শিরোনাম
কৃষ্ণাঙ্গ গণহত্যায় প্রথম মৃত্যুদণ্ড
প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০১৭, ০০:৪০
কৃষ্ণাঙ্গ গণহত্যায় প্রথম মৃত্যুদণ্ড
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

কৃষ্ণাঙ্গ গণহত্যার ঘটনায় এক শেতাঙ্গ যুবককে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে আমেরিকায়। কৃষ্ণাঙ্গ গণহত্যার ঘটনায় এই প্রথম কোনো শেতাঙ্গকে মৃত্যুদণ্ড দিল দেশটির আদালত। সূত্র: গার্ডিয়ান


১৯ মাস পরও কথার কোনো পরিবর্তন নেই! চার্চে ঢুকে সাধারণ মানুষগুলোকে হত্যা করতে হাত কাঁপেনি, তেমনি নিজের মৃত্যুদণ্ডের খবরেও একই অবস্থা৷ এতদিন ডিলান এস রুফ ’কে নিয়ে তোলপাড় হয়েছে গোটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে৷ বর্ণ বিদ্বেষের নৃশংস, কদর্য চেহারাটা বিশ্ববাসীকে দেখিয়েছে রুফ৷ শুধুমাত্র কালো হওয়ার অপরাধে রুফের বুলেটে এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিল ৯টি প্রাণ৷


১৯ মাস আগে ২০১৫ সালের ১৭ জুন বুধবার। ঘটনাস্থল চার্লস্টনের এমানুয়েল আফ্রিকান মেথডিস্ট এপিস্কোপাল চার্চ। বিকেলের প্রার্থনায় অংশ নিতে অনেকেই চার্চে এসেছেন। কৃষ্ণাঙ্গদের ভিড়ে চোখ পড়ছিল এক শ্বেতাঙ্গ।যার বয়স ছিল ২০ বছর।


রেভারেন্ড ক্লিমেন্টা পিঙ্কনে বাইবেল পাঠ শুরু করলেন। ছেলেটি ভিড় থেকে একটু দূরে বসেছিল। মাথা নিচু করে। মিনিট চল্লিশ পর ক্লিমেন্টা থামলে উঠে দাঁড়াল ছেলেটি। হাতের প্যাকেট থেকে বের করে আনল পয়েন্ট ফর্টি ফাইভ সেমি -অটোমেটিক হ্যান্ডগান। তারপর কর্কশ স্বরে বলে উঠ, ‘তোমরা কালোরা সুযোগ পেলেই সাদাদের হত্যা কর। আজ তোমাদের পালা।


প্রথম গুলিটা ক্লিমেন্টাকে লক্ষ করেই।তারপর চার্চে শুধুই গুলির আওয়াজ, আর্তনাদ আর প্রাণভয়ে ছুটোছুটি। ৫ বার ম্যাগাজিন বদলিয়ে ৭০ টি গুলি চালিয়ে ফেলেছে রুফ। ৮৭ বছরের সুসি জ্যাকসন থেকে ২৬ বছরের রয় রিচার্ডসন --- সকলের শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। কারও কারও শরীরে গুলি বিঁধেছে পাঁচটি। কারও বা আরও বেশি৷ পালাতে গিয়ে অনেকেই তখন রক্তে পিছলে পড়েছেন৷


নিথর শরীরগুলোর দিকে একদৃষ্টে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে রুফ। তারপর ঘাড় ঘোরায় চার্চের কোণার একটি টেবিলের পিছনে গুটিসুটি মেরে লুকিয়ে থাকা বাকিদের দিকে।


শান্ত কণ্ঠে রুফের ঘোষণা, ‘ভয় পেয়ো না। তোমাদের মারব না। সবাইকে মারলে বাকিরা জানবে কী করে চার্চে কী হয়েছিল? এই বলে হাতের বন্দুকটি দোলাতে দোলাতে চার্চ থেকে বেরিয়ে যায় রুফ। পরদিন সকালেই তাকে আটক করে পুলিশ৷


জেরায় রুফ জানায় চার্চ থেকে বাহির হওয়ার সময়ই পুলিশ তাকে ধরবে বলে ভেবেছিল সে। সেইমতো নিজের জন্য একটি গুলি বাঁচিয়েও রাখে। কিন্তু ঘটনা হল ৯১১ ডায়াল করে পুলিশ ডাকতে ডাকতেই সে বাড়ি পৌঁছে যায়। রাস্তার সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে বন্দুক হাতে চার্চ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে রুফ।


রুফের ডোন্ট কেয়ার হাবভাব দেখে ঘাবড়ে যান পুলিশ কর্তারাও।যা করেছি বেশ করেছি । আটকের পরও একই কথা বলে সে। এমনকি মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার দিনও সেই কথা তার মুখে। তার চোখে-মুখে অনুতাপের লেশমাত্র চোখে পড়েনি কারও।


হতভাগ্য তিয়ানজা স্যান্ডার্সের ভাই ড্যানিয়েল হাজির ছিলেন কোর্টে।‘ভাতৃ ঘাতকের মৃত্যদণ্ডের খবরে কতটা খুশি ড্যানিয়েল?’ ড্যানিয়েলের উত্তর ‘রুফের চোখেমুখে ভয় দেখতে পেলে খুশি হতাম৷ কিন্তু তার কোনো অনুতাপ নেই।


বিবার্তা/আকবর

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com