সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের সৈকত মিয়া নামে এক কম্পিউটার প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে বহিরাগতদের জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরির কাজে সহায়তা করার অভিযোগ এনে স্থানীয় চেয়ারম্যানের করা মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

১১ অক্টোবর, বুধবার দুপুর ১২টায় ইউনিয়নের গাছতলা বাজারের উত্তর পাশে ধর্মপাশা-মধ্যগর সড়কে ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সৈকত ওই ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে এবং পোস্ট অফিসের অধীনে একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারের প্রশিক্ষক।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, সৈকতের মা রহিমা বেগম, সাবেক ইউপি সদস্য আতিকুল ইসলাম, ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. মাসুদ রানা, স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল হক নয়ন।

চলতি বছরের ৪ এপ্রিল পাইকুরাটি ইউনিয়নের থানুর গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে আরিয়ান মাহমুদ ঋতু নামে একজনকে উদ্যোক্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সার্ভার জটিলতা ও জন্মনিবন্ধনের কাজের সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ইকবাল এবং ইউপি সচিব রুহুল আমিনের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড (হস্তান্তরযোগ্য নয়) উদ্যোক্তা ঋতূকে সরবরাহ করা হয়। তখন থেকে ঋতূ জন্ম নিবন্ধন এর কার্যক্রম সম্পন্ন করে আসছে। কিন্তু গত ১৪ সেপ্টেম্বর ইউপি সচিব রুহুল আমিন জানতে পারেন তাঁর এবং চেয়ারম্যানের আইডি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে উদ্যোক্তা বহিরাগতদের জন্ম নিবন্ধন করে আসছে।

ইউপি সচিব বিষয়টি ওই দিনই ই-মেইলে ইউএনওকে জানান। ইউএনও বিষয়টি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত করার জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন।

পরে ৩ অক্টোবর উপ-পরিচালক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ইউপি চেয়ারম্যান ঋতূ ও সৈকতের বিরুদ্ধে ধর্মপাশা থানায় মামলা করেন। মামলায় বলা হয়, ঋতু তার কাজের সুবিধার্থে সৈকতকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়। পরে তারা দুজনে (ঋতূ ও সৈকত) যৌথভাবে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে বহিরাগতদের ৫২টি জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করে।

কিন্তু সৈকত তার আইনজীবীকে জানিয়েছ, সে এ বিষয়ের সাথে জড়িত নয়। ঋতু তাকে নিয়োগ দেয়নি; বরং ঋতূর অনৈতিক কার্যকলাপের একটি অডিও রেকর্ড প্রকাশ করার ফলে তার বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে।

পাইকুরাটি ইউপি সচিব রুহুল আমিন বলেন, চেয়ারম্যানের কথায় উদ্যোক্তাকে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছি। বহিরাগতদের জন্ম নিবন্ধনের ব্যাপারে এই ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সচিব ও একজন গণমাধ্যমকর্মীর কাছ থেকে জেনেছি তাৎক্ষণিক উদ্যোক্তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলে সে দায় স্বীকার করে।

পাইকুরাটি ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ইকবাল বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালকের মৌখিক নির্দেশে মামলা করেছি।

বিবার্তা/শহীদুল/এমজে