
মানুষ ডিম ছোড়াকে প্রতিশোধ বা প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে কয়েকটি কারণে।
১. সহজলভ্য ও সস্তা: ডিম বাজারে সহজে পাওয়া যায়, দামও কম। তাই রাগ বা প্রতিশোধ নিতে সহজ অস্ত্র হয়ে ওঠে।
২. গোছালো নোংরা করার উপায়: ডিম ছুঁড়লে পোশাক, শরীর বা বাড়িঘর খুব নোংরা হয়ে যায়। এতে যার দিকে ছোড়া হয় সে বিব্রত ও লজ্জিত হয়।
৩. শারীরিক ক্ষতি কম: পাথর বা শক্ত কিছু ছুঁড়লে আঘাত লাগে, কিন্তু ডিম ছুঁড়লে সাধারণত বড় কোনো আঘাত হয় না—বরং “হিউমিলিয়েশন” বা লজ্জা দেয়াটাই মুখ্য উদ্দেশ্য থাকে।
৪. প্রতীকী প্রতিবাদ: ইতিহাসে বহুবার দেখা গেছে মানুষ রাজনৈতিক নেতাদের বা জনপ্রিয় ব্যক্তিদের ডিম ছুঁড়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এটি “আমরা রাগান্বিত” – এর একধরনের প্রকাশ।
৫. চোখে পড়া নাটকীয়তা: ডিম ভাঙলে বাজে গন্ধ, চটচটে অবস্থা তৈরি হয়, যা দর্শকদের কাছে তীব্র বার্তা পৌঁছে দেয়। তাই এটি দ্রুত দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
৬. ইতিহাস ও সংস্কৃতির অংশ: ইউরোপ-আমেরিকায় বহু আগ থেকেই রাজনীতিবিদ বা জনসম্মুখে সমালোচিত ব্যক্তিদের দিকে ডিম বা টমেটো ছোড়া প্রতিবাদের এক রকম প্রচলিত সংস্কৃতি।
ইতিহাস যা বলে-ডিম নিক্ষেপের ইতিহাস বহু পুরনো। মধ্যযুগে বন্দিদের ওপর জনসম্মুখে ডিম ছোড়ার কথা শোনা যায়। লিখিত সূত্রে এর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৮শ শতকের গোঁড়ার দিকে। ১৮৩৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাসত্ববিরোধী বক্তা জর্জ হোয়াইটারকে ডিম ছোড়ার ঘটনা নথিভুক্ত আছে।
বিশ্বজুড়ে এমন আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো—১৯১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিলি হিউজকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়া এবং ২০০১ সালে ব্রিটিশ উপ-প্রধানমন্ত্রী জন প্রেসকটের দিকে ডিম নিক্ষেপের ঘটনা, যেখানে তার প্রতিক্রিয়ায় ঘুষি দেওয়ার ছবিটি বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তৈরি করেছিল।
কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অ্যান্ড্রু গেলম্যান এই ধরনের খাদ্য নিক্ষেপকে ব্যাখ্যা করে বলেন, এটি একটি অহিংস প্রতিবাদ। ডিম বা টমেটো নিক্ষেপ করলে পুলিশের পক্ষে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, কারণ জনমনে তা ‘ফুলিস’ বা হাস্যকর বলে মনে হতে পারে। ফলে এই প্রতিবাদের একটি প্রতীকী মূল্য আছে, যা পুলিশি বলপ্রয়োগের ঝুঁকি কমায়।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]