
টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়াঞ্চলের মাঠ এখন সোনালী স্বপ্নে ভরপুর। এ বছর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে হলুদের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষকরা জানাচ্ছেন—প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এবার তারা মুখে হাসি ফোটাতে পারবেন।
হলুদ চাষ অন্য ফসলের তুলনায় অধিক লাভজনক। অল্প জমিতে কম খরচে বেশি উৎপাদন হয়। পাশাপাশি গরু-ছাগল কিংবা পোকা-মাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে। ফলে ফসল হানির আশঙ্কাও কম। কৃষকরা জানান, পরিত্যক্ত জমিতে হলুদ সবচেয়ে ভাল হয়।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মধুপুর উপজেলার প্রায় ৮০০ হেক্টর জমিতে হলুদের আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার মেট্রিক টন। গত বছর আবাদ হয়েছিল ৭৬০ হেক্টর জমিতে, উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ৯ হাজার মেট্রিক টন। আশা করা হচ্ছে, এ বছর প্রায় ৫৮ কোটি টাকার হলুদ বিক্রি হবে।
হলুদ শুধু মসলা হিসেবেই নয়, প্রসাধনী, রং শিল্পসহ নানান কাজে ব্যবহৃত হয়। প্রতিদিনের রান্নায় অপরিহার্য এ ফসলের চাহিদা সারা বছরই থাকে।
মির্জাবাড়ি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণবাড়ি গ্রামের হলুদ চাষি রেজাউল করিম, আক্তার হোসেন ও নজরুল ইসলাম জানান, এ বছরও তারা দশ বিঘা জমিতে হলুদ রোপণ করেছেন। প্রতি বিঘায় প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হলেও ৭০ থেকে ৮০ মণ হলুদ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। বাজার দর অনুকূলে থাকলে প্রতি বিঘায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হবে বলে আশা করছেন তারা।
ভবানীটিকি গ্রামের বাপ্পি জানান, হলুদ রোপণের পর তা পরিপক্ব হতে এক বছর সময় লাগে। তবে নিয়মিত পরিচর্যার ঝামেলা নেই বললেই চলে। সার ও কীটনাশকও ব্যবহার করতে হয় অল্প। প্রতি বিঘা জমিতে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হলেও লাভ হয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, জয়নাতলী, ভুটিয়া, অরণখোলা, বেরিবাইদ, কুড়াগাছা, মমিনপুর, মির্জাবাড়ি ও গাছাবাড়ি এলাকায় প্রচুর পরিমাণে হলুদের আবাদ হয়েছে। হলুদ বছরব্যাপী ফসল হওয়ায় কৃষকরা সাথী ফসল হিসেবেও এর আবাদ করেন। তাছাড়া এ ফসলে তেমন কোনো রোগবালাই নেই। ফলে কৃষকরা ঝুঁকিমুক্তভাবে ভালো লাভবান হচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, রোপণ থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত কৃষি অফিসের পরামর্শ দেওয়া হয় নিয়মিত। প্রতিটি ইউনিয়নে উপসহকারী কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে কৃষকদের সহায়তা করছেন।
বিবার্তা/বাবু/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]