শিরোনাম
জঙ্গি হামলার কৌশল বদলেছে
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০১৭, ১০:০২
জঙ্গি হামলার কৌশল বদলেছে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বদলে গেছে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার কৌশল। বদলে গেছে এর ধরন-ধারণ। হামলার জন্য খুব জটিল কিংবা বড় পরিকল্পনার দরকার পড়ছে না। দরকার পড়ছে না ব্যাপক গণবিধ্বংসী কোনও ভারী অস্ত্রেরও। যতো ছোটখাট জঙ্গিবাদী পদক্ষেপই নেয়া হোক না কেন, কোনও না কোনও মাত্রায় তা সফলতা পাচ্ছে।


দুই ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এবং ইন্ডিডেনডেন্ট-এর পৃথক দুই বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, জঙ্গিবাদী হামলা ঠেকাতে গেলে কেবল নিরাপত্তা প্রশ্নটি নিয়ে ভাবলে চলবে না। শুধুই নিরাপত্তা জোরদারের মধ্য দিয়ে জঙ্গিবাদ মোকাবেলার চেষ্টা করলে তা নিশ্চিতভাবেই ব্যর্থ হবে। নিরাপত্তা প্রশ্ন উপেক্ষা করে একের পর এক ঘটতে থাকবে অনিবার্য সব জঙ্গি হামলা।


চলতি বছরের শুরুতে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে কেবল সামরিক ও নিরাপত্তাগত পরিসর থেকে জঙ্গিবাদকে না দেখার আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। দমননীতির মধ্য দিয়ে জঙ্গিবাদ নির্মূলের চেষ্টা না করে দেশে দেশে এর মোকাবেলায় জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণেরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।


বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে ঘিরে লন্ডনে সংঘটিত হামলার অনেক কিছুই এখনও অস্পষ্ট। অজানা রয়ে গেছে অনেক কিছু। সুনির্দিষ্ট করে কি চেয়েছিলো হামলাকারীরা, জানা যায়নি সে কথাও। তবে একটা বিষয় তো নিশ্চিত। তা হলো, কৌশলের দিক বিবেচনায় নিলে সংঘটিত হামলাটি একেবারে সাম্প্রতিক নতুন ধারার সন্ত্রাস। ফ্রান্সের নিসে এবং বার্লিনে বড়দিনের মার্কেটের সাম্প্রতিক হামলার সঙ্গে এই হামলার সমিল রয়েছে।


আর ইন্ডিপেনডেন্ট-এর বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ওয়েস্টমিনিস্টারের এই হামলার জন্য যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো অনেকদিন ধরেই প্রস্তুত ছিল। সন্ত্রাসের কাজ শুধু হত্যাই নয় বরং আতঙ্ক ছড়ানো। যেই আতঙ্কে নড়ে যাবে কোনও দেশের নিরাপত্তার ভিত। আর এই হামলাকারী খুব বেশি প্রযুক্তির আশ্রয় নেননি। আগে মনে করা হতো, একটি সন্ত্রাসী হামলা চালাতে ভারী বিস্ফোরক লাগবে। লাগবে সুদীর্ঘ পরিকল্পনা।


ইন্ডিপেনডেন্ট বলছে, এসব সন্ত্রাসী হামলার তথ্য উদঘাটনে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থা বিশেষ করে এমআই-ফাইভ খুবই দারুণ দারুণ কাজ করে। ২০০৫ সালের আত্মঘাতী হামলার পর থেকে এ বিষয়ে খুবই তৎপর পুলিশ। প্রতিনিয়তই তারা এটা নিয়ে কাজ করছে ও প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। তবে এতা কাজ, এতো তৎপরতা, এতো উদ্যোগ জঙ্গিবাদ ঠেকাতে পারেনি। থেমে থাকেনি জঙ্গি হামলা। বরং তা বেড়েছে অতীতের চেয়ে।


বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, হামলাটি আত্মঘাতী কিংবা আধা-আত্মঘাতী। ছিল না অতিরিক্ত প্রযুক্তিনির্ভরতা, লাগেনি ভারী অস্ত্র। ফ্রান্সের নিসে এবং বার্লিনে বড়দিনের মার্কেটের হামলার কায়দায় গাড়ি ব্যবহৃত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণভাবে। ওই দুই হামলায় লরিচালক কোন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেনি। ২০১৩ সালে উলউইচ ব্যারাকে লি রিগবি নামের এক সেনাকে গাড়িচাপা দিয়ে মারা হয়। বিষয়টা এখন খুবই পরিষ্কার। একটি সন্ত্রাসী হামলা চালাতে একটি গাড়িই যথেষ্ট। আর এটা থামানোর জন্য খুব বেশি একটা কিছু করার নেই।


এখন হয়তো ওয়েস্টমিনিস্টার, হোয়াইট হলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে জারি হবে সুতীক্ষ্ণ প্রহরা। আবার যেন এমন কিছু না ঘটে তার জোর প্রস্তুতিও চলবে চারপাশ জুড়ে। পার্লামেন্ট প্রাঙ্গন ছাড়াও রয়েছে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের স্মারক বাকিংহ্যাম প্যালেস... এইসব এলাকার আশপাশজুড়ে হয়তো এমন সুরক্ষা থাকবে যে কেউ গাড়ি চালিয়ে হত্যা করতে পারবে না।


প্রাসাদের গেটগুলোও আরও বেশি অবরুদ্ধ হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আসবে নিশ্চিত পরিবর্তন। কিন্তু যেখানে সাধারণেরা থাকেন, ওয়েস্টমিনিস্টার আর লন্ডনের সেইসব রাস্তাগুলো অরক্ষিতই থাকবে। সবখানে একই সুরক্ষা তো সম্ভব নয়। হোয়াইটহলের ওয়েস্টমিনিস্টারের প্রাসাদের কোন দর্শনার্থীরা এখন অনেক নিরাপত্তা প্রটোকলের মুখোমুখি হবে। এমন হামলা যেন আর না হয়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।


বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com