বিশেষ প্রতিবেদন
টাঙ্গাইলে নদী রক্ষা প্রকল্পের ভেতরেই বালু উত্তোলন, ঝুঁকিতে ধলেশ্বরী তীরবর্তী গ্রাম
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০০:৫৬
টাঙ্গাইলে নদী রক্ষা প্রকল্পের ভেতরেই বালু উত্তোলন, ঝুঁকিতে ধলেশ্বরী তীরবর্তী গ্রাম
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ধলেশ্বরী নদীতে নদী রক্ষা প্রকল্পের সীমানার ভেতরেই ড্রেজার ও বাল্কহেড দিয়ে বালু উত্তোলন চলছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে শত শত বিঘা ফসলি জমি ও নদীতীরবর্তী বসতবাড়ি। এ নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে স্থানীয় মানুষ।


স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের কারণে যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর তীরবর্তী অঞ্চল নতুন করে ভাঙনের মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে।


গত বর্ষা মৌসুমে সদর উপজেলার অমরপুর ও চরপৌলি এলাকায় ভয়াবহ ভাঙনে সাতটি বসতবাড়ি, একাধিক ফসলি জমি, সড়ক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানে আরও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি ও স্থাপনা ঝুঁকির মুখে রয়েছে।


পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভাঙন রোধে আপদকালীন জরুরি প্রকল্পের আওতায় যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর বাম তীরে ৯৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫১০ মিটার এলাকায় জিও-টিউব ও জিও-ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। গত শুক্রবার এ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শরীফা হক।


তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নদী রক্ষা বাঁধ থেকে অল্প দূরেই ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, এতে প্রকল্পের কার্যকারিতা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি চারপাশের জমি ও বসতবাড়িও বেশি ঝুঁকিতে পড়ছে।


অমরপুর গ্রামের কৃষক আব্বাস আলী বলেন,পার বাঁধ দিলেও কোনো লাভ হবে না। বাঁধের পাশেই ড্রেজার বসিয়ে মাটি তুলছে। এটা যেন মাছের তেল দিয়ে মাছ ভাজার মতো।


কৃষক রফিক মিয়া বলেন, সরকার কোটি টাকা খরচ করে বাঁধ বানাচ্ছে, অথচ মাটি সেই নদী থেকেই নিচ্ছে। চর থেকে আনলে অন্তত কিছুটা লাভ হতো।


ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত জহুরা বেগম বলেন, কয়েকবার নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়েছি। এখন বাঁধ দিচ্ছে, কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হবে না। আমাদের কথা কেউ শোনে না।


অভিযোগের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মতিউর রহমান বলেন, সামান্য দূর থেকেই বালি আনা হচ্ছে। এতে কোনো সমস্যা হবে না।


জেলা প্রশাসক শরীফা হক বলেন, ভাঙন রোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডই সঠিকভাবে বলতে পারবে।


ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাদিক এন্টারপ্রাইজের মালিক রনি মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা নিয়ম মেনেই দূর থেকে বালু আনি। স্থানীয়দের অভিযোগ মিথ্যা।


উল্লেখ্য, এ প্রকল্পের আওতায় যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর বাম তীরে ২৬ হাজার ৫০টি জিও-ব্যাগ এবং ৭৬১টি জিও-টিউব ফেলার কাজ চলছে। তবে প্রকল্প এলাকার ভেতরেই বালু উত্তোলনের অভিযোগে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে।


বিবার্তা/ইমরুল/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com