রয়টার্সের প্রতিবেদন
আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন হতে দেব না: জয়
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪৭
আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন হতে দেব না: জয়
প্রিন্ট অ-অ+

আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা না উঠলে নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষনা দিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। তার ভাষায়, ‘আমরা নির্বাচন হতে দেব না আওয়ামী লীগ ছাড়া। আমাদের প্রতিবাদ আরও জোরালো হবে, আমরা যা দরকার তা করব।


রবিবার (১৬ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে এ কথা জানান জয়।


সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় নিয়ে জয় বলেন, ‘আমরা জানি রায় কী হবে। তারা তাকে দোষী সাব্যস্ত করবে, আর সম্ভবত মৃত্যুদণ্ড দেবে।’ তিনি দাবি করেন, তার মা ‘ভারতে সম্পূর্ণ নিরাপদ’, যেখানে তাকে ‘রাষ্ট্রপ্রধানের মতো’ নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।


আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলে দলীয় নেতাকর্মীরা ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন ঠেকিয়ে দেবে। তিনি দাবি করেন, তার মায়ের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার রায় রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত।


অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখপাত্র জয়ের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ট্রাইব্যুনাল ‘সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে’ বিচারকাজ পরিচালনা করছে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। মুখপাত্র বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। দলটি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে এবং জবাবদিহির প্রক্রিয়া মানতে চাইছে না।’


মুখপাত্র বলেন, সরকারের প্রথম লক্ষ্য ‘উত্তেজনা প্রশমন এবং মানুষের জীবন-সম্পদ রক্ষা।’


৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে নয়াদিল্লিতে নির্বাসনে যান। গত বছরের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন তিনি।


জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১৪০০ জনের মতো মানুষ নিহত হয় এবং হাজারো আহত হয়—যা ১৯৭১ সালের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে ভয়াবহ রাজনৈতিক সহিংসতা।


বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বড় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ; দীর্ঘ বিক্ষোভে এ শিল্পও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।


হাসিনার রায় ঘিরে গত কয়েক দিনে ঢাকায় সহিংসতা বেড়েছে। রোববারই একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর আগে ১২ নভেম্বর শহরে ৩২টি বিস্ফোরণ ও একাধিক বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব নাশকতার অভিযোগে আওয়ামী লীগের কর্মীদেরও আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪০০-র বেশি বিজিবি সদস্য মোতায়েন, চেকপোস্ট জোরদার এবং জনসমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।


জয় বলেন, তিনি ও তার মা দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তিনি দাবি করেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে সারা দেশে হরতাল, বিশাল বিক্ষোভ—এসব আরও বাড়বে।’


দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা উন্নয়নের জন্য প্রশংসিত হলেও মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিরোধী মত দমন এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানের অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল অংশ নেয়নি, কারণ বহু নেতা জেলে ছিলেন বা বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন। এবার পরিস্থিতি উল্টো হয়েছে। জয় বলেন, ‘তিনি ক্ষুব্ধ, রাগান্বিত, হতাশ। আর আমরা সবাই যা প্রয়োজন তা করে লড়াই চালিয়ে যাব।’


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com