ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দুই ট্রলি ম্যানের বিরুদ্ধে অসহায় এক দরিদ্র রোগীকে জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা দাবি করার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।

২৫ ডিসেম্বর, সোমবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে এঘটনা ঘটে। রোগীকে (ঢামেক) নিয়ে আসা লেগুনার চালক আরিফুল ইসলাম রাব্বি জানান, মিরপুরের ব্যাড়িবাধ সংলগ্ন কলাপট্টি এলাকায় তার লেগুনার সাথে ধাক্কা লেগে বৃদ্ধ লোকটি (৭০) আহত হন। স্থানীয় পুলিশ গাড়িটি আটক করে রেখে। আমাকে দিয়ে রোগীকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

রোগীকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে, দুই ট্রলি ম্যান রোগীকে তাদের ট্রলিতে তুলেন। টিকেট কিনে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে
চিকিৎসক তার মাথায় আঘাতের কারণে সিটি স্ক্যান পরীক্ষা দেন। এ ছাড়া বৃদ্ধের ডান হাত ও দাঁত ভেঙে গেছে।

তিনি বলেন, আমার কাছে পরীক্ষা করার মতো এত টাকা নাই, বিষয়টি চিকিৎসকের কাছে জানিয়ে অনুরোধ করায়, চিকিৎসক আন্তরিক ভাবে ফ্রী করে দেন।

পরে পরীক্ষার কাগজপত্র দেখে চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র লিখে দিয়ে মিরপুর ডেন্টাল হাসপাতালে রেফার করেন।

রোগী টিকে নিয়ে জরুরি বিভাগ থেকে বের হওয়ার পর ঐ দুই ট্রলি ম্যান আমার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। তারা বলেন টাকা না দিলে তোকে পুলিশে দিব। তুই কোথাও নিয়ে যেতে পারবিনা। বাড়াবাড়ি করলে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে হবে।

এদিকে এসব নিয়ে হৈচৈ ও লেগুনার চালকের কান্নাকাটি দেখে লোকজন এগিয়ে আসলে এবং বিষয়টি জানাজানি হলে ট্রলি রেখে আলমগীর নামে একজন কেটে পড়েন। অপরজন জাকির কে আটক করে পুলিশ ফাড়িতে সোপর্দ করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় দুইজনের মধ্যে একজন ছিলেন দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারী আলমগীর, আরেকজন বহিরাগত জাকির।

জাকির জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজ কে ম্যানেজ করে দীর্ঘ দিন যাবত ধরে এখানে কাজ করে আসছেন। আলমগীর মূলত তার ডিউটি কেবিন ব্লকে হলেও, অতিরিক্ত টাকা উপার্জনের জন্য বিকালে জরুরি বিভাগে ডিউটি করে থাকেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা (পি সি) আনসার কমান্ডার উজ্জ্বল ব্যাপারী রাত সাড়ে ৮ টার দিকে এই অসহায় রোগীটিকে ভর্তি করে দেন।

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, রোগীকে জিম্মি করে মোটা অংকের দাবি করা ট্রলিম‍্যান জাকির ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজের অধীনে কাজ করে। আমরা ট্রলিম‍্যানকে আটক করে শাহবাগ থানার কাছে সোপর্দ করেছি।

বিবার্তা/বুলবুল/এমজে