শিরোনাম
নানা সমস্যায় জর্জরিত বাকৃবি হেলথ কেয়ার সেন্টার
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৯:৪৯
নানা সমস্যায় জর্জরিত বাকৃবি হেলথ কেয়ার সেন্টার
শাহীন সরদার,বাকৃবি
প্রিন্ট অ-অ+

নানা সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) হেলথ কেয়ার সেন্টার। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে হেলথ কেয়ার সেন্টার হিসেবে যতটুকু সেবা দেয়া দরকার তা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।


বহির্বিভাগীয় চিকিৎসা কেন্দ্রটি থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ জন বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ নিয়ে থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষক- শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র ১০ জন চিকিৎসক। অ্যাম্বুলেন্সের সংকটের পাশাপাশি নেই কোনো ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন এবং পর্যাপ্ত জনবল। পর্যাপ্ত বেতন কাঠামোর জন্য ডেন্টিস্ট ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ৪৫ শতাংশ ছাত্রীদের ক্যাম্পাটিতে নেই কোন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ।


অনুসন্ধানে জানা গেছে, সম্পূর্ণ আবাসিক এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য রয়েছে বিশাল অবকাঠামোর স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষার্থী এবং সাড়ে তিন হাজার শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য এখানে রয়েছে মাত্র ১০ জন চিকিৎসক। ডেন্টাল ইউনিট ও চোখ পরীক্ষার জন্য বহু বছর ধরে সাময়িক ডাক্তার নিয়োগের প্রক্রিয়া চললেও বেতন কাঠামো কম হওয়ায় ডাক্তারশূন্য রয়েছে ইউনিট দুটি। কৃষি শিক্ষার দেশসেরা এই বিদ্যাপীঠে প্রায় ৪৫ শতাংশ ছাত্রী। ছাত্রীদের রোগের জন্য নেই কোন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী জানান, মেয়ে হয়ে আমরা কিভাবে একজন ছেলে চিকিৎসকের কাছে নিজেদের ব্যক্তিগত সমস্যা বলব। তাছাড়া হেলথ কেয়ারের চিকিৎসকদের আচরণ তেমন ভাল না। তাই আমরা খুব সমস্যায় না পড়লে তাদের কাছে যাই না। পর্যাপ্ত ঔষধের অভাবে শিক্ষার্থীরা মানসম্মত সেবা পাচ্ছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে।


শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হেল্‌থ কেয়ার সেন্টারটিতে একদিকে যেমন চিকিত্সক সংকট রয়েছে, অন্যদিকে রয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধের ঘাটতি। তাছাড়া এখানকার চিকিৎসকরা রোগীদের কোনো গুরুত্বই দেন না।


তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, মাথা ব্যথা, পেট ব্যথা ও আমাশয় ছাড়া অন্য কোনো সমস্য নিয়ে গেলে রোগীর সমস্যাতো শুনবেনই না। উল্টো আরো তাদের মেজাজ সহ্য করতে হবে। কখনও কখনও দায় এড়াতে ও চিকিত্সা সেবা দিতে অপারগতার অজুহাত আর অহেতুক কারণ দেখিয়ে রোগীকে শহরের হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।


এছাড়া স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রটি শুধুমাত্র ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য তৈরি হলেও সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজনও ২৪ ঘন্টা সেবা নিয়ে থাকে।


জানা গেছে, ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় বাকৃবি হেলথ কেয়ার সেন্টার। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারকে বিনা খরচে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী এলাকাবাসীও মানবিক দিক বিবেচনায় এখানে চিকিত্সা সেবা পেয়ে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে ভুল চিকিত্সা, রোগী না দেখেই ওষুধ দেয়া, সব সময় চিকিত্সকদের সাক্ষাৎ না পাওয়া, সাধারণ রোগেও অ্যান্টিবায়োটিক প্রদানসহ নানা অভিযোগ এখানকার সাধারণ শিক্ষার্থীদের। চিকিত্সা সেবায় অনেকেই আর আস্থা রাখতে পারছেন না সেবা কেন্দ্রটির উপর।


এ বিষয়ে চীফ মেডিকেল অফিসার ডা. ফয়েজ আহমেদ বলেন, হেলথ কেয়ারের বাৎসরিক বাজেট খুব কম হওয়ায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসাসেবার মান বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। পার্ট টাইম ডেন্টাল ও চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান। বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে, পার্ট টাইম স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রাখা যায়।


বিবার্তা/শাহীন/নাজিম

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com