এখন একটি দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ খুঁজছে: সালাহউদ্দিন
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:১৬
এখন একটি দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ খুঁজছে: সালাহউদ্দিন
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘এখন একটি রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ খুঁজছে। তবে তাদের কিছু দাবি-দাওয়া আছে। আমরা আশা করছি সুন্দর সমাধান হবে।’


বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীতে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।


বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘গতকাল একটি দল বলেছে, আমরা নাকি চাপে জুলাই সনদে গণভোটের প্রস্তাব মেনে নিয়েছি। আমরা বলেছি, জাতীয় নির্বাচনের দিনই জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট হতে পারে।’ সনদের আইনি ভিত্তি নিয়ে তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আদেশ জারি ও প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জুলাই সনদকে আইনি কাঠামো দিতে পারেন। সবই হতে হবে বাস্তবতার নিরিখে এবং আইন দিয়ে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ বাতিলের দাবি তুলতে না পারেন। এক্ষেত্রে সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার।


জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে ‘চব্বিশোত্তর বাংলাদেশে তারুণ্যের ভাবনায় শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।


এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘চব্বিশোত্তর বাংলাদেশে আমাদের প্রত্যাশা ও ভাবনা কী? নতুন প্রজন্মের ভাবনাকে গুরুত্ব দিতে হবে। সেজন্য আমরা এরই মধ্যে তারুণ্যের ভাবনা জানতে সভা-সেমিনার করেছি। চব্বিশোত্তর বাংলাদেশের প্রধান শিক্ষা হলো- পরিবর্তন। সবক্ষেত্রে মেধা, জ্ঞান এবং প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে হবে। সমাজের যে স্তরেই আমরা কাজ করি না কেন, আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভূমিকা ব্যাপক। কারণ তারা তরুণ প্রজন্মকে শেখান।’


বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণা হলো গবেষণাধর্মী ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার প্রতিষ্ঠান। খাতভিত্তিক গবেষণামূলক শিক্ষাব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। যাতে আমরা গবেষণার মাধ্যমে বৈশ্বিক পর্যায়ে যেতে পারি। কর্মমুখী ও সময়োপযেগী কারিকুলাম নির্ধারণ করতে হবে।’


সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘আমাদের জনসংখ্যার কর্মসংস্থান অবশ্যই করতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু সরকারের ওপর নির্ভরশীল হলে চলবে না। বরং আত্মনির্ভরশীল হয়ে নিজ উদ্যোগে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা যে পরিবর্তন আশা করছি তা সর্বত্রই হতে হবে। দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন শুধু বৈষম্যমূলক চাকরিব্যবস্থা বা কর্মসংস্থানের জন্য নয়। সেটি ছিলো দীর্ঘ ১৫-১৬ বছরের ফ্যাসিবাদ শাসনের বিরুদ্ধে জনরোষের বহিঃপ্রকাশ। যে কারণে দ্রুত গতিতে এক দফার ভিত্তিতে সরকারবিরোধী আন্দোলন তীব্র হয় এবং বহু লড়াই, সংগ্রাম ও রক্তের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।’


‘যত সংস্কারই আমরা করি না কেন, মানসিক সংস্কার আগে করতে হবে। না হলে আমরা যত সংস্কারের কথা বলি না কেন, আমরা কিন্তু আইনে রূপান্তর করতে পারব না। গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শক্তিশালী আইনি রূপান্তর ঘটাতে পারলে জাতির মুক্তি হবে। আসুন দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে আমরা সবাই একসঙ্গে হই,’ আহ্বান জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য।


অনুষ্ঠানে ইউট্যাব প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের উদাসীনতার কারণে বাংলাদেশের শিক্ষার মান নিয়ে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সুতরাং আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর বিকল্প নেই। আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের অবস্থানের বদনাম ঘুচাতে হবে। বিগত ১৭ বছরে শিক্ষার জঞ্জাল সরিয়ে শিক্ষাকে বাঁচাতে হবে। কারিকুলাম পরিবর্তনের মাধ্যমে কর্মমুখী ও বিজ্ঞানমনস্ক যুগপোযোগী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার বিকল্প নেই।’


স্বাগত বক্তব্যে ইউট্যাব মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, ‘আমাদের দল বিএনপি মনে করে একটি জাতি গঠনে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু শিক্ষাকে হতে হবে সম্পূর্ণ কর্মসংস্থানমুখী ও যুগোপযোগী। গত কয়েক দশকে আমরা দেখেছি সার্টিফিকেটসর্বস্ব একটি শিক্ষাব্যবস্থা, যা কেবল বেকারত্বের সংখ্যা বাড়িয়েছে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে তরুণদের ভাবনা হওয়া উচিত একটি জ্ঞানভিত্তিক ও চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে বৈশ্বিক বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঢেলে সাজাতে হবে, যেখানে কারিগরি, ভোকেশনাল এবং প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’


সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন রুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান ও অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল প্রমুখ।


বিবার্তা/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com