দূরপাল্লার দ্রুতগতির বাসগুলো যখন দুর্ঘটনায় পতিত হয়, তৎক্ষণাৎ অনেক মানুষ মারা যেতে দেখি, অনেকেই পঙ্গুত্ববরণ করে। এই মৃত্যু এবং পঙ্গুত্ব বা হতাহত কমানোর জন্য সিট বেল্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। কীভাবে? কয়েকটি উদাহরণ দেয়ার চেষ্টা করছি।
১। সাধারণত বাস দুর্ঘটনায় ঘুমন্ত যাত্রীদের মধ্যে হতাহতের পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে। কারণ যে কোন দুর্ঘটনায় সবার আগে যাত্রীর মুখ, মাথা সামনের সিটের সাথে আঘাত লাগে। আঘাতটা যখন মাথায় লাগে, যাত্রীদের ক্ষতির পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই বেশি হয়ে যায়। কিন্তু সিট বেল্ট বাঁধা থাকলে, যাত্রীদের সামনের সিটের সাথে গুরুতর আঘাত লাগা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
২। গাড়ি যখন অতি দ্রুত বেগে চলে এবং এমন পরিস্থিতিতে যদি দুর্ঘটনা হয়, সেই ক্ষেত্রে যাত্রীর নিজের নিয়ন্ত্রণে কিছুই থাকে না। বাসের কাঁচের গ্লাসের উপর পড়ে রক্তাক্ত হতে পারে, নিজের সিট থেকে ছিটকে গিয়ে ভারী বস্তুতে আঘাত পেতে পারে। বাসের পুরোটাই তো হার্ডমেটাল, সুতরাং ফোমের সাথে ধাক্কা খাওয়ার তো সুযোগ নেই। ফলে আঘাতের কারণে কেউ কেউ গুরুতর আহত হয়, আবার মারাও যায়।
৩। আরো একটি বিষয় হচ্ছে, গাড়ি দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে যে কয় রাউন্ড রোল করবে (আমরা অনেকেই পল্টি খাওয়া বলে থাকি), গাড়ির ভিতরে থাকা যাত্রীরাও সেই কয়বার রোল করবে (পল্টি খাবে)। স্বাভাবিকভাবেই তখন যাত্রীরা নিজের অবস্থানে আর থাকতে পারে না। একজন আরেকজনের উপর গিয়ে পড়ে থাকে। অথচ সিট বেল্ট থাকলে এই সমস্যাগুলো আর হত না। সবাই যে যারা অবস্থানেই থাকত। একজনের সাথে অন্যজনের আঘাত লাগত না। যেকোনো পরিস্থিতিতে যখন একজন যাত্রী নিজের অবস্থানেই থাকবে, তখন বিপদের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
৪। বাস ড্রাইভারের সিট বেল্ট বাঁধা থাকলে, রাস্তার মোড় ঘোরাসহ বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বাস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।
সুতরাং দ্রুতগতির দূরপাল্লার প্রতিটি বাসেই সিট বেল্ট থাকা দরকার। এতে করে জীবনের উপর ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে। ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক সকল বাসযাত্রী।
লেখক: রিয়াজুল হক, যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।
(ফেসবুক ওয়াল থেকে)
বিবার্তা/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]