বিবার্তার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের ভাবনা
প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৩, ১৭:১৮
বিবার্তার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের ভাবনা
মহিউদ্দিন রাসেল
প্রিন্ট অ-অ+

একটি দেশের মূল চালিকা শক্তি একটি অবাধ ও সঠিক তথ্য। দেশের জনগণের কাছে যদি সঠিক তথ্য পৌঁছায়, তাহলে দেশ অবশ্যই সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। অন্যদিকে ভুল তথ্য যদি জনগণের কাছে পৌঁছে কিংবা গুজব রটে যায়, সেটি বিভ্রান্তি ছড়িয়ে নানা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে অনলাইন গণমাধ্যম বিবার্তা২৪ডটনেট সঠিক তথ্য প্রকাশের কাজটি দায়িত্বের সাথে করে আসছে। শুধু তাই নয়, গণমাধ্যমটির সাহসী সত্য উচ্চারণ এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে আপসহীন। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ধারণ করে দেশ মাতৃকা সম্পর্কে বিভিন্ন বস্তুনিষ্ঠ তথ্য পত্রিকাটিকে পাঠকপ্রিয় হতে ভূমিকা রেখেছে। গণমাধ্যমটির বড় বিশেষত্ব হলো, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং এদেশের স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে কখনো আপস করে না। দক্ষ সংবাদকর্মীদের নিয়ে সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা মেনে তথ্যসমৃদ্ধ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে বিবার্তা।


কথাগুলো বলেছেন, দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদরা। বিবার্তা২৪ডটনেটের ১ যুগপূর্তি উপলক্ষ্যে দেয়া শুভেচ্ছা বক্তব্যে তারা এসব কথা বলেন।


২০১১ সালের ২ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী বাণী ইয়াসমিন হাসি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে সম্পাদক হিসেবে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিবার্তা২৪ডটনেট প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর হাঁটি হাঁটি পা পা করে ১১ বছর অতিবাহিত করে এক যুগে পা দিয়েছে ‘সারাবেলা সব খবর’ স্লোগান ধারণ করা এই অনলাইন গণমাধ্যমটি।


প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমটিকে ঘিরে প্রত্যাশা জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিবার্তা দীর্ঘদিন যাবত গণমানুষের তথ্যের চাহিদার সাথে শিক্ষার চাহিদা, বিনোদন চাহিদাসহ আরো নানা চাহিদা পূরণের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আমি মনে করি, সাধারণ মানুষের চাহিদা পূরণ করাই সকল গণমাধ্যমের কাজ। বিবার্তার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমি আনন্দিত। আমি এ আনন্দঘন মুহূর্তে গণমাধ্যমটির সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আমি আশা করি, বিবার্তা যেভাবে ইতোপূর্বে মানুষের তথ্যের চাহিদা পূরণ করেছে, আগামীতেও আরো জোরাল ভূমিকা রাখবে, সেই প্রত্যাশা রইল।


তিনি বলেন, একটি দেশের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে সঠিক তথ্য। দেশের জনগণের কাছে যদি সঠিক তথ্য পৌঁছায়, তাহলে দেশ অবশ্যই সামনের দিকে এগোবে। অন্যদিকে, ভুল তথ্য যদি জনগণের কাছে পৌঁছায়, গুজব ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে সেটি অনেক বিভ্রান্তি ছড়িয়ে নানা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। আজকের তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে এর অপব্যবহারও হচ্ছে। আমি আশা করব এক্ষেত্রে বিবার্তাও বরাবরের মতো সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বিবার্তার এক যুগ পূর্তিতে আমি বিবার্তার সম্পাদকসহ এরসাথে জড়িত সকলকে নিরন্তর শুভেচ্ছা জানাই। একইসাথে অনলাইন গণমাধ্যমটির সাফল্য কামনা করি। আমি আশা করছি, তারা দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকে সচেতন থেকে নিজেদের কাজটি করে যাবে।


ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, বাংলাদেশের অনলাইনগুলোর মধ্যে বিবার্তা২৪ডটনেট অন্যতম। ইতোমধ্যে এই গণমাধ্যমটি ১১ বছর পেরিয়ে ১ যুগে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। এটা আমার জন্য আলাদা ভালো লাগার কারণ হচ্ছে, এর প্রতিষ্ঠার দিন আমি এর সাথে ছিলাম। তাছাড়া গণমাধ্যমটির সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসিও আমার সরাসরি ছাত্রী। সে খুবই পরিশ্রমী এবং একইসাথে তার লেখালেখিও ধারাল।


তিনি বলেন, একটি গণমাধ্যম পরিচালনা এবং সেটি টিকিয়ে রাখা সহজ কাজ নয়। আমি মনে করি, বিবার্তা যেভাবে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে ১১ বছর অতিক্রম করেছে, সামনেও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে আরো অনেক দূর যাবে। বিবার্তার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, বিবার্তার একযুগ পূর্তিতে এই অনলাইন পোর্টালটির সামগ্রিক মঙ্গল কামনা করছি। পত্রিকাটি অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও যেন এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে। একযুগ পূর্তিতে এটি আমার ব্যক্তিগত প্রত্যাশা। আর পাশাপাশি পত্রিকার সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম কর্মীদেরও উত্তরোত্তর মঙ্গল কামনা করি। তারা যেন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এই পত্রিকাটিকে দেশের মানুষের কাছে বস্তুনিষ্ঠ অনলাইন পোর্টাল হিসাবে উপস্থাপন করতে পারেন।


জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, অনলাইন গণমাধ্যম বিবার্তা সাহসিকতার সঙ্গে সত্য উচ্চারণ এবং বস্তুনিষ্ঠতায় ভীষণ মনোযোগী ছিল। বিবার্তার নেতৃত্বে যারা রয়েছে- একদিকে সাধারণ মানুষের প্রতি তাদের সংবেদনশীলতা কাজ করেছে, অন্যদিকে নানা বলয় থেকে যারা অন্যায্যতা দেখিয়েছে- তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর মতো সক্ষমতা বিবার্তা দেখিয়েছে। একইসাথে বিবার্তায় সাংবাদিকতায় সৃজনশীলতার বিষয়ও লক্ষ্যণীয়।


তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের ভাবধারার পক্ষে যে অবস্থান, সেখানে যে নিরপেক্ষ থাকার অবকাশ নেই, সেটি বিবার্তা স্পষ্ট করতে পেরেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশে যা কিছু হয়েছে তার জন্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, বাংলাদেশের পক্ষে হওয়া আবশ্যক। এই বিষয়টিও বিবার্তা স্পষ্ট করতে পেরেছে। এটি পক্ষপাতিত্ব নয়, বরং এটি রাষ্ট্র গঠন এবং আমাদের মানস গঠনে এই চিন্তারই প্রসার হওয়া প্রয়োজন।


ড. মশিউর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকা, বাংলাদেশের পক্ষে থাকাই হচ্ছে নাগরিক এবং সুশীল সমাজের আবশ্যিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। সেই দিক থেকেও বিবার্তা সমাজ ও রাষ্ট্রের পক্ষে, এমনকি গণমানুষের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। বিবার্তার এ যাত্রা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে এটি আমাদের সমাজ ও মানস গঠনে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, বিবার্তার ১ যুগে পদার্পণ উপলক্ষ্যে বিবার্তাকে অভিনন্দন জানাই। একইসাথে অনলাইন গণমাধ্যমটির সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি ও এতে কর্মরত সাংবাদিক এবং বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও অভিবাদন জানাই।


তিনি বলেন, বিবার্তার জন্য এটি একটি সংগ্রামী যাত্রা। এর পথচলা সহজ ছিল না। বিবার্তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে গণমাধ্যমটিকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে আমার। নীলক্ষেত ও পুরানা পল্টনে অফিস থাকাকালীন বিভিন্ন অনুষ্ঠান-সেমিনারে বিবার্তার সাথে যুক্ত থাকার সুযোগ হয়েছিল। আজকে ১১ বছর পেরিয়ে বিবার্তা এক যুগে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। সেটা বিবার্তার একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে এবং বিবার্তার সাংবাদিকতা চর্চার অনন্য কার্যক্রম অবজারভেশনে রাখার সুবাধে নিজেরও ভালোলাগা কাজ করছে। কঠিন একটি পথের মধ্য দিয়ে শুরু থেকে আজ বিবার্তা এ পর্যন্ত পৌঁছেছে।


অধ্যাপক মফিজুর রহমান বলেন, বিবার্তার সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তাকে আমি খুব নিকট থেকে দেখেছি। তিনি খুবই পরিশ্রমী, নিবেদিত হয়ে এটি প্রতিষ্ঠা থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত যুক্ত রয়েছেন। সাংবাদিকতার উৎকর্ষ সাধনে ও সংবাদ সম্পাদনার প্রতি তার নিরলস প্রচেষ্টা লক্ষণীয়। বাণী ইয়াসমিন হাসি সবকিছু দক্ষ হাতে পরিচালনা করে বিবার্তাকে একটি ভালো অবস্থায় উন্নীত করেছেন। এজন্য বিবার্তা সম্পাদককে আমি অভিনন্দন জানাই।


বিবার্তার সাংবাদিকতার কার্যক্রম নিয়ে তিনি বলেন, তথ্যের সত্যতা যাচাইপূর্বক যে সাংবাদিকতা, তাই হলো সাংবাদিকতার প্রাণ। এক্ষেত্রে বিবার্তা যথাযথ দক্ষ সংবাদ কর্মীদের মাধ্যমে সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা মেনে তথ্যসমৃদ্ধ সাংবাদিকতা করে আসছে। এছাড়া বিবার্তা উইম্যান রাইটস, শিশু অধিকার, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার, গণতন্ত্র ও সেক্যুলার রাজনীতি এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি সপক্ষে সাংবাদিকতার মাধ্যমে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সামগ্রিক বিষয়গুলো বিবেচনায় বিবার্তা তাদের সাংবাদিকতাকে ভবিষ্যতে আরও শাণিত করবে, সেই প্রত্যাশা করি। জন্মদিনে শুভেচ্ছা বিবার্তাকে।


এক যুগপূর্তি উপলক্ষ্যে বিবার্তার কাছে প্রত্যাশার কথা জানিয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এই অধ্যাপক বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে নানা ধরণের গুজব-অপপ্রচার ছড়ানোর পায়তারা করা হতে পারে। এক্ষেত্রে আমি বিবার্তাকে বলব, তারা নিজেদের দক্ষ কর্মীবাহিনী দিয়ে গুজব-অপপ্রচার মোকাবিলায় যেন কাজ করেন। আমার বিশ্বাস অনলাইন গণমাধ্যমটি এক্ষেত্রেও জোরালো ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।


বিবার্তা/রাসেল/রোমেল/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com