শিরোনাম
সুস্থ থাকার সহজ উপায়
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০১৬, ১৭:৫৪
সুস্থ থাকার সহজ উপায়
ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ
প্রিন্ট অ-অ+

সকালে ঘুম থেকে উঠে দিনটি কীভাবে শুরু করবেন, দিনের কাজগুলো কীভাবে সাজাবেন, দিনটি কত সুন্দর ও সফলভাবে অতিবাহিত করবেন, তা নির্ভর করবে আপনার সুচিন্তিত পরিকল্পনার ওপর।


মানুষ অধিকাংশ ক্ষেত্রে অর্থবিত্ত, মান-সম্মান, যশ-প্রতিপত্তির প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে বলে নিজের অজান্তেই শরীর ও মনের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এটা অনেক সময় মানুষকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ করে তোলে। তখন দরকার হয় ওষুধের। কখনও বা সেই ওষুধের প্রয়োজন হয় সারা জীবনের জন্য।


আমি মনে করি, সারা জীবন সুস্থ থাকার জন্য প্রত্যেক মানুষের দরকার মনস্তাত্ত্বিক ও আধ্যাত্মিক শক্তিতে বলীয়ান হওয়া। কেউ যদি নিয়মিত ব্যায়াম করে, সুষম ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খায়, ধূমপান বর্জন করে, প্রয়োজনীয় ঘুমসহ পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেয় এবং বদঅভ্যাস ত্যাগ করে, তাহলে তার হৃদরোগের ঝুঁকি ৮০ শতাংশ, ডায়াবেটিস ৯০ শতাংশ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ কমে যায়।


অস্বাভাবিক জীবনযাপন ও নিয়ম না মানার কারণে আমরা নানা রোগে আক্রান্ত হই। অসুস্থ হলে চিকিৎসকের কাছে দৌড়াতে হয়, হরেক রকম ওষুধে অভ্যস্ত হয়ে পড়তে হয়।


অসুস্থ হলে জীবন স্বাভাবিক নিয়মে চলে না। সর্বক্ষেত্রে বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়, জীবনের সুখ-শান্তি নষ্ট হয়, টাকা-পয়সার অপচয় হয়। জীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ।


একটু সুস্থ চিন্তা, একটু স্বাস্থ্যসচেতনতা আর একটু মানসিক দৃঢ়তা যদি আমাদের একটি সুস্থ, সুন্দর ও সুখী জীবনযাপনের নিশ্চয়তা দিতে পারে, তাহলে আমরা তা করব না কেন? আমার অভিজ্ঞতার আলোকে এ লেখায় কিছু পরামর্শ উপস্থাপন করব। আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি, পরামর্শগুলো মেনে চললে অবশ্যই সুফল পাবেন।


সুস্থ জীবনের জন্য ব্যায়াম চাই। অলস জীবন মানেই অসংখ্য রোগের আশংকা। প্রতিদিন তিন কিলোমিটার হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। প্রথমদিকে অল্প দূরত্ব টার্গেট করে হাঁটা শুরু করা দরকার। আস্তে আস্তে দূরত্ব ও হাঁটার গতি এমন পর্যায়ে বাড়ানো উচিত, যাতে হৃৎস্পন্দন বাড়ে। হাঁটার জন্য নরম ও হালকা জুতা ব্যবহার করলে গতি ও আরাম পাওয়া যায়।
বাইরে খোলামেলা জায়গায় দূষণমুক্ত বাতাস ও সূর্যের আলোয় হাঁটার উপকারিতা অনেক। এতে শারীরিক-মানসিক ক্লান্তি, অবসাদ ও দুশ্চিন্তা দূর হবে।


ব্যায়াম করলে রাতের ঘুম ভালো হয়। হাঁটা ছাড়াও সাইকেল চালনা, সাঁতার কাটা অথবা জিমনেশিয়ামে ব্যায়াম করা যেতে পারে। কোন ব্যায়াম কার জন্য কতটুকু উপযোগী, তা চিকিৎসক পরামর্শ দিতে পারেন।


প্রতিদিন ৩০ মিনিট দ্রুতবেগে হাঁটলে আপনার শরীরের ওজন ঠিক থাকবে, রক্তচাপ, সুগার লেভেল কমে আসবে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ার কারণে অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সতেজ থাকবে, মেটাবলিক প্রক্রিয়া ভালো কাজ করবে।


প্রতিদিন হাঁটতে না পারলে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন হাঁটা চাই। আলস্য, কর্মব্যস্ততা বা অন্য কোনো অজুহাতে আপনি যদি হাঁটার অভ্যাস ত্যাগ করেন, বা অনিয়মিত হয়ে পড়েন, তবে আপনি আপনার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারবেন না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৩০ মিনিট হাঁটার জন্য বরাদ্দ রাখা - এটা খুব বেশি সময় নয়।


সুস্থ শরীরের জন্য খাবারের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেসব খাবার পরিবেশিত হয়, তা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বিশেষ করে ৪০ থেকে ৪৫ বয়সোর্ধ্ব মানুষের জন্য। উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও ক্যান্সারজাতীয় প্রাণঘাতী রোগ থেকে বাঁচতে হলে সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠানে ডালডা, চর্বি বা তেলসমৃদ্ধ পোলাও, রোস্ট, বিরিয়ানি, খাসি ও গরুর গোশত খাওয়া কমাতে হবে।


জাংক ফুড স্বাস্থ্যকর খাবার নয়। এসব খাবারে পুষ্টি কম, চর্বি বেশি। এছাড়া এসব খাবারে রয়েছে প্রচুর লবণ, চিনি, মেয়নেজ, সোডিয়াম গ্লুটামেট ও টাট্রাজিনজাতীয় বিতর্কিত খাদ্য উপকরণ। অন্যান্য দরকারি খাবারের মতো জাংক ফুডে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও আঁশ কম থাকে। ম্যাকডোনাল্ড, বার্গার কিং, কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেন, পিৎজা, হ্যামবার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই জাংক ফুডের কিছু উদাহরণ। জাংক ফুডে প্রচুর চিনি ও চর্বি থাকে বলে এমন খাবার খেলে ওজন বেড়ে যাওয়া, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস ও ক্যান্সারের মতো বহু জটিল রোগ দেখা দিতে পারে।


স্বাস্থ্যকর খাবার সুস্থ জীবনের জন্য অপরিহার্য। খাবার হতে হবে কম ক্যালরিযুক্ত এবং বেশি পুষ্টিসমৃদ্ধ। জৈব খাবার শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। জৈব খাবার বলতে বোঝায়, যা কীটনাশক ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ছাড়া উৎপাদন করা হয়। খাবারে কম করে হলেও অর্ধেক হতে হবে জৈব শাকসবজি ও ফলমূল। বাকি খাদ্যের মধ্যে থাকতে হবে ভুসিসমৃদ্ধ শস্য, বাদাম, বিভিন্ন ধরনের বিচি। সবচেয়ে ভালো তেল হল তিসি বিচির তেল ও অলিভ অয়েল। সয়াবিন তেলই আমরা বেশি খাই অন্যান্য তেলের দাম বেশি বলে। কিন্তু সয়াবিন তেলে ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড বেশি থাকে বলে এসব তেল থেকে উৎপন্ন সাইটোকাইন হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এ প্রদাহ হৃদরোগের অন্যতম এক কারণ।


পরিশোধিত বা পরিমার্জিত শর্করা, চিনি, সাদা রুটি, ময়দা, পেস্তা, কেক, কুকিজ, পিৎজা ও পেস্ট্রি বর্জন করে অংকুরিত ও সম্পূর্ণ পেস্তা বা আটা খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা একান্ত বাঞ্ছনীয়।


খাসি ও গরুর গোশত কম খেতে হবে। মাত্রাতিরিক্ত রেড মিট ক্যান্সার সৃষ্টি করে বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে। প্রোটিন হিসেবে মাছ ও মুরগির গোশত উৎকৃষ্ট। গোশতের চেয়ে মাছ আরও ভালো। ট্রান্সফ্যাট হৃদরোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ।


পোড়া ও ডোবা তেলে ভাজা খাবার থেকে সাবধান। পোড়া তেলে ট্রান্সফ্যাট থাকে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। কাঁচা লবণ খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে। বাটার, পনির, ডিম, দুধ ও দই স্বাস্থ্যকর খাবার। ভিটামিন-সি, বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন-ই, সেলেনিয়াম ও পলিফেনোল শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সব অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎকৃষ্ট উৎস ফলমূল, শাকসবজি ও সবুজ চা।


কোমল পানীয়তে চিনি, ফসফোরিক এসিড ও ক্যাফেইনের উপস্থিতি বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষকে বহু রোগ ও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ফসফোরিক এসিডের উপস্থিতির কারণে পেপসি, কোকাকোলাজাতীয় পানীয় প্রচণ্ড এসিডিক হয়। শিশুদের জন্য এসব পানীয় ভীষণ ক্ষতিকর, যদিও বাচ্চারা তা খুবই পছন্দ করে।


কোমল পানীয় ও আইসক্রিমজাতীয় চিনিসমৃদ্ধ খাবার খেয়ে মানুষ অস্বাভাবিক মোটা হয়ে যাচ্ছে। স্থূলতা এখন বিশ্বের এক অন্যতম প্রাণঘাতী রোগ। অজ্ঞতা, অসচেতনতা, অবহেলা ও ছোটখাটো ভুলের জন্য আমরা অনেক সময় বড় ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ি।


খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে খুব ভালো করে হাত ধুয়ে নিন। পচা, বাসি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার বর্জন করুন। সম্ভব হলে ঘরের বাইরের খাবার না খাওয়াই উত্তম। বাইরে যদি খেতেই হয় তবে খাবারের মান যাচাই করুন।


বাজারে প্রচলিত ময়লা টাকা-পয়সায় বিভিন্ন ধরনের জীবাণু থাকে। টাকা-পয়সা লেনদেনের পর হাত ভালো করে না ধুয়ে খাবার মুখে দেবেন না। ঘন ঘন হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন। এ সতর্কতা পালন করলে আপনি বহু মারাত্মক সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা পাবেন।


সালাদ খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকা আবশ্যক। সালাদ অনেক সময় জীবাণু সংক্রমণের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। আপনার ঘরের কাজের লোককে সাবান কিনে দিন এবং প্রতিবার টয়লেট ব্যবহার করার পর সাবান দিয়ে দু’হাত ভালো করে ধুতে বলুন। খাবার পরিবেশনের আগেও ভালো করে হাত পরিষ্কার করতে হবে। নতুবা পুরো পরিবার অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।


রোগাক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং সঠিক ওষুধ সঠিক মাত্রায় সঠিক সময়ে গ্রহণ করুন। সব রোগের জন্য ওষুধের প্রয়োজন হয় না। আমরা বিনা প্রয়োজনে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন করে শরীরের ক্ষতি করি। তবে এর অর্থ এই নয় যে, প্রয়োজনে আমরা ওষুধ সেবন করব না।


বহু ক্ষেত্রে মানুষের জীবনে এমন সব রোগের উৎপত্তি হয় যা নিয়ে হেলাফেলা করলে জীবন বিপন্ন হতে পারে। আপনি যদি এরই মধ্যে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েন, তবে দুশ্চিন্তা না করে জীবনকে সহজভাবে গ্রহণ করুন এবং নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত হোন। জটিল রোগে আক্রান্ত বহু রোগী নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন ও লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে খুব সুস্থ থাকেন। আপনি যদি শরীর ও মনের প্রকৃত চাহিদা ও সমস্যা বোঝেন তবে শরীর ও মন আপনাকে সুস্থ-সুন্দর জীবনের প্রতিশ্রুতি দেবে।


পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে মানবদেহে শক্তি উৎপাদন, গ্লুকোজ মেটাবলিজম কমে যায় এবং বয়োবৃদ্ধি প্রক্রিয়া বেড়ে যায়। শরীরে শক্তি সংরক্ষণ, কোষপুঞ্জ তৈরি ও মেরামত, শরীরের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পুনর্গঠন, মস্তিষ্ককে কোষের ধ্বংসাবশেষ থেকে পরিষ্কার রাখার জন্য পর্যাপ্ত ও নিরুপদ্রব ঘুমের একান্ত প্রয়োজন। ভরাপেটে ঘুমাতে গেলে ভালো ঘুম হয় না। আর ঘুমানোর কাছাকাছি সময়ে রাতের খাবার খেলে সর্বোচ্চ পরিমাণে গ্রোথ হরমোন নিঃসৃত হয়, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। রাতের বেলায় বেশি পানি পান করলে বারবার টয়লেটে যেতে হয় বলে ঘুমের বিঘ্ন ঘটে। এটাও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।


পানি মানে জীবন। জীবনের জন্য অক্সিজেনের পরই পানির স্থান। অনেকেই মনে করেন কফি, চা ও সোডা থেকে তারা পর্যাপ্ত পানি আহরণ করেন। চা ও কফিতে রয়েছে ক্যাফেইন, যা সাধারণত ডাইইউরেটিক হিসেবে কাজ করে। ডাইইউরেটিকের কাজ হল শরীর থেকে পানি বের করে দেয়া।


পরীক্ষায় দেখা গেছে, পানিস্বল্পতার কারণে শরীরের শক্তি উৎপাদনের ক্ষমতা বহুলাংশে কমে যায়। বেশি পানি পান করলে শরীর থেকে অতি সহজে বর্জ্য পরিষ্কার হয়ে যায় এবং কোষে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি ঢুকতে পারে। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করলে ৮০ শতাংশ ভুক্তভোগীর পিঠ ও গিঁটের ব্যথা সেরে যায়। শরীরে ২ শতাংশ পানিস্বল্পতা দেখা দিলে সাময়িকভাবে স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে পারে। ফলে সাধারণ অংকসহ কম্পিউটার মনিটরে মনোসংযোগে বিঘ্ন ঘটতে পারে। প্রতিদিন পাঁচ গ্লাস পানি পান করলে মলাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪৫ শতাংশ, স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ৭৯ শতাংশ এবং ব্লাডার ক্যান্সারের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ কমে যায়। তাই আমাদের প্রচুর পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। দূষিত পানি ব্যবহার ও পান করবেন না।


রোদ বা সূর্যালোক উপভোগ করুন। কারণ সূর্যালোক সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, যা ছাড়া শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয় না। আর ভিটামিন ডির ঘাটতি হলে শরীরের ক্যালসিয়াম বিশোষণে বিঘ্ন ঘটে। ক্যালসিয়াম শরীরের জন্য খুব প্রয়োজনীয় একটি উপকরণ। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট সূর্যস্নান করা দরকার। সূর্যালোক উপভোগ করার ভালো সময় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত।


দাম্পত্য জীবন সুন্দর ও পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলুন। দাম্পত্য জীবনের অশান্তি মানুষের শারীরিক-মানসিক ভারসাম্যে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। ছোটখাটো ভুলভ্রান্তি ও খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে অহরহ দাম্পত্যকলহ মানুষের সুখ-শান্তি কেড়ে নেয়। যে সুখী নয়, সে সুস্থও নয়। আবার যে সুখী হয়, সে সুস্থও থাকে বেশি।


সৃষ্টিকর্তার ওপর বিশ্বাস রাখুন। আমাদের শরীর শুধু রক্ত-মাংসে গড়া কোনো বস্তু নয়, আমাদের শরীরের অবিচ্ছেদ্য অংশ হল মন বা আত্মা। আবেগ-অনুভূতি আমাদের শরীরের ওপর ভীষণ প্রভাব ফেলে। বস্তুজগতে কাম, ক্রোধ, লোভ-লালসা, মোহ, ঈর্ষা ও প্রতিহিংসা আমাদের দুঃখ, কষ্ট, অশান্তি, অসুস্থতা ও ধ্বংসের মূল কারণ। মানুষ তার সততা, সৎকর্ম ও অটল সৃষ্টিকর্তা প্রীতির মাধ্যমে উল্লিখিত বদগুণ থেকে নিজেকে দূরে রেখে এ জীবনেই পরম স্বর্গসুখের স্বাদ লাভ করতে পারে।


আল্লাহ মানুষকে নিয়মতান্ত্রিক, স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের আদেশ দিয়েছেন। তাঁর সেই আদেশ-নিষেধ মেনে চললে জীবন অনেক শান্তিময় ও নিরাপদ হয়। আর সুস্থ, সুন্দর ও শান্তিময় নিরাপদ জীবনের জন্যই তো আমাদের বেঁচে থাকা।


লেখক: অধ্যাপক, ফার্মেসি অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]


বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com