার মতো অবস্থা ছিল না।
খবরে বলা হয়েছে, ঘটনাটি জানার পরও কেনো পুলিশকে জানায়নি, সে কারণে ওই তরুণীর মাকে জেরা করা হচ্ছে। তরুণীর অভিযোগ, অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে স্বামী গঙ্গেশানন্দ তার মাকেও একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন।
কেরালার মহিলা কমিশনের এক সদস্য প্রমীলা দেবী বলেন, ধর্মের নাম করে এমন ভণ্ডামি এবং কুকর্ম কোনোভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। ওই তরুণী যোগ্য জবাব দিয়েছেন বলেও মনে করেন তিনি।
কেরালার যে আশ্রম থেকে ওই বাবা এসেছিলেন, সেটি কোল্লামের একটি বিখ্যাত আশ্রম। অবশ্য আশ্রম কর্তৃপক্ষের দাবি, বিগত ১৫ বছর আগেই এই আশ্রম থেকে পড়াশোনা শেষ করে চলে গিয়েছিলেনি গঙ্গেশানন্দ। এদিকে কেরালার মূখ্যমন্ত্রী পিনারায়ি ভিজায়ান ওই নারীর এহেন কর্মকাণ্ডকে অত্যন্ত সাহসী বলে আখ্যা দিয়েছেন। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
বিবার্তা/সোহান
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]