
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাত থেকে ফুল নিয়ে বিএনপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছেন গণফোরামের রেজা কিবরিয়া।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে উপস্থিত থেকে তিনি যোগদান করেন।
বিএনপিতে যোগদানের জন্য রেজা কিবরিয়াকেও ফুল দেন বিএনপি মহাসচিব। তার এই যোগদানকে স্বাগত জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে দেশের একজন অত্যন্ত বিশিষ্ট সন্তান যিনি তার নিজের যোগ্যতা বলে আইএমএফ এর অত্যন্ত উচ্চ পদে কাজ করেছেন এবং পরবর্তীকালে তিনি দেশে এসে ২০১৮ সালে তিনি গণফোরাম থেকে আমাদের যে যুক্ত ফ্রন্টের (নির্বাচনি জোট) মনোনয়ন নিয়ে ধানের শীষ নিয়ে তিনি নির্বাচন করেছিলেন।
তিনি বলেন, পরবর্তীকালে আপনারা দেখেছেন তিনি রাজনীতির সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন এবং আমরা অত্যন্ত আনন্দিত এবং গর্বিত যে ড. রেজা কিবরিয়া আজকে আমাদের মাঝে এসে আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। আমি আমার দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তাকে আমাদের দলে স্বাগত জানাচ্ছি।
২০১৮ সালের নির্বাচনে রেজা কিবরিয়া হবিগঞ্জ- ১ আসনে (বাহুবল-নবীনগর) ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেন।
বিএনপি মহাসচিব আশাবাদ ব্যক্ত করেন ড. রেজা কিবরিয়া তার অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাংলাদেশকে নতুন বিনির্মাণে তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে অবদান রাখবেন।
রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘আমি বিএনপিতে যোগদান দিতে খুবই গর্বিত। আমি বিএনপিতে আজকে ফরমালি জয়েন করলাম। এই দলটার ইতিহাসটা হলো গণতন্ত্রের ইতিহাস। দুই দুইবার তারা গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের থেকে। একবার শেখ মুজিবের গণতন্ত্র ধ্বংস…সেখান থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এটাকে রক্ষা করলেন। আর দ্বিতীয় বার শেখ হাসিনা-জেনারেলের এরশাদের সাথে গণতন্ত্র ধ্বংস এবং আমাদের বেগম খালেদা জিয়া যিনি এখন অনেক অসুস্থ…সবাই দোয়া করবেন উনার জন্য। উনি আবার এটা রক্ষা করলেন।
‘এটা একটা ঐতিহাসিক ভূমিকা। একটা দল দুইবার বহুদলীয় গণতন্ত্র রক্ষা করেছে। আমি ইতিহাসে এরকম কোন উদাহরণ অন্য কোন দেশে দেখি না। এসব কারণে আমি বিএনপির প্রতি আকৃষ্ট এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমার আদর্শ। উনার সাহস, উনার ব্যক্তিগত চরিত্র, উনার সততা এগুলো নিয়ে এত বছর পরও সবাই এখনো গর্ব করে। উনি যে কোয়ালিটির ছিলেন যে, যে এত বছর পরও গ্রামের লোক উনার কথা বলে যে, এরকম মানুষ আর বাংলাদেশে জন্মাবে না হয়ত জন্মাবে না।’
তিনি বলেন, আমরা মনে করি যে বিএনপি এখন যেই নেতৃত্বে আছে এবং যারা আছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা আমাদের দেশের নতুন প্রজন্মকে তাদের সব স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। তাদের যে ভিশন দেশের জন্যে এটা আগের ভিশন না। অনেক কিছু বদলে গেছে।
রেজা কিবরিয়া বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব উনার যে রক্ত এটা কোন কোয়ালিটির আপনারা যদি চিন্তা করেন…. উনার বাপ কি ছিলেন এবং মা কি আছেন… এটা ইনক্রেডিবল, এটা বাংলাদেশে আর কারো ওই কোয়ালিটির ব্লাড লাইন নাই আপনাদেরকে বলতে পারি। আমরা সবাই উনাকে(তারেক রহমান) সাহায্য করব একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।
তিনি বলেন, আমার ধারণা উনি বিদেশে আছেন এটা একদিক থেকে দুঃখজনক আমাদের দেশের মানুষের কাছে নাই। আরেকদিক থেকে আমি এটাতে খুশি যে, উনি(তারেক রহমান) বিদেশের সব কোয়ালিটি, সব প্রশাসনিক সব জিনিসগুলি উনি দেখছেন শিখছেন এবং সেগুলি বাংলাদেশে উনি আনবেন আমি এটা আশা করি। আমি মনে করি উনার ইংল্যান্ডে থাকাও দেশের মানুষের জন্যে একটা লাভজনক জিনিস। উনি অনেক কিছু নিয়ে আসবেন এ দেশে যেটা আগে ছিল না।
রেজা কিবরিয়া বলেন, বাংলাদেশটাকে উন্নত করতে এশিয়ার মধ্যে প্রথম তিন দেশের মধ্যে আনতে অসম্ভব কিছু না। আপনারা ভাবছেন, আমি কী রূপকথার মতো বলছি। এটা পরে দেখবেন। আমি ৩৫টা দেশে কাজ করেছি প্রায় ৪০ বছর। আপনাদেরকে বলতে পারি, আমাদের দেশের মানুষের কোয়ালিটি এটা হলো ‘টপ ক্লাস’ এবং এই মানুষগুলিকে দিয়ে একটা ‘টপ ক্লাস’ দেশ প্রথম সারির দেশ তৈরি করা যাবে ইনশাল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে এই সুযোগটা যদি ভোটাররা দেয় তাহলে আপনারা দেখবেন তারা কী পারে এই দেশের জন্যে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর জন্যে তারা কী করতে পারবে আপনারা তখন দেখতে পারবেন। আমি আশা করি আমার এলাকায় নবীগঞ্জ-বাহুবল, সেখানে আমার কাজ করার একটা সুবিধা হবে এবং যদি ওনারা মনে করেন জাতীয় কোন জায়গায় আমাকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার। আমি চাই, দেশের জন্য কাজ করতে। আমি খুব ভালো চাকরি ছেড়ে এসেছি। আপনারা জানেন আইএমএফের চাকরির লাভজনক লোভজনক একটা চাকরি। সেই চাকরি ছেড়ে আমি আসছি দেশের জন্যে, দেশের মানুষের জন্যে কাজ করার জন্যে। এটা ছিল আমার বাবার স্বপ্ন। আমি আশা করি সেটা পূরণ করতে পারব।
এই যোগদান অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদও এই যোগদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রেজা কিবরিয়া গণফোরামে যোগদান করেন। পরে দলটির সাধারণ সম্পাদক হন। এরপর তিনি ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদ গঠন করেন। সেখানে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রেজা কিবরিয়া হবিগঞ্জ-১ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেছিলেন।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]