গোয়েন্দাপ্রধানের পদত্যাগের পর এবার পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন ইসরায়েলের সেনাবাহিনী প্রধান হারজি হালেভি। তাছাড়া আরো কিছু কমান্ডার রয়েছেন যাদেরও পদত্যাগে চাপ রয়েছে। ইসরায়েলের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এমন খবরই সামনে এনেছে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) ইসরায়েলের বেসরকারি সংবাদমাধ্যম ‘চ্যানেল ১২’ এর বরাতে এই তথ্য জানায় বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর চিফ অব স্টাফ হারজি হালেভি কিছু দিনের মধ্যে পদত্যাগ করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান মেজর জেনারেল আহারন হালিভার পদত্যাগের পর এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার বিষয়ে আগাম তথ্য দিতে ব্যর্থ হওয়ায় দায়ী সকল কর্মকর্তাকে চাকরি ছাড়তে হবে। আর সেটা চিফ অব স্টাফ থেকে শুরু করে (সবাইকেই)।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এমনকি অনেক অফিসার ‘যুদ্ধবিষয়ক তদন্তের প্রস্তুতির জন্য’ আইনি প্রতিনিধিত্ব চেয়েছেন। এর আগে গত ২২ এপ্রিল ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান মেজর জেনারেল আহারন হালিভা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। হামাসের গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে চালানো হামলার ঘটনায় গোয়েন্দা ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগের পর এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের হামলার পূর্বাভাস দিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য চিফ অব স্টাফ থেকে শুরু করে দায়ী সব কর্মকর্তাকে ঘরে ফিরে যেতে হবে অর্থাৎ পদত্যাগ করতে হবে।

অবশ্য নতুন গোয়েন্দাপ্রধান নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করবেন বলে একই দিন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়।

ইসরায়েলের বেসরকারি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২ বলছে, অদূর ভবিষ্যতে অবসর নিতে বাধ্য করা হবে এমন কমান্ডারদের মধ্যে আহারন হালিভাই প্রথম। এছাড়া ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেটের প্রধান রনেন বারসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও এই তালিকায় রয়েছেন।

এদিকে নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার জন্য সেনাপ্রধান পদে হার্জি হালেভির প্রতিস্থাপনের অর্থ কী হবে তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে বলেও ‘চ্যানেল ১২’ জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, মেজর জেনারেল ইয়ারন ফিঙ্কেলম্যান ও মেজর জেনারেল এলিজার টোলেদানোসহ অনেক কমান্ডার যাদের একসময় সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হতো, তাদেরকেও এখন ব্যর্থতার জন্য দায়ী হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এখন ইসরায়েলি রাজনৈতিক মহলের আশা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইয়াল জামির হয়তো হালেভির স্থলাভিষিক্ত হবেন। একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্যটি জানিয়েছে চ্যানেল ১২।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের শত শত যোদ্ধা সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে ঢুকে কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়। তেল আবিব দাবি করেছে, ওই হামলায় অন্তত ১ হাজার ২০০ ইসরাইলি নিহত এবং ২৫০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করে হামাস। হামাসের হামলার দিন থেকেই গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল।

অপরদিকে হামাসের হামলার দিন থেকেই গাজা উপত্যকায় জল, স্থল ও আকাশ পথে হামলা চালিয়ে আসছে। সপ্তম মাসে পৌঁছানো ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর এই যুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নজিরবিহীন মানবিক সংকট তৈরি করেছে। যুদ্ধে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

সূত্র: আনাদোলু

বিবার্তা/লিমন