![](http://www.bbarta24.net/templates/bbarta/images/main-logo.png)
সুইডেনের এক ভদ্রমহিলা প্রথমবারের মতো এসেছেন ঢাকায়। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্র দেখে তিনি মুগ্ধ। তার ধারণা ছিল, বাংলাদেশ একটা গরিব দেশ। কিন্তু বাংলাদেশে তিন দিন থেকে তার ভুল ভেঙেছে।
তার কথা শুনে এবং সার্বিক আয়োজন দেখে আমার গত কয়েকদিন ধরেই মনে হচ্ছে, আমরা একটা বড় সুযোগ মিস করলাম।
অভিবাসন নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (জিএফএমডি) নবম সম্মেলন হচ্ছে ঢাকায়। এক দশক আগে জাতিসংঘের উদ্যোগে এই সম্মেলন অনুষ্ঠান শুরু। বেলজিয়াম, ফিলিপাইন, গ্রীস, মেক্সিকো, সুইজারল্যান্ড, মরিশাস, সুইডেন ও তুরস্কের পর ঢাকায় এই সম্মেলন হচ্ছে।
আমি শুরু থেকেই এ সম্মেলন কাভার করছি। ৮ ডিসেম্বর সিভিল সোসাইটি ডেজের মধ্যে দিয়ে সম্মেলন শুরু। ১০ ডিসেম্বর থেকে চলছে সরকারি পর্যায়ের আলোচনা। ১২ ডিসম্বর শেষ। এতে যোগ দিতে বিশ্বের ১২৫ টি দেশ থেকে প্রায় ৭০০ বিদেশি প্রতিনিধি এসেছেন বাংলাদেশে, যার মধ্যে মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী সচিব এবং জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানরাও রয়েছেন।
আমার মনে হয়েছে, ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানের হামলার পর সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যখন সংকটে পড়েছিল, যখন অনেক বিদেশি বাংলাদেশে আসতে ভয় পেয়ে সফর বাতিল করেছে, তখন জিএফএমডিতে যোগ দিতে এতো বিপুলসংখ্যক বিদেশির বাংলাদেশে আসা সব দিক থেকে বাংলাদেশের বড় অর্জন। তবে সেই অর্জনের প্রচার-প্রচারণায় আয়োজকরা বড় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন।
দেশবাসী তো পরের কথা, এই ঢাকা শহরের মানুষ কী জানে, ঢাকায় এতো বড় একটা আন্তর্জাতিক সম্মেলন হচ্ছে? আমার মনে হয়েছে, রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম থেকে শুরু করে দেশের সব বেসরকারি টিভিতে জিএফএমডি সম্মেলনের প্রমো যেতে পারতো। গত কয়েকদিনে এই সম্মেলনে আসা যতো বিদেশির সাথে কথা বলেছি, সবাই বলেছেন বাংলাদেশের এমন আয়োজন দেখে তারা অভিভূত।
পররাষ্ট্রসচিবও বলেছেন, বাংলাদেশে আসার আগে বিদেশিদের মধ্যে নানা প্রশ্ন থাকলেও আসার পর তারা মুগ্ধ। আমার মনে হয়েছে, সব গণমাধ্যমে এসব বিদেশির সাক্ষাতকার নেয়া যেতো। জিএফডিকে ঘিরে শক্তিশালী একটি প্রচার কমিটি হতে পারতো, যারা এই কাজগুলো করতে পারতেন। কারণ স্বাধীনতার ৪৫ বছরে এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এতো বড় আয়োজন করলো। অথচ পুরো বিষয়টায় কোনো এক জুজুর ভয়ে প্রচারণায় রাখঢাক করা হয়েছে। অথচ এই সম্মেলনকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং হতে পারতো। আমার মনে হয়, এখনো সেই সুযোগ আছে।
প্রচারের এই দিকটা বাদ দিলে পুরো আয়োজনই চমৎকার ছিলো। আশা করি, বিজয়ের মাসে এই সম্মেলনে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে যারা এসেছেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে তারা সবাই নতুন বার্তা পাবেন। এই বার্তা গৌরবের। অহঙ্কারের। এই বার্তা সারা পৃথিবীকে জানিয়ে দেয়, বাংলাদেশ মানে দ্রুত উন্নতির পথে ছোটা এক দেশ, যারা একদিন আকাশ ছোঁবে।
শরীফুল হাসানের ফেসবুক থেকে
বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]