আমাদের রাজপথে শিশুরা ভিক্ষা করছে - এটা দেখা খুবই অমানবিক একটা ব্যাপার। তাছাড়া তাদের ভিক্ষায় নামিয়ে তাদের অধিকারও খর্ব করা হচ্ছে। একটা সমাজ কতোটা পিছিয়ে, শিশু ভিখারীরা তার একটা সূচক। আমরা তো সবসময় মনে করি, কেবল গরীব দেশেই শিশুরা ভিক্ষা করে। আর এখন সউদি আরবেই সেটা দেখা যাচ্ছে। কেন?
আমি জানি, সকল সউদিই ধনাঢ্য নয়, বরং অনেক সউদি পরিবারকেই দারিদ্র্যের সঙ্গে রীতিমতো লড়াই করতে হচ্ছে। যে কোনো একটা দরিদ্র এলাকা ধরে হেঁটে গেলেই এটা যে-কারো চোখে পড়বে। এসব এলাকা এতোটাই অনুন্নত যে এখানে জীবনধারনের মৌলিকসুযোগ-সুবিধাগুলোই অনুপস্থিত। এ কঠিন দারিদ্র্যই কোনো-কোনো পরিবারকে বাধ্য করেছে দু'টো পয়সার জন্য তাদের সন্তানদের ভিক্ষায় নামাতে। আমি মনে করি, যেসব পরিবার তাদের শিশু সন্তানদের ভিক্ষায় নামিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনা উচিৎ।
চার বছর বয়সী একটি শিশুর কথা আমি কখনোই ভুলতে পারবো না। সে একটি পার্কে ফুল বিক্রি করছিল। তার পায়ে কোনো জুতা-স্যান্ডেল ছিল না, পরণের জামা ছিল মলিন ও ছেঁড়া। তাকে দেখে আমার বুক ভেঙ্গে যায়। আমি তখনই সিকিউরিটি গার্ডের কাছে জানতে চাই, ''এই যে শিশুরা পার্কে ভিক্ষা করছে, এদের বের করে দিচ্ছ না কেন?'' গার্ড জবাব দেয়, ''ওদের বের করে দেয়ার কথা কেউ তো আমাদের বলেনি!''
ওই শিশুটি এবং ওর মতো আর কোনো নিষ্পাপ শিশুর ঠিকানা কখনোই রাজপথ হতে পারে না। এদের জন্য থাকা উচিৎ আরামপ্রদ বাড়ি, যে বাড়িতে থাকবে তার পরিবার এবং শিশুটি বা শিশুরা ভোগ করবে শিশু হিসেবে তার প্রাপ্য সব অধিকার।
এসব ভিখারি শিশুর বেশিরভাগই স্কুলে যায় না। ওদের দেখাশোনা করার জন্য কেউ নেই কেন? কোথায় ওদের বাবা-মা? সমাজকল্যাণ সংগঠনগুলোই বা কোথায়?
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আমাদের দেশে অনেক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হতে দেখছি। সেখানে এসব প্রয়োজনের ইস্যুগুলোও আলোচনায় আসা উচিৎ। শিশুদের সুরক্ষায় এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে আমাদের আরো ভালো কিছু আইন দরকার। আমাদের সকলের, বিশেষ করে শিশুর মা-বাবাদের উপলব্ধি করা উচিৎ যে, শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যৎ এবং সে ভবিষ্যৎ যাতে ভালো হয় সে চেষ্টাই আমাদের করা উচিৎ।
সউদি গেজেট থেকে অনুবাদ : হুমায়ুন সাদেক চৌধুরী
বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]