
কথায় বলে মানুষ অভ্যাসের দাস। অভ্যাসই বদলে দিতে পারে মানুষের জীবনের চলার পথ ধারা। অনেকেই বলেন কিছু ভালো লাগে না তবে তাদের ভালো লাগার কিছু টিপস বদলে দিবে জীবন। কিছু সহজ অভ্যাস গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে আমরা ইতিবাচক জীবনযাপন করতে পারি। এই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে চারপাশের আনন্দঘন মুহূর্ত উপভোগ করা সম্ভব। যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস প্রকাশিত ‘ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস জার্নাল’ বা ‘হেলথ সার্ভিস জার্নালে’ (এইচএসজে) বিশেষজ্ঞরা মানসিক সুস্থতার ৫টি কার্যকর ধাপের কথা বলেছেন। এসব ধাপ মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন: মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে পারস্পরিক সম্পর্কের ভূমিকা অনেক। সম্পর্ক আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, সুখের মুহূর্ত ভাগ করে নিতে শেখায়। এ ছাড়া প্রয়োজনে একে অপরের মানসিক ভরসা হয়ে দাঁড়ায়।
কী করতে পারেন: পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে প্রতিদিন কিছুটা সময় কাটানোর চেষ্টা করুন। এ জন্য যেকোনো এক বেলার খাবার সবাই মিলে খেতে পারেন। অনেক দিন দেখা হয় না এমন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করুন। পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার জন্য টিভি বন্ধ করে সময় দিন, অথবা একসঙ্গে নিজেদের পছন্দের কোনো কাজ করে সময় কাটাতে পারেন। সহকর্মীদের সঙ্গে দুপুরের খাবার খেতে পারেন। যে বন্ধু বা আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে ইচ্ছা হয়, সম্ভব হলে তাঁকে দেখতে যান। স্থানীয় কোনো স্কুল, হাসপাতাল বা কমিউনিটি গ্রুপে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে পারেন।
কী করা যাবে না
সম্পর্ক তৈরির জন্য শুধু প্রযুক্তি বা সামাজিক মাধ্যমের ওপর নির্ভর করবেন না। শুধু টেক্সট, মেসেজ বা ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করার অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসুন।
শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন: শরীরচর্চা শুধু শারীরিক সুস্থতার জন্য নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও প্রয়োজন। নিয়মিত বিভিন্ন শারীরিক ব্যায়াম আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং লক্ষ্য ঠিক করতে অনুপ্রেরণা জোগায়। এ ছাড়া মন-মেজাজ প্রফুল্ল রাখে।
কী করতে পারেন
ঘরে বা বাইরে হালকা ব্যায়ামের চেষ্টা করুন। এটি আপনাকে শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে সহায়ক।
পেশিশক্তি বাড়াতে, ভারসাম্য ঠিক রাখতে এবং জয়েন্টের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এমন ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন।
কী করা যাবে না
ব্যায়াম করার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিমে সময় কাটানোর প্রয়োজন নেই। এমন কিছু ব্যায়াম খুঁজে বের করুন, যেগুলো আপনি উপভোগ করেন। এতে এমন অভ্যাস আপনার প্রতিদিনের জীবনের অংশ হয়ে উঠবে।
নতুন কিছু শিখুন: গবেষণা অনুযায়ী, নতুন দক্ষতা রপ্ত করা মানসিকভাবে সুস্থ থাকার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এটি আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
কী করতে পারেন
নতুন কোনো খাবার রান্না করা শিখতে পারেন। নতুন প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো শিখতে পারেন। কাজের জায়গায় নতুন দায়িত্ব নিন। যেমন নতুন একজন সহকর্মীকে শেখানো বা প্রেজেন্টেশন দেওয়ার দক্ষতা বাড়ানো। বাড়ির যেকোনো কাজ করতে পারেন। যেমন ভাঙা সাইকেল ঠিক করা বা বাগান পরিচর্যা করা। অনলাইন থেকে কিছু শেখা। নতুন ভাষা বা কোনো ব্যবহারিক দক্ষতা শিখতে কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। ব্লগ লিখতে পারেন, ছবি আঁকতে পারেন কিংবা আপনার যা করতে ভালো লাগে, তা করতে পারেন।
কী করা যাবে না
যদি আপনার আগ্রহ না থাকে, তাহলে নতুন কোনো যোগ্যতা অর্জনের জন্য নিজেকে চাপ দেবেন না। এমন কিছু শিখুন যেটি আপনি উপভোগ করেন।
অন্যকে সাহায্য করুন: অন্যের প্রতি সাহায্যের মনোভাব আমাদের মানসিকভাবে প্রশান্তি দেয়। আমাদের মনে ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি করে এবং আত্মতৃপ্তি দেয়।
কী করতে পারেন
কেউ আপনার জন্য কিছু করলে তাঁকে ধন্যবাদ জানান। বন্ধু, পরিবার বা সহকর্মীদের জিজ্ঞেস করুন, তাঁরা কেমন আছেন। মনোযোগ দিয়ে তাঁদের কথা শুনুন। যাদের সমর্থন বা সঙ্গ প্রয়োজন, তাদের সঙ্গে সময় কাটান।কাউকে তাঁর কোনো কাজে বা প্রকল্পে সাহায্য করতে পারলে সেই প্রস্তাব দিন।
বর্তমান সময়ের দিকে মনোযোগ দিন: বর্তমান সময়ের দিকে মনোযোগী হওয়ার চেষ্টা করুন। বর্তমানকে সুন্দর করতে পারলে ভবিষ্যতের দিনগুলো সুন্দর হতে পারে। আপনার চারপাশের জগৎ উপলব্ধি করুন। এই চর্চা আপনার জীবনকে আরও বেশি উপভোগ করতে এবং নিজেকে ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]