মানসিক চাপ ও হতাশা কমাবে ১০ অভ্যাস
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৫
মানসিক চাপ ও হতাশা কমাবে ১০ অভ্যাস
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মানসিক চাপ ও হতাশা বর্তমানে অনেকের জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। অনেকে হয়তো জানেন না, কোথা থেকে শুরু করবেন। তবে মনে রাখবেন, মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক করতে চাওয়ার পদক্ষেপ নেওয়াই প্রথম সাফল্য। কারণ, অনেকে চাইলেও ঠিক কবে কীভাবে শুরু করবেন, এই সিদ্ধান্তে আসতে পারেন না। কিছু সহজ অভ্যাস রয়েছে, যেগুলো আপনার মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে সাহায্য করতে পারে।


প্রতিদিন নিজের মনের খবর নিন


প্রতিদিন এক বা দুবার নিজের আবেগ ও অনুভূতি যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ। ভাবুন, আপনি এখন কেমন অনুভব করছেন। শরীর কেমন লাগছে। কী করলে আপনি সামান্য ভালো বোধ করতে পারেন।


থেরাপি ফর ওমেন সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা অ্যামান্ডা হোয়াইট বলেন, ‘প্রতিদিন নিজের অনুভূতি যাচাই করলে আপনি সমস্যা বাড়ার আগে নিজের প্রয়োজনগুলো বুঝতে পারবেন। উদাহরণ হিসেবে বলা চলে, যদি কোনো মিটিংয়ের পরে রাগ বা হতাশা অনুভব করেন, তাহলে গভীর শ্বাস নিন বা হালকা হাঁটুন। এতে মন শান্ত হবে।’ এ ছাড়া নিজের আবেগ শনাক্ত করতে মুড মিটার চার্ট ব্যবহার করতে পারেন।


পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন:ভালো ঘুম মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। কিয়ানো জ্যাকসন বলেন, ‘ঘুমের অভাব ধৈর্য ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে দেয়।’ প্রতি রাতে কমপক্ষে সাত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। ঘুমের মান বাড়াতে—


প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমোতে যান
ঘর ঠান্ডা রাখুন
ঘুমের ৩০ মিনিট আগে সব স্ক্রিন বন্ধ করুন
২০২১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভালো ঘুম বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।


ছোট আনন্দের মুহূর্ত খুঁজুন:দৈনন্দিন জীবনের ছোট সুখের মুহূর্তগুলো খুঁজে দেখুন। যেমন সকালে এক কাপ গরম চায়ে চুমুকেও আনন্দ খুঁজে নিতে পারেন অথবা রাস্তার কুকুরকে খাওয়ানোর মতো কাজেও আনন্দ হতে পারে। থেরাপিস্ট ক্রিস্টোফার লিনলগু বলেন, ‘ছোট সুখের মুহূর্তগুলো উপভোগ করতে শিখলে দিনটা আনন্দে কাটে।’


৯০ সেকেন্ড রুল ব্যবহার করুন:অনেক সময় হঠাৎ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লে সেটি নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করা মানুষের অভ্যাস। প্রায় সব আবেগ শারীরিকভাবে ৯০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়, যদি সেই চিন্তা দীর্ঘায়িত না করেন।


থেরাপি শুরু করতে পারেন:থেরাপি শুধু গভীর বিষণ্নতা বা ট্রমার জন্য নয়; আপনি যদি মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে আগ্রহী হন, তার জন্যও থেরাপি রয়েছে। সঠিক থেরাপিস্ট খুঁজতে কিছু সময় লাগতে পারে। এ ছাড়া বিশ্বস্ত বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে কথা বলুন, যাতে একা বোধ না হয়।


ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ করুন:এখন আপনি কেমন অনুভব করছেন, তার চেয়ে ভবিষ্যতে কেমন হতে চান, তা ভাবুন। ছোট ছোট লক্ষ্য ঠিক করে সঠিক পরিকল্পনা করুন। কোনো নেতিবাচক অনুভূতি বা পরিস্থিতি থেকে দূরে থাকতে চান আর কোন আনন্দদায়ক বিষয় আপনার জীবনে আনতে চান, তা নির্দিষ্ট করুন। তারপর ধীরে ধীরে সেই লক্ষ্যগুলো পূরণ করার জন্য ছোট পদক্ষেপ নিন।


প্রিয় কাজগুলো করুন:মানসিক চাপের সময় অনেকে আনন্দদায়ক কাজ বাদ দেন। তবে এগুলো নিয়মিত রাখা জরুরি। অল্প সময়ের জন্য হলেও প্রতিদিন অন্তত একটি প্রিয় কাজ করুন। এসব কাজ মন শান্ত করে।


সামাজিক যোগাযোগ রাখুন:একাকিত্ব কাটানোর জন্য সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখুন। প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলা কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে মজার কিছু ভাগাভাগি করে নেওয়ার মতো কয়েকটি কাজ করুন। নিয়মিত পরিচিত জায়গায় যাওয়া; যেমন কফি শপ বা জিম—এসব জায়গায় গেলে সামাজিক যোগাযোগ বাড়ে।


মননশীলতার চর্চা করুন:মননশীলতা বা মাইন্ডফুলনেস হলো বর্তমানে যা ঘটছে, তা সচেতনভাবে অনুভব করা। আপনি এটি করতে পারেন ৫-৪-৩-২-১ নিয়ম অনুশীলনের মাধ্যমে। এই অনুশীলন হলো সচেতন থাকার চর্চা।


৫টি জিনিস দেখুন: চারপাশে যা কিছু চোখে পড়ছে, সেগুলো লক্ষ করুন।


৪টি জিনিস শুনুন: চারপাশের শব্দগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন।


৩টি জিনিস স্পর্শ করুন: আপনার হাতে বা শরীরে যা স্পর্শ করতে পারেন, তা অনুভব করুন।


২টি জিনিস ঘ্রাণ নিন: যেকোনো দুটি ঘ্রাণ লক্ষ করুন।


১টি জিনিস স্বাদ নিন: কিছু খেয়ে বা চুমুক দিয়ে স্বাদ অনুভব করুন।


নিজের প্রতি সহানুভূতিশীল হোন:নিজেকে অতিরিক্ত চাপ দেবেন না। নিজের প্রতি সদয় হওয়া মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। সবকিছু এক দিনে ঠিক হবে না, ধৈর্য ধরুন।


ছোট ছোট পদক্ষেপ, দৈনন্দিন অভ্যাস ও সচেতন চর্চা মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ধীরে ধীরে এগুলোকে জীবনের অংশ করে নিন।


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com