ইসরাইলি হামলায় একদিনে আরও ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত
প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫, ০৮:১১
ইসরাইলি হামলায় একদিনে আরও ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছেই। এতে একের পর এক হামলায় ধ্বংস হচ্ছে স্থাপনা প্রাণ হারাচ্ছে নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় আরও ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও চার শতাধিক মানুষ।


শনিবার (২৮ জুন) দুপুর পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন স্থানে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।


আল-শিফা হাসপাতালের কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাজা শহরের একটি স্টেডিয়ামের কাছে হামলায় শিশুসহ কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছেন। স্টেডিয়ামটি তাঁবুতে বসবাসকারী বাস্তুচ্যুত লোকদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।


বিবিসি যাচাইকৃত ফুটেজে দেখা গেছে, মানুষ খালি হাতে ও কোদাল দিয়ে বালু খুঁড়ে লাশ উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।


এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, তারা বসে ছিলেন। একটি রাস্তায় হামলা হওয়ার পর হঠাৎ বিশাল বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন।


আহমেদ কিশাউই নামে এই ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এই এলাকাটি তাঁবুতে পরিপূর্ণ ছিল– এখন তাঁবুগুলো বালুর নিচে। আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা খালি হাতে খুঁড়েছি।


তিনি বলেন, এখানে এমন কোনো ব্যক্তি নেই যাকে খোঁজা হচ্ছে, বা তাদের (ইসরাইলিদের) দাবি অনুযায়ী কোনো সন্ত্রাসীও নেই এখানে। কেবল বেসামরিক বাসিন্দা, শিশু, যাদেরকে কোনো দয়া না দেখিয়ে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।


আল-মাওয়াসি এলাকায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক এবং একটি তাঁবুতে হামলায় আরও ১৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও ছিল।


আত্মীয়রা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, আল-মাওয়াসিতে হামলায় তিনটি শিশু এবং তাদের বাবা-মা নিহত হয়েছেন, যারা ঘুমের মধ্যেই মারা যান।


শিশুদের দাদি সুয়াদ আবু তেইমা বলেন, এই শিশুরা তাদের কী ক্ষতি করেছিল? তাদের দোষ কী?


শনিবার বিকালে জাফা স্কুলের কাছে তুফফাহ মহল্লায় একটি বিমান হামলার পর আরও মানুষ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যেখানে শত শত বাস্তুচ্যুত গাজাবাসী আশ্রয় নিয়েছিল।


ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই হামলায় পাঁচ শিশুসহ অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন।


প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ হাবুব রয়টার্সকে বলেন, হামলায় তার ভাগ্নে, বাবা এবং প্রতিবেশীদের সন্তানরা নিহত হয়েছেন।


তিনি বলেন, আমরা তাদের কোনো ক্ষতি করিনি, তারা কেন আমাদের ক্ষতি করছে? আমরা কি তাদের ক্ষতি করেছি? আমরা বেসামরিক নাগরিক।


স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় চলাচল অসম্ভব হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স এবং সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় আটকে পড়া অনেক হতাহতের কাছে পৌঁছাতে পারেনি।


গত মার্চ মাসে ইসরাইল গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করলে দুই মাসের একটি যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ে। ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি তিনটি ধাপে বিভক্ত ছিল, কিন্তু তা প্রথম ধাপের পর আর এগোয়নি।


দ্বিতীয় ধাপের অন্তর্ভুক্ত ছিল একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা। ইসরাইলে বন্দি ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে গাজায় থাকা বাকি জীবিত জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা এবং গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহার।


বৃহস্পতিবার হামাসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, মধ্যস্থতাকারীরা গাজায় একটি নতুন যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তির জন্য তাদের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে, কিন্তু ইসরাইলের সঙ্গে আলোচনা স্থবির হয়ে আছে।


গাজায় হামাসের হাতে আটক বাকি ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে একটি চুক্তির জন্য শনিবার সন্ধ্যায় তেলআবিবে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। আয়োজকরা বলেন, যুদ্ধ শেষ করে এক দফাতেই সবাইকে বাড়ি ফিরিয়ে আনার সময় এসেছে।


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com