শিরোনাম
‘ভারত থেকে বিজেপিকে উৎখাত করবো’
প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০১৭, ১৯:৪০
‘ভারত থেকে বিজেপিকে উৎখাত করবো’
কলকাতা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

আগামী সাধারণ নির্বাচনেই ভারত থেকে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপিকে উৎখাতের ডাক দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। শুক্রবার কলকাতার ধর্মতলায় একুশে জুলাইয়ের শহীদ মঞ্চ থেকে এ উৎখাতের ডাক দেন।


মমতা বলেন, ‘বিজেপিকে রাজনৈতিকভাবে ভারত থেকে ধুলিস্যাৎ করবো-এটা আমাদের চ্যালেঞ্জ। পশ্চিমবঙ্গকে আপনারা সিপিআইএম-এর হাত থেকে মুক্ত করেছেন। তাই পশ্চিমবঙ্গ যদি সিপিআইএম’কে মুক্ত করতে পারে, তবে ভারতকে ওই দাঙ্গাবাজদের (বিজেপি) হাত থেকে মুক্ত করতে হবে’।


দলীয় কর্মীদের একত্রিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মমতা বলেন, ‘মনে রাখবেন সামনে আমাদের বড় লড়াই, আর এই লড়াইয়ে দিল্লিকে বোল্ড আউট করতে হবে। একটা করে ছক্কা মারবেন আর বোল্ড আউট করে ওদের মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেবেন। যাতে খেলার মাঠে আর নামতে সাহস না পায়’।


মমতা সাফ জানিয়ে দেন ‘আগামী ২০১৯ সালে বিজেপিকে বাংলা থেকে তাড়াবো। একটা আসনও বাংলা থেকে নিতে দেবো না। বিজেপিকে হারাতে যা যা করার দরকার আমাদের করতে হবে’।


তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি পদে মীরা কুমারকে ১৮টা বিজেপি বিরোধী দল জোট বেঁধে সমর্থন দিয়েছিল। আগামী দিন এই জোট আরও বড় হবে। আগামী লোকসভার নির্বাচনে কংগ্রেস, সিপিআইএম, তৃণমূল কংগ্রেস, আপ, ডিএমকে সহ প্রতিটি দলই তাদের মতো করে আলাদা করে লড়বে। আর মোদি বাবু তখন ৩০ শতাংশ ভোটও পাবেন না। যারা ভাবছেন ২০১৯ টা পকেটে ভরে রেখেছেন তাদের কাছে কাজটা অত সহজ নয়। ততদিনে ওই পকেটটা ফুটো হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই তা শুরু হতে শুরু করেছে। বিজেপিকে দেশ ছাড়া করতে আগামী ৯ আগষ্ট থেকে ‘বিজেপি ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের ডাকও দিয়েছেন মমতা।


কেন্দ্রীয় সরকারের নোট বাতিল, দেশের আর্থিক বৃদ্ধি থেকে শুরু করে সারদা, নারদা, সিবিআই, জিএসটি, পররাষ্ট্র নীতিসহ একাধিক ইস্যুতে এদিন কেন্দ্রকে বিঁধেছেন মমতা। নরেন্দ্র মোদির পররাষ্ট্র নীতি নিয়েও অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।


কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলেই প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়েছে বলে ফের অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘আজকে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ-সব দেশের সঙ্গে মোদি সম্পর্ক খারাপ করে দিয়েছেন’। তাঁর প্রশ্ন ‘প্রধানমন্ত্রী কেন কূটনৈতিকভাবে সম্পর্কটাকে ভাল করতে পারছেন না। কাশ্মীরে পাকিস্তানের সঙ্গে একটা সীমান্ত রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে আবার সিকেমের সঙ্গে চীনের সীমান্ত রয়েছে’। মমতা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের কাজ হল রাজ্যগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করা। বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করা। কিন্তু দেশের সমস্যা সমাধান করতে না পেরে এখন বিদেশে গিয়ে দেশ বিক্রি করে দিয়ে চলে আসছে।


বিজেপির বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাটে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর অভিযোগও তুলেছেন মমতা। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে রাজ্যে দাঙ্গা ছড়ানোর অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, ‘...কয়েকটা গুন্ডা মিলে দেশ চালাচ্ছে। খালি জ্ঞান দিয়ে যায়, কোন কাজ করে না। তাদের একটাই কাজ দাঙ্গা বাধানো। বাংলাদেশের কুমিল্লায় একটা ঘটনা ঘটেছে সেটা বাংলায় বলে প্রচার চালানো হচ্ছে, ভোজপুরী সিনেমার একটা ছবিকে এবং গুজরাটের দাঙ্গাকে বাংলার বলে রটানো হচ্ছে’।


মমতা ছাড়াও এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের বিধায়ক, সাংসদ, রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যরা। উপস্থিত ছিল টালিগঞ্জের এক ঝাঁক শিল্পীরাও।


উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই কলকাতার ধর্মতলায় কংগ্রেসের তৎকালীন যুবনেত্রী মমতা ব্যানার্জির জনসভাকে ঘিরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ওই এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল। সেই ঘটনায় পুলিশের গুলিতে ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মী মারা গিয়েছিলেন। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছর এই দিনটিকে শহীদ দিবসের মর্যাদা দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পালন করা হয়।


বিবার্তা/ডিডি/পলাশ


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com