শিরোনাম
সাক্ষাতকার
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়: উপাচার্য
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ২১:৪৩
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়: উপাচার্য
মহিউদ্দিন রাসেল
প্রিন্ট অ-অ+

দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান। বর্তমানে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এই অধ্যাপক ইতোপূর্বে সফলতার সাথে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।


এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। পরে উপাচার্য হিসেবে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পান। ২০২১ সালের ৩০ মে পরবর্তী চার বছরের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়। একই বছর ৩১ মে গাজীপুর মূল ক্যাম্পাসে যোগদানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উপাচার্যের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ড. মশিউর রহমান।


সম্প্রতি তিনি মুখোমুখি হন জাতীয় অনলাইন নিউজপোর্টাল বিবার্তা ২৪ এর সাথে। একান্ত আলাপচারিতায় জানান আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণসহ নানান বিষয়ে তার পরিকল্পনার কথা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ধানমন্ডির নগর কার্যালয়ে তার সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন বিবার্তার নিজস্ব প্রতিবেদক মহিউদ্দিন রাসেল।


বিবার্তা: আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা কেমন থাকবে?


অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ করার একটি বৃহৎ ক্ষেত্র আছে- সেটি হলো ৩৫ লক্ষ শিক্ষার্থী নিয়ে কাজ করার সুযোগ, যাদের ২২৫৭টি কলেজে পাঠদান করানো হচ্ছে। এই তরুণ জনগোষ্ঠী যারা আগামী দিনে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত হবে। সেই দক্ষ জনশক্তি গড়তে আমরা কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছি। স্মার্ট বাংলাদেশে সবাই স্মার্ট সিটিজেনে হবে। সেখানে মূলত স্মার্ট বাংলাদেশকে আমি কোনভাবে দেখবো? সেটি একটি বিষয়। একজন স্মার্ট সিটিজেনের মৌলিক কোন বিষয়গুলো থাকা দরকার, সেটি প্রথম লক্ষ্য। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি- শিক্ষার্থীর মানস কাঠামোতে গভীর দেশপ্রেম তৈরি হওয়া স্মার্ট সিটিজেনের প্রথম কাজ। একজন স্মার্ট সিটিজেন তিনি, যিনি কায়মনোবাক্যে দেশপ্রেমিক।


আমার মনে হয়, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসের যে পাঠ, তা আমরা অবশ্য পাঠ্য করেছি বহুপূর্বে। ওই অবশ্য পাঠের মধ্য দিয়ে একজন শিক্ষার্থী ইতিহাস সচেতন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, তাকে একইসঙ্গে বিশ্ব নাগরিক হতে হবে। স্মার্ট সিটিজেন শুধু স্থানীয় বিষয় নয়, জাতীয় বিষয় নয়; বরং দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সে একজন দক্ষ জনশক্তি হবে উঠবে। তখন তার বিশ্ব পরিমণ্ডলে যে যোগাযোগ হবে, সেটি প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। এক্ষেত্রে তার তথ্য প্রযুক্তির বিষয়ক জ্ঞান ও বিজ্ঞানমনস্কতা থাকা দরকার। আর বিজ্ঞানমনস্ক হওয়ার জন্য তার আইসিটির দক্ষতা দরকার। আমরা কিন্তু অতি সম্প্রতি সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই বিষয়ে আরো বহু আগে থেকে অন্যান্য সকল প্রাইভেট, পাবলিক ইউনিভার্সিটির চেয়ে প্রথম দিকেই ছিল। মূলত আমরাই এর পাইওনিয়ার। আর এটিই সত্য।


আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস পাঠ্য করেছি, আইসিটিকেও অবশ্য পাঠ্য করেছি। অর্থাৎ এবারে যারা ভর্তি হয়েছে, দ্বিতীয় বর্ষে তারা আইসিটিকে অবশ্য পাঠ্য হিসেবে পাবে। আমরা আসলে এটাকে প্রথম বর্ষেই চেয়েছিলাম। কিন্তু কিছু সীমাবদ্ধতা তো থাকেই। কারণ, এর জন্য আগে আমার শিক্ষক তৈরি করতে হবে। কিন্তু এতো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া এখন সরকারের পক্ষে সম্ভব না। তারপরেও আমাদের বিদ্যমান যে ব্যবস্থা, তার মধ্যে কলেজ শিক্ষকদের প্রথমে আইসিটিতে দক্ষ করে তুলতে চাই।


বিবার্তা: শিক্ষকদের কীভাবে দক্ষ করে তোলা হবে?


অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান: একটা প্রশিক্ষণে আমরা অন্তত ৫ হাজার শিক্ষককে যুক্ত করবো। এটা কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় হবে। প্রশিক্ষণের পরেই আমরা তাদেরকে দিয়ে শিক্ষার্থীদের আইসিটি কোর্স পড়ানোর কর্মপরিকল্পনা আছে। আমার স্টুডেন্ট যখন স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস পড়বে, তারপরে যখন আইসিটি বিষয়ক কোর্স করবে, এরপরই আমরা তাকে সফট স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্স করাব থার্ড ইয়ারে। অর্থাৎ বিষয়ভিত্তিক পাঠ গ্রহণের পাশাপাশি ইতিহাস সচেতনতা, আইসিটি জ্ঞান, সফট স্কিলের যে জায়গাটি, সেটি তৈরি হবে। এর পাশাপাশি বিষয়ভিত্তিক কোর্সগুলোসহ আমরা যে শর্ট কোর্সগুলো করেছি, সব শর্ট কোর্সগুলো এম্বেডেড হচ্ছে কলা, সামাজিক বিজ্ঞান ও বিজ্ঞান এর মধ্যে। আর এসবের মধ্য দিয়ে একজন শিক্ষার্থী দক্ষ হয়ে গড়ে উঠবে। আমরা একজন স্টুডেন্টকে তৈরি করার জন্য বিষয়ভিত্তিক দক্ষতার পাশাপাশি স্কিলড হওয়ার কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছি। আর আমাদের কারিকুলামে এর সবকিছু করা আছে।


বিবার্তা: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কী কী সংকট দেখেছেন?


অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান: ভালো শিক্ষার্থী তৈরি করার পূর্বশর্ত হচ্ছে ভালো শিক্ষক। ভালো শিক্ষক তৈরি একদিনে হয় না, এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার বিষয় এবং সেই জায়গাতে আমাদের আরো কিছু কাজ করার প্রয়োজন আছে। বর্তমান বাস্তবতায় হঠাৎ করে অনেক শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে এটা করা কঠিন।


বিবার্তা: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যানের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেটার অগ্রগতি নিয়ে যদি একটু বলতেন?


অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান: আমরা অনেক শিক্ষককে কীভাবে একসাথে প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে পারি, সেটা নিয়ে একটা শিক্ষক প্রশিক্ষণ মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করতে যাচ্ছি। আপনি জেনে খুশি হবেন যে, ইতোমধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক অ্যান্ড ফিজিক্যাল মাস্টার প্ল্যানিংয়ের কাজ শেষ হয়ে গেছে, আইসিটি মাস্টারপ্ল্যানের কাজ আমাদের শেষ- আমরা সেটির ইম্পলিমেন্টেশন করতে যাচ্ছি। এর বাহিরে আমরা এলএমএস তৈরির একটা জায়গায় আছি, সেখানে একটা ডিপিপি কাজ চলছে। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ যেটা, সেটা হলো- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই কিন্তু শিক্ষক প্রশিক্ষণ রেখেছে। আমরা একটা মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় সকল শিক্ষক কী ভাবে প্রশিক্ষণের আওতায় আসবে, সেটি নিয়ে কাজ করছি। শুধু এই না যে, বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ বরং বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মেন্টাল হেলথ, সোশ্যাল রিসার্চ রয়েছে। যেমন ইন্টার ডিসিপ্লিন, জিআইএস এগুলোর প্রশিক্ষণ আমরা শুরু করেছি। জিআইএস এর জন্য আমরা কয়েকটা ল্যাব পেয়েছি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব ছিল, সেখানে জিওগ্রাফির টিচার এনে ইতোমধ্যে জিআইএসের অনেকগুলো ট্রেনিং শেষ করেছি। মেন্টাল হেলথের ছয়টা প্রোগ্রাম আমরা ইতোমধ্যে অনলাইনে করেছি। এখন আমাদের একটা স্টাডি চলছে, শিক্ষার্থীদের মেন্টাল হেলথ ওয়েলবিংটা নিশ্চিত করা, পাশাপাশি ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং করা। আমরা নেক্সট ইয়ারই অর্থাৎ ২০২৪ সালে সারাদেশে অনেকগুলো কলেজে এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবো। এক্ষেত্রে আমরা চাইলেও সবগুলো কলেজ কাভার করতে পারবো না।


আমরা যে মডেলটি নিয়ে ভাবছি, সেটি হলো- ২০২৪ সালে সারাবছর প্রায় প্রতিমাসে একটি করে ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং অ্যান্ড মেন্টাল ওয়েলবিংয়ের একটা ডে লং প্রোগ্রাম করবো। ওই প্রোগ্রামের পুরোটার মধ্যে ছোট ছোট ইম্পর্ট্যান্ট ক্লিপগুলা তৈরি হবে, যেটা আমরা বাকি শিক্ষার্থীদের জন্য ফেসবুক, ইউটিউব ও ওয়েবসাইটে দিয়ে দেবো। আর আমরা টিচারদের অনুরোধ করবো, এগুলো যেন ক্লাস রুমে দেখানো হয়। এভাবে ৩৫ লক্ষ শিক্ষার্থীর মেন্টাল ওয়েলবিং, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিংয়ের একটা জায়গা এবং এর সঙ্গে কীভাবে বিষয় ভিত্তিক শিক্ষার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হওয়া যায় সেই বিষয়েও একটা পদক্ষেপ থাকবে।


আমাদের একটু আস্থার অভাব আছে। এটা স্বীকার করতেই হবে যে, অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তুলনায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিছুটা কম মেধাবী। তবে তারা অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে অভ্যস্ত৷ আর এটি এখন মোটামুটি প্রমাণিত, চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও সে কিন্তু ডিপ্রেশড কম হয়। যে কারণে আমরা যতটা না তার মেন্টাল হেলথের ট্রিটমেন্টের দিকে চিন্তা করছি, তার তুলনায় মেন্টাল হেলথের ওয়েলবিংটাকে এনে তাকে ক্যারিয়ার কাউন্সেলিংয়ে নিয়ে যেতে চাই। কেননা অলরেডি তাদের এক ধরণের কনফিডেন্স আছে, তাকে শুধু পথটা ধরিয়ে দিতে হবে।


বিবার্তা: সফট স্কিলের কাজগুলো তো বড় প্রজেক্ট। এগুলোর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে আপনাদের পরিকল্পনা কী?


অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান: হ্যাঁ, এটা ঠিক যে, ৩৫ লক্ষ শিক্ষার্থীকে আলাদা নার্সিং করে একটা জায়গায় নিতে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু আমি মনে করি এবং এটা প্রায়শই বলি যে, আমরা চাইলেই সমাজের বৈষম্য একদিনে কমাতে পারবো না। আমাদের অসমতা আছে, নানা রকমের প্রতিবন্ধকতা আছে। তারপরেও কিছু বিষয় তো আমাদের মানতে হবে। আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছি। এর আগের ধাপটা ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ। এরও আগের বঙ্গবন্ধুকন্যার ধাপগুলো ভাবুন। তিনি বাংলাদেশে আসলেন এবং বললেন- ভাত এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা। উনি কিন্তু সেই সময়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বলেন নাই। বলেছেন ভাত এবং ভোটের অধিকারের প্রতিষ্ঠা। তারপরে বলেছেন, সামরিক শাসনের অবসান, গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারের কথা- অর্থাৎ ধাপে ধাপে তিনি কাজগুলো করেছেন।


তিনি একটা পর্যায়ে শান্তিচুক্তিসহ আমাদের ইন্টার্নাল যে প্রব্লেমগুলি ছিল, সেগুলো নিয়ে কাজ করেছেন। আমাদের ইন্টার্নাল একটা প্রব্লেম ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের। উনি এটাকে এড্রেস করলেন একদম ক্ষমতার প্রথমদিকে। দেখুন কত সুন্দরভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি হয়ে গেল। কিন্তু শ্রীলঙ্কায় যে কনফ্লিক্ট, সেটা এখন পর্যন্ত সমাধান করতে পারে নাই। অথচ তারা শতভাগ শিক্ষার হার বাড়াতে পেরেছে। এই জায়গায় যে সমাধান বঙ্গবন্ধুকন্যা করেছেন, এটা নিঃসন্দেহে একটা বড় রকমের কাজ। তারপর আপনি দেখুন, সমুদ্র সীমা বিজয়, ছিটমহল সমস্যা সমাধান- এই সবগুলো কিন্তু ঘটেছে শান্তিপূর্ণ উপায়ে। এমনকি পদ্মাসেতু করা। বিশ্বব্যাংকের সাথে ঝগড়াঝাঁটিতে যায় নাই, জাস্ট বলেছে- করবেন না ভালো কথা। আমি আমার অর্থায়নে এটা করবো। ভেরি সফট অ্যাপ্রোচ। পরে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, এটা করা সম্ভব এবং করেছেন। আজকে সারা পৃথিবী কী দেখছে, কোভিড পরিস্থিতিতেও- রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ করছে, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট চলছে। তারা যেখানে মাদক এবং আর্মসের ব্যবসা করছেন আর আমরা বসে পণ্য দিচ্ছি অন্য একজনকে খাওয়ানোর জন্য। বঙ্গবন্ধুকন্যা এমনই একজন, তিনি আরেকজনকে বলছেন যে, এতো কোটি মানুষকে যদি খাওয়ানো যায়, আরো কয়েক লক্ষ লোককে কী খাওয়াতে পারবো না! এটা হচ্ছে একটা ফিলোসোফি। পলিটিক্যাল ফিলোসোফি, যেটা তিনি এখানে ডেভেলপ করেছেন। আর এটা আমরা কারো কাছ থেকে ধার করিনি। ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু যখন এড্রেস করেছেন, নট দ্যাট উনি একটা নাটকীয়তা করতে এসেছেন বরং উনি ওই জায়গাটায় ওই অর্গানিক সলিডারিটি তৈরি করে বাংলাদেশকে তৈরি করেছেন। পরবর্তীতে তাঁর কন্যার নেতৃত্বে এই দেশ এগিয়ে গেছে। এখন আমাদের সফট স্কিল তথা স্মার্ট বাংলাদেশের যে কম্পোনেন্ট সেটার জন্য আগে আমাদের পেট্রিয়ট সিটিজেন লাগবে।


বিবার্তা: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট সিটিজেন কেমন হওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?


অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান: স্মার্ট সিটিজেন মানে এই নয় যে, খুব কম্পিউটার চালালো। তার প্রথম কাজটি হবে, সে পেট্রিয়ট কিনা? এছাড়া তাকে আইসিটি সফট স্কিল দিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার টেকনিক জানতে হবে। আধুনিক বিষয়ে জ্ঞানটা কী? সেটা জানতে হবে। পরবর্তী ২৫/৩০ বছরে পৃথিবীতে কী হবে, আমরা কেউ জানি না। তারপরেও বিষয়টা কী করে শিখতে হয়- একজন শিক্ষার্থীকে তা জানতে হবে। এই জায়গায় আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা চাইলেই লার্জ নাম্বারকে একেবারে এক জায়গায় আনতে পারি না। এক্ষেত্রে ডিজিটাল বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে যে ইকুইটি তৈরি হয়েছে, সেখানে অনেকের সাথে অনেকের আর্থিক ব্যবধান থাকবে। কিন্তু ইন্টারনেট এক্সেসের বেলায় বাংলাদেশের একজন প্রত্যন্ত প্রান্তিক অঞ্চলের শিক্ষার্থীও সমান এক্সেস পাচ্ছে। আমি মনে করি ডিজিটাল বাংলাদেশে সব থেকে বড় যে সুবিধা, একটা ইকুইটি এনেছে ইন্টারনেট এক্সেসে। হ্যাঁ- কারো এমবি বেশি কিংবা কম থাকতে পারে। কিন্তু বিশিষ্টজনেরা যে জার্নাল পড়তে পারবে, সাধারণ মানুষও একই জার্নালে এক্সেস পাবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ মাত্র একটা স্লোগান না, এটা একটা ইকুইটির সমাজ তৈরি করেছে। আগামীতেও আমরা যথার্থ স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করতে পারবো। এক্ষেত্রে স্মার্ট সিটিজেন তৈরি হবে মূলত দেশ প্রেমিক, আধুনিক, প্রযুক্তি নির্ভর, বিজ্ঞানমনস্ক, সচেতন, মুক্তমনকে ভিত্তি করে।


বিবার্তা: বিবার্তাকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।


অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান: আপনাকেও ধন্যবাদ। বিবার্তার জন্য শুভকামনা।


বিবার্তা/রাসেল/রোমেল/এমজে

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com