চাবি হারানোর পরদিন হত্যাকাণ্ড, বারবার জায়গা পাল্টাচ্ছে সন্দেহভাজন
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১:৫৪
চাবি হারানোর পরদিন হত্যাকাণ্ড, বারবার জায়গা পাল্টাচ্ছে সন্দেহভাজন
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন গৃহকর্মীর বিষয়ে কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিশ। বিশ্লেষণ করা হয়েছে শতাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। প্রযুক্তিগত তদন্ত ছাড়াও প্রচলিত অন্যান্য উপায়ে তাকে শনাক্ত করার কাজ চলছে। এসবের সূত্র ধরে গত সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ঢাকার কয়েকটি অবস্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই সেই অবস্থান থেকে পালিয়ে গেছেন গৃহকর্মী।


এদিকে নিহত লায়লা আফরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেছেন। স্ত্রী-কন্যাকে হত্যার জন্য তরুণী গৃহকর্মীকেই সন্দেহ করেছেন তিনি। ওই গৃহকর্মী জানিয়েছিলেন, তার নাম আয়েশা। তিনি মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে থাকেন।


ঢাকা মহানগর পুলিশের মোহাম্মদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুয়েল রানা সমকালকে বলেন, সন্দেহে থাকা গৃহকর্মীকে মোটামুটিভাবে শনাক্ত করা গেছে। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।


তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আয়েশা গ্রেপ্তার এড়াতে বারবার অবস্থান পাল্টাচ্ছেন। বাসা থেকে নিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন।


তদন্তে যুক্ত পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বাসা থেকে মূল্যবান সামগ্রী চুরির উদ্দেশ্যেই তিনি গৃহকর্মী সেজে ঢুকেছিলেন।


মামলার এজাহারে আজিজুল ইসলাম লিখেছেন, ‘আমি মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের বাসায় পরিবার নিয়ে থাকি। চার দিন আগে আসামি আমার বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সোমবার আনুমানিক সকাল ৭টার দিকে আমি আমার কর্মস্থল উত্তরায় চলে যাই। সেখানে থাকা অবস্থায় আমার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হই। বেলা ১১টায় বাসায় এসে দেখি, আমার স্ত্রী গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। আমার মেয়ের গলার ডান দিকে কাটা, গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মেইন গেটের দিকে পড়ে আছে। মেয়েকে উদ্ধার করে পরিছন্নকর্মী আশিকের মাধ্যমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।’


এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, মেয়ের একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী (সঠিক পরিমাণ বলতে পারেননি) খোয়া গেছে।


নাটোর সংবাদদাতা জানান, লায়লা আফরোজ তার ছোট ভাই ফরহাদ হোসেনকে বাসার চাবি হারানোর কথা জানিয়েছিলেন। এর পরদিনই হত্যাকাণ্ড ঘটে।


ফরহাদ বলেন, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভিডিওকল করে আপা জানান, তার বাসার চাবি পাওয়া যাচ্ছে না। চাবি হারানোয় তাকে বেশ উদ্বিগ্ন মনে হচ্ছিল। নতুন গৃহকর্মী কাজ শুরুর পর চাবি হারানো স্বাভাবিকভাবে নেননি তিনি।


মঙ্গলবার বাদ জোহর গ্রামের বাড়ি নাটোরের নবাব সিরাজ উদ দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে মা-মেয়ের জানাজা হয়। পরে শহরের গাড়ীখানা কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়েছে।


বিবার্তা/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com