
শেখ হাসিনার টানা ক্ষমতায় টিএফআই সেলে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সেনাবাহিনীর ১০ কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ২৩ মিনিটে ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে বাংলাদেশ জেল-প্রিজন ভ্যান লেখা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সবুজ রঙের গাড়িতে করে তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
১০ সেনা কর্মকর্তা হলেন- র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
আজ এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি হবে। বেলা ১১টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ শুনানি করবে প্রসিকিউশন। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা করবেন। তবে পলাতকদের পক্ষে করবেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীরা।
এদিকে, সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা উপলক্ষ্যে বরাবরের মতো হাইকোর্টের মূল ফটকে কঠোর নিরাপত্তায় রয়েছে পুলিশ-সেনাবাহিনী। ট্রাইব্যুনাল ফটকের দুই পাশেও বিজিবি-র্যাব ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তৎপর দেখা গেছে এপিবিএনসহ সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদেরও।
এর আগে, গত ২৩ নভেম্বর এ মামলার অভিযোগ গঠন নিয়ে শুনানির জন্য ৩ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়। ওই দিন ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগারে থাকা ১০ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। তাদের উপস্থিতিতে এ তারিখ নির্ধারণ করা হয়। যদিও ভার্চুয়ালি হাজিরার আবেদন করেছিলেন তাদের আইনজীবীরা। তবে এ নিয়ে আজ শুনানির কথা রয়েছে।
ওই দিন ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, বিভিন্ন মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি জেলে রয়েছেন। তিনি সশরীরে হাজির হচ্ছেন। সাবেক কয়েকজন মন্ত্রী নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন। আইন সবার জন্য সমান।
গুমের এ মামলায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনার পক্ষে দাঁড়ানোর আবেদন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্না। পরে তাকে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। তবে এরই মধ্যে মৌখিকভাবে এ মামলায় না লড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন এই আইনজীবী।
গত ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১০ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। একইসঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজিরের জন্য সাতদিনের মধ্যে দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে নির্ধারিত তারিখে হাজির না হওয়ায় তাদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেন আদালত। ৮ অক্টোবর এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরে অভিযোগ আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]