
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে শ্বশুর বাড়িতে এক গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে লাশ দাফনে বাধা দিয়েছে পুলিশ।
৪ জুলাই, শুক্রবার সকালে নিহত গৃহবধুর বাবার বাড়ির লোকজন স্থানীয় কবরস্থানে লাশ নেওয়ার পথে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে এমন সন্দেহ হলে পুলিশ লাশ আটকিয়ে দাফনে বাধা দেয়। পরে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়।
শিলা খাতুন (২০) নামে নিহত ওই গৃহবধূ মিরপুর উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের কাঙালী মোড় এলাকায় আমিরুল ইসলামের মেয়ে এবং দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের শেরপুর সেনপাড়া গ্রামের আলামিনের স্ত্রী।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, দুই বছর আগে দৌলতপুর উপজেলার শেরপুর সেনপাড়া গ্রামের ইয়ারুল ইসলামের ছেলে আলামিনের সাথে শিলার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। ৩ মাস আগে তাদের একটি ছেলে সন্তানও জন্ম হয়েছে। ২৯ জুন শিলার শ্বশুর বাড়ি লোকজন জানায় পারিবারিক বিরোধ নিয়ে শিলা শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তাকে কুষ্টিয়া হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যায় শিলাকে তার স্বামী আলামিন ঢাকা থেকে বাবার বাড়িতে রেখে চলে যায়। এরপর রাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে পরিবারের লোকজন তাকে পার্শ্ববর্তী ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে আজ শুক্রবার ভোররাতে শিলা মারা যায়।
নিহতের দুলাভাই আশরাফুল ইসলাম বলেন, গত ২৯ জুন ঘটনাটি ঘটেছিল। শিলার শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাদের বলেছিল শিলা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তারাই চিকিৎসা করাচ্ছিল। কিন্তু শিলা মারা যাওয়ার আগে আমাকে বলেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার শরীরে তারপিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল। তবে সে কারো নাম বলেনি। যেহেতু পরিবারের অন্য কেউ ঘটনাটি জানতে চাইনি, তাই আমিও কাউকে বলিনি।
তিনি আরও বলেন, আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় কাঙালীমোড় কবরস্থানে শিলার দাফন হওয়ার কথা ছিল। বাড়ি থেকে লাশ কবরস্থানে নেওয়ার পথে সকাল পৌনে ১০টার দিকে পুলিশ লাশ আটকে দাফনে বাধা দেয়। হত্যার অভিযোগের বিষয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করলে আমি পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। পরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।
এ বিষয়ে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম বলেন, আসল ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে এমন সন্দেহের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের থামিয়ে পরিবারের সাথে কথা বলে। শোনা যাচ্ছে নিহতের দুলাভাই বলছে মারা যাওয়ার আগে তাকে বলেছে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিহতের শরীরের অর্ধেক পুড়ে গেছে এবং শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দুই পরিবার একে অপরের আত্মীয়। ঘটনাস্থল দৌলতপুর হওয়ায় ওই থানার ওসি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. নাজমুল হুদা বলেন, নিহত গৃহবধুর স্বামী বিদেশ যাওয়ার ঘটনা সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধ নিয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিবার্তা/শরীফুল/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]