শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন, পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন সূচক
প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৫, ১৬:৩০
শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন, পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন সূচক
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

অব্যাহত ঢালাও দরপতনের বৃত্তে আটকে গেছে দেশের শেয়ারবাজার। প্রতিদিনই ঢালাও দরপতন হওয়ায় দিন যত যাচ্ছে শেয়ারবাজার তত তলানিতে নামছে। সেই সঙ্গে বেড়েই চলেছে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা। অব্যাহত পতনের কবলে পড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক প্রায় ৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে।


আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারও (১৫ মে) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২০২০ সালের ২৪ আগস্টের পর সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে এসেছে।


এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাজারে পতনের মাত্রাও বাড়তে থাকে। ক্রেতার তুলনায় শেয়ার বিক্রির চাপ বেশি থাকায় ভালো, মন্দ সব শ্রেণির বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দাম কমে যায়। ফলে ঢালাও দরপতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।


দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে মাত্র ৪২টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩১৭টির। আর ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাত্র ১৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৮২টির দাম কমেছে এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।


মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ১১টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৬৭টির দাম কমেছে এবং ৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৮টির এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র ২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৩১টির দাম কমেছে এবং ৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।


অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার দিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৪ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৭৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হলো। এই তিন দিনেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমলো ১৪০ পয়েন্ট। এতে ২০২০ সালের ২৪ আগস্টের পর সূচকটি সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে। ২০২০ সালের ২৪ আগস্ট সূচকটি ৪ হাজার ৭৬২ পয়েন্টে ছিল।


প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বড় পতন হয়েছে অন্য দুই সূচকের। এর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৭৭০ পয়েন্টে নেমে গেছে।


সবকটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। তবে লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার নিচে রয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৯৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৯৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।


এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বিচ হ্যাচারির শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ২১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এনআরবি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার। ৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার।


এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ব্র্যাক ব্যাংক, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, উত্তরা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এবং ফাইন ফুডস।


বিবার্তা/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com