শিরোনাম
প্রেসিডেন্ট হয়েই ট্রাম্পের ৮ রেকর্ড
প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০১৭, ১২:০৫
প্রেসিডেন্ট হয়েই ট্রাম্পের ৮ রেকর্ড
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অভিষেক ভাষণেই ইতিহাস গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। হোয়াইট হাউসে ঢুকেই একাধিক রেকর্ডের মালিক বনে গেছেন মার্কিন এ ধনকুবের। জেনে নিন সেগুলো-

 

১. যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বিলিয়নিয়ার প্রেসিডেন্ট

রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বিলিয়নিয়ার বা শত-কোটিপতি প্রেসিডেন্ট। ফোর্বসের হিসাবে, তার ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ৩৭০ কোটি ডলারের বেশি। বিলিয়নিয়ার বলেই ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের গভর্নর আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারকে অনুসরণ করে মাত্র এক ডলার মাসিক বেতন নেবেন ট্রাম্প।

 

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে অনেক ধনী প্রেসিডেন্টই এসেছেন। ডলারের হিসাবে প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের সম্পদের পরিমাণ ছিল প্রায়৫০ কোটি ডলার।

 

২. ধনী মন্ত্রীসভা  

ট্রাম্প নিজেই শুধু ধনী নন; আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তার মন্ত্রীসভাই হতে যাচ্ছে সবচেয়ে সম্পদশালী। এক হিসাবে জানা যায়, ট্রাম্পের মন্ত্রীসভায় যারা থাকবেন তাদের সকলের মোট সম্পদের পরিমাণ সাড়ে তিন হাজার কোটি ডলারের বেশি হবে।

 

ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত উইলবার রসের নিজেরই ২৫০ কোটি ডলারের সম্পদ রয়েছে; যা ২০০১ সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশের পুরো মন্ত্রীসভার সদস্যদের মোট সম্পদের চেয়েও ১০ গুণ বেশি। অথচ সেসময় বুশের মন্ত্রীসভায় কোটিপতিদের সমাবেশ ছিল বলে বর্ণনা করা হয়েছিল গণমাধ্যমে।

 

৩. সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট

গত জুনে ৭০তম জন্মদিন উদযাপন করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এর মানে, তিনিই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়া সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট। এর আগের রেকর্ডটি ছিল রোনাল্ড রিগ্যানের। ১৯৮১ সালে তিনি ৬৯ বছর বয়সে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছিলেন।

 

দেশটিতে এর আগে দায়িত্ব পালন করা ৪৪ জন প্রেসিডেন্টর বয়সের গড় ছিল ৫৫। সবচেয়ে কম বয়স্ক প্রেসিডেন্ট ছিলেন থিওডোর রুজভেল্ট। তিনি যখন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন, তখন তার বয়স ছিল প্রায় ৪৩ বছর।  

 

বয়স নিয়ে কথা উঠতে পারে ভেবেই হয়তো ডাক্তারকে দিয়ে একটি চিঠি লিখিয়ে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। যেখানে ড. হ্যারল্ড বর্নস্টেইন বর্ণনা করেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে এ যাবৎ জয়লাভ করা সবচেয়ে স্বাস্থ্যবান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।’

 

৪. রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার অভাব

যুক্তরাষ্ট্রে গত ৬০ বছরের ইতিহাসে এমন একজন প্রেসিডেন্টও নির্বাচিত হননি যাদের অন্তত রাজ্য গভর্নর কিংবা কংগ্রেস সদস্য হিসেবে অভিজ্ঞতা নেই। সেই হিসেবে ট্রাম্পের এবারের বিজয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর আগে তার এ ধরনের কোনো অভিজ্ঞতা নেই।

 

কিন্তু ট্রাম্প বলেন, ওয়াশিংটনের প্রতিষ্ঠান সমূহের সাথে তার পূর্বের যোগাযোগ না থাকাটাকে তিনি একটি সম্পদ মনে করেন, ত্রুটি নয়।

 

এর আগে সর্বশেষ অভিজ্ঞতাহীন প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডোয়াইট আইসেন আওয়ার। ১৯৫৩ সালে নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অ্যালাইড ফোর্সের সুপ্রিম কমান্ডার ছিলেন। ১৯২৯ থেকে ১৯৩৩ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করা হার্বার্ট হুভার ছিলেন একজন প্রকৌশলী এবং মানবতাবাদী।

 

৫. মুক্ত বাণিজ্যের বিরোধীতা

ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, মুক্ত বাণিজ্যের কারণেই মার্কিনিদের আজ কাজ নেই। কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য এটি একটি বিরল অবস্থান। তবে অনেকের ধারণা, ট্রাম্পের এই স্লোগান ভোটারদের মধ্যে অনেকটা জাদুর মতো কাজ করেছে।

 

এর আগে ১৯৩০’র দশকে রিপাবলিকান হার্বার্ট হুবার এমন অবস্থান নিয়েছিলেন।

 

গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প ইকনমিস্টকে বলেন, চীন আমাদের মেরে ফেলছে। তিনি আরো বলেন, চীনাদের খেলা বন্ধ করার জন্য তিনি ১২ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক আরোপ করতে প্রস্তুত আছেন।

 

৬. ক্ষমতাধর সন্তান

জামাই জ্যারেড কুশনারকে ট্রাম্প তার সিনিয়র উপদেষ্টা ঘোষণা করার পর বিরোধী শিবিরে স্বজনপ্রীতির দাবি উঠেছে।

 

অনেকে বলেন, এই মনোনয়নের মাধ্যমে ৩৬ বছর বয়সী কুশনার মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে ক্ষমতাধর জামাইয়ে পরিণত হয়েছেন। এদিকে ট্রাম্পের বড় মেয়ে ও কুশনারের স্ত্রী ইভাঙ্কাকেও বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী ‘ফার্স্ট ডটার’ হিসেবে।

 

তবে কুশনারই প্রথম নন, প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসনের মেয়ে ইলিয়ানরকে বিয়ে করেছিলেন তারই ট্রেজারি মন্ত্রী উইলিয়াম গিবস ম্যাকাডু। কিন্তু এই ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৬৭ সালে যখন যুক্তরাষ্ট্র স্বজনপ্রীতি-বিরোধী নীতি গ্রহণ করেনি। তাছাড়া, ম্যাকাডু প্রেসিডেন্টের মেয়েকে বিয়ে করার আগে থেকেই তার মন্ত্রী ছিলেন।

 

৭. পোষা প্রাণী নেই

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এত প্রাচুর্যের মধ্যেও একটি জিনিসের অভাব সকলের নজর কেড়েছে,, তার কোনো পোষা প্রাণী নেই। ফলে গত এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের ইতিহাসে ট্রাম্পই হতে যাচ্ছেন প্রথম প্রেসিডেন্ট, হোয়াইট হাউসে যার কোনো পোষা প্রাণী থাকবে না।

 

প্রেসিডেনসিয়ল পেট মিউজিয়াম জানান, প্রায় প্রত্যেক প্রেসিডেন্টেরই পোষা প্রাণী ছিল। জন এফ কেনেডির পোষা প্রাণীর সংগ্রহকে চিড়িয়াখানার সাথে তুলনা করা হত।

 

৮. শুধু ট্রাম্পই নন, একাধিক রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন ফার্স্ট লেডি

স্বামীর মতো অনেক কিছুতেই প্রথম হতে যাচ্ছেন সাবেক মডেল মেলানিয়া ট্রাম্পও। স্লোভেনিয়া থেকে আসা প্রথম ফার্স্ট লেডি হতে যাচ্ছেন তিনি।  

 

তার আগে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম না নেয়া একজন নারীই ‘ফ্লোটাস’ (ফার্স্ট লেডি অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটস) হতে পেরেছেন, তিনি ষষ্ঠ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন কুইন্সি অ্যাডামসের স্ত্রী লুইসা অ্যাডামস। লন্ডনে জন্ম নেয়া অ্যাডামস ফ্লোটাস ছিলেন ১৮২৫ থেকে ১৮২৯ সাল পর্যন্ত।   

 

প্রেসিডেন্টের তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে প্রথম হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা হতে যাচ্ছেন মেলানিয়া ট্রাম্প। এর আগে একজন প্রেসিডেন্টেরই প্রথম স্ত্রীর সাথে ডিভোর্স হয়েছিল, তিনি রোনাল্ড রিগ্যান। তিনি অবশ্য অভিনেত্রী স্ত্রী জেন ওয়াইম্যানের থেকে আলাদা হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার বহু আগে।

 

মেলানিয়াই প্রথম কোনো প্রেসিডেন্টের স্ত্রী যার উলঙ্গ ছবি ছাপা হয়েছে পত্রিকায়। ট্রাম্প অবশ্য নিজেও একবার প্লেবয় ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ হয়েছিলেন, সেটা ১৯৯০ সালের কথা।

 

স্লোভেনিয়ান, ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান ও সার্বিয়ান ভাষায় কথা বলতে পারেন মেলানিয়া ট্রাম্প। সম্ভবত বহু ভাষায় দক্ষ প্রথম ফ্লোটাস তিনি।

 

বিবার্তা/নিশি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com