শিরোনাম
প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত সেই শিক্ষক চাকরিচ্যুত
প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৫:৫০
প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত সেই শিক্ষক চাকরিচ্যুত
বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর একটি বিষয়ে কোচিং সেন্টারের প্রশ্নপত্রে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘটনায় জড়িত আইসিটি বিষয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক শেখ মো. বেল্লাল হোসেনকে চাকরিচ্যুত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেই সাথে চাকরিচ্যুত শিক্ষক বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে বাগেরহাট মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন।


বৃহষ্পতিবার গভীর রাতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মতিন হাওলাদার বাদী হয়ে চাকরিচ্যুত খণ্ডকালীন শিক্ষক বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। তবে পুলিশ ওই শিক্ষককে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি।


গত ৯ ডিসেম্বর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীর অনুষ্ঠিত বার্ষিক পরীক্ষায় শিক্ষক বেল্লাল হোসেন পরিচালিত তার কোচিং সেন্টারের মডেল টেস্টের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।


এই ঘটনার পরদিন তদন্ত করতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহকারি প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ওই শিক্ষক বেল্লাল হোসেনের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়ে তাকে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।


১৪ ডিসেম্বর তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাসের কাছে জমা দেয়া হয়। তিনি নিয়ম মেনে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।


বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মতিন হাওলাদার শুক্রবার দুপুরে এই প্রতিবেদককে বলেন, শিক্ষা অধিদপ্তর মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে আইসিটি বিষয় চালু করে স্ব স্ব প্রধান শিক্ষককে ওই পদে নিয়োগের ক্ষমতা দেয়।


অধিদপ্তরের দেওয়া ক্ষমতা বলে প্রায় দেড় বছর আগে এই স্কুলের প্রভাতী ও দিবা শাখায় দুজন খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। গত ৯ ডিসেম্বর এই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ে তার কোচিং সেন্টারে অনুষ্ঠিত মডেল টেস্টের প্রশ্নপত্রে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার অভিযোগ উঠলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।


ওই কমিটি তদন্তে সত্যতা পেয়ে স্কুলের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে তাকে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ করে। এছাড়া টিচার্স কাউন্সিলের জরুরী সভায়ও একই দাবি ওঠে। নিয়োগ বিধি মেনে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং বাগেরহাট মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।


বাগেরহাট মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ও মামলা তদন্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম শুক্রবার দুপুরে এই প্রতিবেদককে বলেন, বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন হাওলাদার বাদী হয়ে ১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪ ধারায় তার বিদ্যালয়ের শিক্ষক বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। আমি মামলার তদন্ত শুরু করেছি। আসামীকে ধরতে অভিযান চলছে।


বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস শুক্রবার দুপুরে এই প্রতিবেদককে বলেন, বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের আইসিটি বিষয়ের বেল্লাল হোসেন প্রশ্নপত্র ফাঁস করে যে অপরাধ করেছেন তা ক্ষমার অযোগ্য। তাই তাকে শুধু চাকরিচ্যুত করলেই হবে না। ভবিষ্যতে কোন শিক্ষক এই ধরনের অপরাধ যাতে আর করতে ধৃষ্টতা না দেখাতে পারে সেজন্য তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।


অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে প্রভাতী শাখার খন্ডকালীন শিক্ষক শেখ মো. বেল্লাল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।


>>কোচিং সেন্টারের প্রশ্নপত্রেই বার্ষিক পরীক্ষা!


বিবার্তা/ইমরুল/ইমদাদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com