
মিউনিখের মাঠে খেলা হলেই নাকি নতুন কোনো দল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জেতে। অলিখিত সেই নিয়মই যেন ধরে রাখল ২০২৫। একপেশে এক ম্যাচে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতল পিএসজি। সেইসঙ্গে নিশ্চিত হলো তাদের ট্রেবল শিরোপাও।
একসময় লিওনেল মেসি, নেইমার এবং এমবাপেকে নিয়ে যা করতে পারেনি পিএসজি, আজ সেটাই তারা করেছে ডেম্বেলে, হাকিমি, ভিতিনহা, কাভারাৎসখেলিয়া কিংবা দিজেরে দুয়েদের নিয়ে। পুরো ম্যাচে ইন্টার মিলান প্রথম গোলমুখে শট নেয় ৭৪ মিনিটে। বিপরীতে পিএসজি একের পর এক কার্যকরী কাউন্টার অ্যাটাক থেকে ততক্ষণে আদায় করেছে ৪ গোল।
দলকে পুরো আসরেই বল দখলে রেখে আক্রমণে যাওয়ার পাঠ দিয়েছিলেন কোচ লুইস এনরিকে। ফাইনালেও তাই হলো। শুরু থেকেই পিএসজির টানা আক্রমণের সামনে নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছিল ইন্টারমিলান। শুরুর ১৫ মিনিটে পিএসজি বল দখল ছিল ৬৩ শতাংশের বেশি। সুযোগই তারাই তৈরি করেছিল/ প্রথম ১০ মিনিটে অন্তত দুইবার দূরপাল্লার শট নিয়েছিল লা প্যারিসিয়ানরা। আর ফলাফল আসে এরপরেই।
১২ মিনিটে ভিতিনহার ডিফেন্সচেরা পাস ডি-বক্সে খুঁজে নেয় দুয়েকে। দারুণ দক্ষতায় বল রিসিভ করেন এই উইঙ্গার। নিজে ছিলেন আনমার্কড। এরপরেই নিঃস্বার্থ পাস দিলেন আশরাফ হাকিমিকে। আলতো টাচে নিজের সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে গোল করেন হাকিমি। আরও একবার নিজেদের ডিফেন্সে ম্যান মার্কিংয়ে ভুলের কারণে গোল হজম করল ইতালিয়ান ক্লাবটি।
এর মিনিট আটেক পর ফের গোল পিএসজির। আগের গোলের যোগানদাতা দুয়ে এবার নিজেই করলেন গোল। ওসমান ডেম্বেলের সঙ্গে বোঝাপড়ায় দারুণ এক আক্রমণ সাজায় দল। এবারেও নিজেদের বাজে মার্কিংয়ের খেসারত দিয়েছে ইন্টার। ফাঁকায় থাকা দুয়ে খানিক সময় নিয়েই শট নিয়েছিলেন। বল ডিমার্কোর পায়ে লেগে কাছের পোস্টে গোল। দলের স্কোরলাইন করেন ২-০।
দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর সেটপিসে ভাল সুযোগ এসেছিল ইন্টারের জন্য। তবে এর কোনোটিই কাজে লাগেনি। দুইদফায় বল তারা রাখতে পারেনি পোস্টে। এমনকি পিএসজিও দারুণ আক্রমণ শানিয়ে ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা চালায়। যদিও কাঙ্ক্ষিত গোল আর আসেনি। ২-০ গোলের লিড নিয়েই পিএসজি ফেরে টানেলে।
বিরতির পর দুই দলেরই খেলা শুরু হয়েছিল কিছুটা ধীরগতিতে। ইন্টার মিলান সমতা ফেরানোর লক্ষ্য নিয়ে বারবারই আক্রমণে উঠতে চেয়েছে। তবে প্যারিসিয়ানদের শক্ত রক্ষণের সামনে তারা ছিল বিবর্ণ। বিপরীতে পিএসজি উপহার দিয়েছে একের পর এক কার্যকরী কাউন্টার অ্যাটাক। যার প্রথম সুফল মেলে ৬৩ মিনিটে।
ওসমান ডেম্বেলের ব্যাকহিল থেকে বল পেয়ে চমৎকার এক মাপা পাস দিয়েছিলেন ভিতিনহা। ফার্স্ট টাচ শটেই আসে গোল। ইয়ান সোমার পারেননি কাছের পোস্টের শট আটকাতে। ৩-০ গোলের লিড পিএসজির। ঘড়ির কাঁটায় ঠিক ঠিক ১০ মিনিট পর আরেকটা গোল পেয়ে যায় পিএসজি। এবারও অ্যাসিস্টে ডেম্বেলে। কাউন্টার অ্যাটাকে সহজ ফিনিশ কাভিচা কাভারাৎসখেলিয়ার।
ব্র্যাডলি বারকোলা ৮১ মিনিটে অবিশ্বাস্য এক সুযোগ মিস না করলে ব্যবধান আরও বাড়তে পারতো পিএসজির। তাতে অবশ্য আক্ষেপ থাকছে না। ৮৬ মিনিটে বারকোলার পাস থেকেই সেনি মায়ুলুর গোলে ইতিহাস গড়ে ফেলে তারা। ৫-০ গোলের জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় তুলে নেয় প্যারিসিয়ানরা। ইউরোপিয়ান ফুটবলে নতুন রাজার নাম এখন প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]