
দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই কোরবানির ঈদ। এই ঈদের অন্যতম ঐতিহ্য হলো পশু কুরবানি করা। সাধ আর সাধ্যের মধ্যে কোরবানি দেওয়ার জন্য অনেকের কেনা হয়ে গেছে পছন্দের পশু। কোরবানির পশু জবাই, চামড়া ছিলানো এবং মাংস কাটার জন্য প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম কিনতে ছুটছেন কামার পাড়ায়। কারিগরদের যেন দম ফেলারও সময় নেই। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কাজ। সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কয়েকগুণ ব্যস্ততা বেড়ে যায় তাদের।
তবে ব্যস্ততা বাড়লেও সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যবহৃত লোহার দাম বাড়ায় লাভ কমেছে বলে জানিয়েছেন কারিগররা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, লোহা, কয়লাসহ প্রয়োজনীয় উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি ও সরবরাহ কম থাকায় ছুরি, চাপাতি, দা-বঁটির দাম একটু বেশি এজন্য বিক্রিও আর আগের মতো হয় না ।
১০ জুন, সোমবার সরেজমিনে উপজেলার পাকেরহাট, খানসামা বাজার, কাচিনিয়া, রামকলা, মানিকগঞ্জ হাটবাজারের কামাররা তৈরি করছেন প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। উপজেলার এই কামারশালাগুলোতে তাই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাতুড় আর লোহার ঠুং-ঠাং আওয়াজ। হাপরে আগুনের শিখায় তৈরি হচ্ছে দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম। অনেকে আবার এসেছেন পুরাতন যন্ত্রপাতিগুলোকে শান দেওয়ার জন্য।
জানা যায়, উপজেলার প্রায় দেড়শতাধিক কামারের দোকান রয়েছে। এর সাথে জড়িত রয়েছে ২০০ এর অধিক পরিবার। এখানেই তৈরি হয় ছুরি, দা ও বঁটি, চাপাতিসহ দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় নানা জিনিস। সারাবছর এসব জিনিসের ব্যবহার হলেও কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে এর চাহিদা বাড়ে কয়েকগুণ।
কয়েকজন কামারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চাপাতি ৪০০-৫০০ টাকা, বড় ছুরি ৬০০-৭০০ টাকা, চামড়া ছড়ানো ছোট ছুরি ৫০ টাকা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন তারা।
উপজেলার হোসেনপুর কামারপাড়ার কর্মকার মানিক বলেন, এখন কিছু আয় হলেও সারাবছর আমাদের টুকটাক করে চলতে হয়। আমি আগে ডাঙ্গারহাটে তৈরি করতাম এবং সেখানেই বিক্রি করতাম হাট ভেঙে যাওয়ায় এখন বাড়িতে তৈরি করে বিক্রি করি।
উপজেলার পাকেরহাট এলাকার কামার দয়াল চন্দ্র রায় বলেন, পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এই পেশায় আছি। সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে তাই আগের মতো আর লাভ নেই। পরিবার নিয়ে কোনোরকম দিন পার করছি।
বাড়ি থেকে পুরানো দা, বঁটি এবং পশু জবাই করা ছুরি নিয়ে কামারের কাছে এসেছেন উপজেলার আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের বাসিন্দা রোস্তম আলী । তিনি বলেন, কোরবানির জন্য পছন্দ করে একটি গরু কিনেছি। এখন মাংস কাটাকাটির জন্য পুরোনো এ সরঞ্জাম নিয়ে এসেছি কামারের কাছে।
উপজেলার বদলিপাড়া এলাকার আব্দুর সুবাহান বলেন, আগের চাপাতিটা আর চলে না। তাই দাম দর করে একটি চাপাতি নিয়েছি ৪০০ টাকায়। মাংস ও হাড় কাটার জন্য এটা কিনেছি।
বিবার্তা/জামান/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]