ফের কর্মসূচি, শিক্ষা ক্যাডারের সংকট কাটবে কবে?
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৩, ২২:৩৬
ফের কর্মসূচি, শিক্ষা ক্যাডারের সংকট কাটবে কবে?
মহিউদ্দিন রাসেল
প্রিন্ট অ-অ+

ক্যাডার–বৈষম্য, পদোন্নতি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানসহ বিভিন্ন দাবিতে টানা ৩ দিন ‘সর্বাত্মক কর্মবিরতি’ কর্মসূচি পালন করেছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা।


১০ থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত টানা তিনদিন কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে শিক্ষকরা পাঠদান, পরীক্ষা গ্রহণ, সভায় অংশগ্রহণ ও দাফতরিক কাজ হতে বিরত ছিলেন। ফলে দেশের সরকারি কলেজগুলোতে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল।


এদিকে টানা ৩ দিনের এই কর্মবিরতি শেষ হলেও দাবির বিষয়ে কোন সুরাহা হয়নি। ফলে দাবি আদায়ে ফের দুইদিনের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন তারা। তবে কর্তৃপক্ষ এই সমস্যা সমাধানে কাজ চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে।



১২ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী ও মহাসচিব মো. শওকত হোসেন মোল্যার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ১৭ ও ১৯ অক্টোবর আবারও কর্মবিরতি কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। মাঝে ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষ্যে দিনটিকে কর্মবিরতির আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ন্যায্য দাবিতে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি ধারাবাহিক কর্মসূচি করে আসছে। গত ২ অক্টোবর প্রথম দফায় একদিনের কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল, যা পালিত হয়। এরপর ১০, ১১ ও ১২ অক্টোবর টানা তিনদিনের কর্মবিরতি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এ কারণে আগামী ১৭ ও ১৯ অক্টোবর দুদিনের কর্মবিরতি করবে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা।


এরআগে সোমবার, ৯ অক্টোবর বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ১০, ১১ ও ১২ অক্টোবর টানা তিনদিনের কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল।



বিজ্ঞপ্তির ঘোষণা অনুযায়ী, টানা তিনদিন দেশের সব সরকারি কলেজ, সরকারি আলিয়া মাদরাসা, সরকারি টিটি কলেজ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর, সব শিক্ষা বোর্ড, এনসিটিবি, নায়েম, ব্যানবেইসসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সব দফতর ও অধিদফতরে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা সর্বাত্মক কর্মবরতি পালন করেছেন। কর্মবিরতি চলাকালে ক্লাস, সবধরনের পরীক্ষা, শিক্ষা বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অধীন ভর্তি, ফরম পূরণ, প্রশিক্ষণ, কর্মশালাসহ দাফতরিক সব কর্মকাণ্ড বন্ধ রেখে অবস্থান কর্মসূচি করেছেন তারা।



এর আগে একই দাবিতে ২ অক্টোবর কর্মবিরতি পালন করেছিলেন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি তুলে ধরার পাশাপাশি কর্মসূচিও ঘোষণা করেছিল বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি।


তথ্য বিশ্লেষণে জানা যায়, বিসিএসের ১৬ থেকে ৩৫তম পর্যন্ত ১৯টি ব্যাচের সাত হাজারের বেশি কর্মকর্তা সব ধরনের যোগ্যতা অর্জন করলেও প্রাপ্য পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অথচ শিক্ষা ক্যাডারের শুরুর প্রভাষক পদ থেকে ধাপে ধাপে তাদের সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়ার কথা। সর্বশেষ ১৪ ও ১৫তম বিসিএসের বেশিরভাগ কর্মকর্তা অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। এরপর থেকেই লেগে আছে জট। যত দিন যাচ্ছে ততই সংকট বেড়েই চলেছে। এরমধ্যে প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতিযোগ্য ৩৫তম বিসিএস ব্যাচ পর্যন্ত ছিল প্রায় ২ হাজার ৫০০ জন। এর সঙ্গে ৩৬তম ব্যাচ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত পদোন্নতিযোগ্য হয়ে এখন এই সংখ্যা ৩ হাজার। আর সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে ২৭তম ব্যাচ পর্যন্ত পদোন্নতিযোগ্য ৩ হাজার শিক্ষক রয়েছেন। এ ছাড়া অধ্যাপক পদে পদোন্নতিযোগ্য ২০তম ব্যাচ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার জন।



এদিকে বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সহকারী অধ্যাপক পর্যায়ের ৬৯০ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে সহযোগী অধ্যাপক করেছে সরকার। দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর এই পদোন্নতি হলেও তা প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি বলে জানিয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি।



এরআগে বিসিএসের ১৬তম ব্যাচ থেকে ৩৫তম ব্যাচ পর্যন্ত ১৯টি ব্যাচের সাত হাজারের বেশি কর্মকর্তা সব যোগ্যতা অর্জন করেও বিভিন্ন স্তরে পদোন্নতি না হওয়ার ঘটনায় শিক্ষা সচিব সোলেমান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গত ৩১ আগস্টের মধ্যে পদোন্নতি দেয়ার দাবি জানিয়েছিল ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন ‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি’। পরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের এই দাবি পূরণ না হওয়ায় ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। প্রথমেই ২ অক্টোবর কর্মবিরতিতে যাওয়ার পর, দ্বিতীয় দফায় ১০ থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৩ দিন কর্মবিরতিতে যাওয়া হয়। এখন আবার ১৭ ও ১৯ অক্টোবর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।


এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বিবার্তাকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ নানান দাবি জানানো হচ্ছে। তবে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল কোনো ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। পরিকল্পিতভাবে শিক্ষা ক্যাডারের অস্তিত্ব সংকটে ফেলে দেয়া হয়েছে। তাই দেশের সরকারি কলেজে তিন দিনের জন্য সর্বাত্মক কর্মবিরতি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কোন সাড়া না পাওয়ায় আবারও দুইদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।


হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, পদোন্নতিতে জটিলতা, নতুন পদ সৃষ্টি না হওয়া, অর্জিত ছুটি না দেয়া, নতুন পে স্কেলের সমস্যা সমাধান না হওয়াসহ নানা ধরনের বৈষম্যের শিকার শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। দ্রুত এসব সমস্যা সমাধান করতে হবে। না হলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।


তিনি বলেন, ২০১৪ সালে ১২ হাজার ৪৪৪টি পদ সৃজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু, দীর্ঘ ৯ বছরেও এ পদগুলো সৃজন হয়নি। ফলে, দিন দিন বাড়ছে শিক্ষকদের নানা সংকট। অন্যান্য ক্যাডারে চাকরির ৫ বছর পূর্তিতে নবম গ্রেড থেকে ষষ্ঠ গ্রেডে পদোন্নতি দেয়া হলেও শিক্ষা ক্যাডারে তা দেয়া হচ্ছে না। অনেকেই একই পদে ৮ থেকে ১৩ বছর ধরে কর্মরত। পদোন্নতি না হওয়ায় অনেকে সামাজিকভাবে অমর্যাদাকর অবস্থায় পড়ছেন।


সমিতির মহাসচিব মো. শওকত হোসেন মোল্যা বিবার্তাকে বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষা ক্যাডার সৃষ্টি করা হলেও বিশেষায়িত পেশা হিসেবে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারকে গড়ে তোলা হয়নি। উল্টো এ পেশাকে গ্রাস করছে অনভিজ্ঞ অপেশাদার। শিক্ষা ক্যাডারকে অবকাশমুক্ত করা জরুরি। শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির গতি খুবই শ্লথ। এটাকে এখনই ঠিক করা উচিত।


১৬তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিব সহযোগী অধ্যাপক রেহেনা খাতুন বিবার্তাকে বলেন, শিক্ষা ক্যাডারের হতাশার কথা কী আর বলব? আমাদের ব্যাচের ৩৫৮ জন সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে এখনো পঞ্চম গ্রেডে রয়েছেন। এরমধ্যে অনেকে অধ্যাপক না হয়ে অবসরেও চলে গেছেন! এটা একজন বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের জন্য কতটা কষ্টের ও হতাশার, সেটা কেবল ভুক্তভোগী বলতেই পারবেন।


তিনি বলেন, শিক্ষা ক্যাডারের দ্রুত পদোন্নতি দেয়া না হলে, আমাদের ব্যাচের ৫৬ জন চলতি বছরের ডিসেম্বরে আর ১২৭ জন আগামী বছর অধ্যাপক না হয়ে অবসরে চলে যাবেন। এটা ভাবা যায়? এটা শুধু এক ব্যাচের কথা বললাম, আরো ১৯টি ব্যাচের সাত হাজারের বেশি শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা পদোন্নতি বঞ্চিত আছেন। কাজেই এই সংকট অতিদ্রুত সমাধান করা উচিত। তাহলে মানুষ গড়ার কারিগররা কাজে স্পৃহা পাবেন।


বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ২৫তম ব্যাচের সভাপতি মো. আব্দুল কাদের বিবার্তাকে বলেন, পদে পদে শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরতরা বঞ্চিত হচ্ছে। এই দায় কার? একই বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে বন্ধু-সহকর্মীরা কত উপরের গ্রেডে চলে যাচ্ছে। আর আমাদের কী হচ্ছে? কারো কারো তো অধ্যাপক হওয়ার আগে অবসরে যেতে হচ্ছে! এই পরিস্থিতি হলে মেধাবীরা ভবিষ্যতে এই পেশায় আসতে চাইবে কেন?


ক্যাডার সমিতির নেতারা বলছেন, শিক্ষা ক্যাডারের পদোন্নতিযোগ্য সকল কর্মকর্তার পদোন্নতি দিলে সরকারের বছরে অতিরিক্ত খরচ হবে ৮৮ লাখ টাকা। কারণ, দীর্ঘদিন পদোন্নতি আটকে থাকায় বেশির ভাগ কর্মকর্তার মূল বেতন এখন পরের পদোন্নতি গ্রেডের সমান বা বেশি হয়ে গেছে। পদোন্নতি দিলেও সরকারের ব্যয় তেমন বাড়বে না। এদিকে শিক্ষাবিদরা বলছেন, অবিলম্বে শিক্ষা ক্যাডারের এই সমস্যা দূর করে সুযোগ-সুবিধা আরও বৃদ্ধি করা উচিত।


এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বিবার্তাকে বলেন, এমনিতেই মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতা পেশা তেমন নিতে চায় না, এখন যদি এই সংকটগুলো সামনে আসে, তাহলে তারা আরও অনাগ্রহী হবে। এক্ষেত্রে মূল কথা হলো- শিক্ষকতার মূল্যায়নটা সামাজিকভাবে আমরা সেভাবে করতে পারেনি। শিক্ষকদের বেতন ভাতাও আমরা কম দেই। অন্যান্য সেক্টর থেকে এই সেক্টরে শিক্ষকদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও কম।


তিনি বলেন, আসলে সত্যিই বলতে, শিক্ষকতা পেশাকে সর্বোচ্চ সম্মানের পেশা করা উচিত ছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা এবং ব্যক্তিগতভাবেও তাদেরকে খুব মর্যাদা দিতেন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে। পরবর্তীতে আমরা শিক্ষকদের সেভাবে মর্যাদা দিতে পারিনি, যেটা আমাদেরই ব্যর্থতা। এটা থেকে উত্তরণের উপায় হচ্ছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়ানো এবং যারা এই পেশায় আসবে তাদেরকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা অর্থাৎ তাদের বেতন-ভাতা, পদোন্নতিসহ অন্যান্য সব সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।


শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বিবার্তাকে বলেন, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের চাকরিতে ক্যাডার বৈষম্য ও পদোন্নতি জটিলতা থাকা খুবই দুঃখজনক। এটা একদমই ঠিক না। একই ব্যাচে চাকরিতে প্রবেশ করে কেউ সুযোগ সুবিধা বেশি পাবে আর কেউ বঞ্চিত হবে এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। এক্ষেত্রে আমি মনে করি শিক্ষকদের জন্য অবশ্যই সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক উভয় ধরণের স্বীকৃতি ও সুযোগ-সুবিধা অবশ্যই দেওয়া উচিত।


নানা দাবিতে শিক্ষা ক্যাডারদের কর্মবিরতিতে যাওয়ার বিষয়ে অবগত করে মন্তব্য জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান বিবার্তাকে বলেন, এই সংকট কাটাতে আমরা কাজ করছি। খুব শীঘ্রই এসবের সমাধান করা হবে।


বিবার্তা/রাসেল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com