শিরোনাম
‘ডেঞ্জার জোন’ মগনামা: এমপির শেল্টারে বেপরোয়া হাইব্রিডরা
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২১, ০৮:২১
‘ডেঞ্জার জোন’ মগনামা: এমপির শেল্টারে বেপরোয়া হাইব্রিডরা
সোহেল আহমদ
প্রিন্ট অ-অ+

কক্সবাজারের পেকুয়ার উপকূলীয় ইউনিয়ন ‘মগনামা’। এক সময় ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ শান্তিতে বসবাস করলেও বর্তমানে এই এলাকাটি খুন, চাঁদাবাজি, জমি দখল, ইয়াবা ব্যবসা আর সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মহড়ায় আতংকের জনপদে পরিণত হয়েছে। এখানকার অবস্থা এতই জটিল যে, বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া অনেক হাইব্রিড নেতাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কিংবা মামলার ফাঁদে পড়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী এলাকা ছাড়া।


স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ- উপজেলা বিএনপির আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া মগনামা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম ও তার অনুসারীরা ইউনিয়নের শান্ত পরিবেশকে বিষিয়ে তুলেছেন। তিনি মিথ্যা মামলা দিয়ে আ.লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের বিভিন্নভাবে ফাঁসিয়ে এলাকা ছাড়া করেছেন। আর তার ছায়া হয়ে দাঁড়িয়েছেন কক্সবাজার-১ আসনের সাংসদ জাফর আলম।


স্থানীয় নেতাদের দাবি, পেকুয়ার তৃণমূল আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার চেয়ে চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী, ইয়াবা ব্যবসায়ী ও বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগের যোগ দেয়াদের প্রতি বেশিই মনোযোগী এমপি জাফর। তার প্রশ্রয়ে পেকুয়ায় আ.লীগ নিধন চালিয়ে যাচ্ছে এসব হাইব্রিডরা। নির্যাতন, মিথ্যা মামলা ও হাইব্রিডদের দাপটে চরম ক্ষতির মুখে রয়েছেন মগনামা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। বিশেষ করে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অব্যাহত সাজানো মামলা হওয়ায় ক্লান্ত তারা। দল ক্ষমতায় থাকলেও আদালত চত্বরেই দিন কাটছে তাদের।


তৃণমূল নেতা-কর্মীরা জানান, হাইব্রিডদের প্রধান্য হ্রাস ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সাগরে ঝাঁপ দেয়া ছাড়া তাদের কোনো উপায় থাকবে না।গত সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্টিত হওয়া চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ছিলেন আলমগীর চৌধুরী। এ নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন এমপি জাফর আলমের ভাতিজা জিয়াবুল হক। ওই সময় নির্বাচনী প্রচারণায় এমপি ‘প্রভাব খাটাচ্ছেন’ এমন অভিযোগ জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দেন নৌকার প্রার্থী। নির্বাচনে জাফর আলমের নিজ কেন্দ্র পালাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৌকার ভরাডুবি হয়। নৌকার প্রার্থী আলমগীরের চেয়ে ১৬৯১ ভোট বেশি পান বিদ্রোহী প্রার্থী জিয়াবুল।


সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের একজন আবু ছৈয়দ। পেকুয়া, চকরিয়া, বাশখালী, কুতুবদিয়া ও লোহাগাড়া থানায় তার বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনে অন্তত ৩১টি মামলা রয়েছে। আলোচিত এই সন্ত্রাসীর সঙ্গেও ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে এমপি জাফরের। প্রকাশ্যে না মিশলেও ঘরোয়া পরিবেশে প্রায় নিয়মিত আড্ডা দেন তারা। এমপি জাফর আলম ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমের শেল্টারে পেকুয়ার মগনামা কেন্দ্রীক আস্তানা গড়ে তুলেছেন তিনি। আবু ছৈয়দের মাধ্যমেই পেকুয়া-চকরিয়ার অন্ধকার জগৎ নিয়ন্ত্রণে রাখেন জাফর-ওয়াসিমরা।



পেকুয়া উপজেলার পূর্ব জালিয়াকাটার দিনমজুর মৃত নন্না মিয়ার ছেলে মো. শওকত। অভিযোগ আছে মগনামা, উজানটিয়া ও রাজাখালী ইউনিয়নের চিংড়ি পোনা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে শওকত। এমনকি তার বিরুদ্ধে মগনামা-কুতুবদিয়ার সাগরপথ দিয়ে ইয়াবা পাচারের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কিন্তু অদৃশ্য কারণে প্রশাসনের ধরাছোয়ার বাইরে শওকত।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পেকুয়া-চকরিয়ার এমপি জাফর আলমের সান্নিধ্য থাকায় কেউ তার দিকে আঙুল তুলতেও ভয় পায়। একটি ছবিতে দেখা যায় এমপি জাফর আলমের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন শওকত। ছবিটি ফেসবুকে শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘গুরুর সাথে শিষ্য’। স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা তাকে ‌‘কালো টাকা’ ইনকামের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন। যার কারণে তাদের কাছে তৃণমূলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের চেয়ে তার গুরুত্বই বেশি।


জানা গেছে, একসময়ের উপজেলা বিএনপির আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম এখন আওয়ামী লীগ নেতা। বিএনপিতে থাকাকালীন হত্যা ও ধর্ষণচেষ্টাসহ একাধিক মামলার আসামি ছিলেন ওয়াসিম।তিনি যুবদল নেতা আলী আকবরকে দিয়ে মগনামা নিয়ন্ত্রণ করেন। আর তার ওপর ছায়া হয়ে আছেন এমপি জাফল আলম। ২০১৮ সালে ফুল দিয়ে বিতর্কিত এসব ব্যাক্তিদের বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে নিয়ে আসেন এমপি জাফর আলম।


অভিযোগ রয়েছে- বিএনপির মনোনয়নে চেয়ারম্যান থাকাকালীন ওয়াসিমকে সমর্থন করতেন জাফর। তার প্রমাণও পেয়েছে বিবার্তা। স্থানীয় আ.লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের অভিযোগ, মামলার চাপ কমাতে রং বদলে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন ওয়াসিম। আর এখন উল্টো এমপির সাথে ‘আর্থিক সম্পর্কের’ প্রভাব খাটিয়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিধনে নেমেছেন তিনি। আর এসব ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার নাম ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাদের।


চলতি বছরের ২ মে রাত ৯টার দিকে মগনামার ফুলতলা স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় একটি দোকানে বসা ছিলেন ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন। তাকে গুলির পর এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সেই হত্যাকান্ডে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়।


আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, চেয়ারম্যান ওয়াসিমের ও জয়নালের ব্যবসায়ীক সম্পর্ক ছিলো। বেশ কয়েকটি মামলায় তারা দু’জনই আসামি। এবারের ইউপি নির্বাচনে নেীকা প্রতীকে প্রার্থী হতে চান ওয়াসিম। তাই আগেভাগেই শুরু করেন সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের দমন। লেনদেন নিয়ে সমস্যা হওয়ায় ওয়াসিম বাহিনীর অন্তর্কোন্দলে জয়নাল নিহত হলেও হত্যাকান্ডে উদ্দেশ্য মূলকভাবে তার প্ররোচনায় আসামি করা হয় সরকার দলীয় ২২ নেতা-কর্মীকে।


এ বিষয়ে মগনামা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সোলতান মোহাম্মদ রিপন বিবার্তাকে বলেন, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে খুন হওয়া জয়নাল হত্যা মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল আজিমকে। ঘটনার সময় আমি দেড় কিলোমিটার দূরে থাকলেও আমাকে ৮ নম্বর আসামি করা হয়। মামলার ২ নম্বর আসামি ইউনুছ চৌধুরী ও আমি আগামী ইউনিয়ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী। ওয়াসিম আমাদের কিভাবে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেয়া যায় সে কাজ করছে।


গত ২৪ আগস্ট মগনামা ব্যাঙখোয়াল ঘোনা থেকে মাছ লুটের ঘটনায় ওয়াসিমের ছোট ভাই এনায়েত উল্লাহকে গণপিটুনি দেয় ঘেরের প্রহরীরা। এ ঘটনায় ২৫ আগস্ট রাতে তার আরেক ছোট ভাই জুনায়েত ইসরাক চৌধুরী বাবু বাদি হয়ে ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয় পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মমতাজুল ইসলামকে। তিনি বিবার্তাকে বলেন, আমি ওই ঘটনার সময়ে রাজনৈতিক কাজে ঢাকায় ছিলাম। এলাকায় না থেকেও পৃথক দুটি মামলায় আমাকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আমার দুই ভাতিজাকেও আসামি করা হয়েছে।


২০১৮ সালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় চেয়ারম্যান ওয়াসিমের অপকর্মে সমর্থন দেয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। সভার কাগজপত্র ঘেটে দেখা গেছে, জেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভায় জাফর আলমের বক্তব্যেই এসব তথ্যের প্রমাণ মিলেছে। স্থানীয়রা জানান, ২০১৮ সালে এস আলম গ্রুপ ও সাবমেরিন স্টেশনের জন্য লিজ নেয়া জমির একক নিয়ন্ত্রণ নিতে নিজের ক্ষমতা প্রদর্শন শুরু করেন ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াসিম। নেপথ্যে থেকে তার সমস্ত অপকর্মের শেল্টার দিতেন তৎকালীন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম।


জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৩ জানুয়ারি প্রতিপক্ষকে দুর্বল করতে মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইউনুছের উপর হামলা চালায় ওয়াসিম বাহিনী। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় চেয়ারম্যান ইউনুছকে হত্যাচেষ্টার বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। সভায় প্রকাশ্যে ওয়াসিমের পক্ষাবলম্বন করে বক্তব্য রাখেন তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম। আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভার নির্ধারিত বক্তব্যে জাফর আলম বলেন, ইউনুছ একজন সন্ত্রাসী। জমি দখলসহ নানা সন্ত্রাসী কাজে জড়িত। এ কারণে লবণ মাঠের দখল নিয়ে ১৩ জানুয়ারি ইউনুছ ও তার পরিবারের উপর হামলা করা হয়েছে।


২০১৬ সালের জুলাইয়ে মগনামা ইউনিয়নের শরতঘোনা এলাকার এক নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ ওঠে ওয়াসিমের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করে ওই নারী। একই বছরের অক্টোবরে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আবুল কাসেমকে অস্ত্র ও ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠে ওয়াসিমের বিরুদ্ধে। ওই সময় -এর প্রতিবাদে পোস্টারিংও করে মগনামা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।



বিবার্তার হাতে আসা পেকুয়া থানায় দায়ের হওয়া নয়টি মামলার নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এসব মামলার পাঁচটির ঘটনাস্থল মগনামার ফুলতলা স্টেশন এলাকা। হত্যাচেষ্টা, ধর্ষণচেষ্টা ও হামলাসহ এসব মামলার আসামি একসময়ের বিএনপি নেতা ওয়াসিম, যুবদল নেতা আলী আকবর ও খুন হওয়া যুবদল নেতা জয়নাল আবেদীন। এসব মামলার মধ্যে চারটির প্রধান আসামি চেয়ারম্যান ওয়াসিম। এসব মামলায় ওয়াসিমের সাথে আলী আকবর দু'টি ও জয়নাল আবেদীন একটি মামলার আসামি।


এছাড়া এসব মামলার তিনটিতে প্রধান আসামি ছিলেন জয়নাল আবেদীন এবং তার সাথে প্রতিটি মামলার আসামির তালিকায় নাম রয়েছে আলী আকবরের। বাকি দুইটি মামলার প্রধান আসামি আলী আকবর এবং তার সাথে আসামি হিসেবে রয়েছেন জয়নাল আবেদীন। ২০১৫ সালে থেকে পেকুয়া থানায় দায়ের করা এসব মামলার আটটির আসামিরা বিএনপিতে থাকাকালীন সময়ে দায়ের করা হয়েছে। আর একটি মামলা হয়েছে আওয়ামী লীগের যোগ দেয়ার পর। ওয়াসিমের হাত ধরেই আওয়ামী লীগের নাম লিখিয়েছিলেন জয়নাল ও আলী আকবর।


স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, এসব মামলা থেকে নিষ্পত্তি পেতে ও সরকারদলের সুযোগ নিতে এমপি জাফর আলমের শেল্টারে দল পাল্টে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন তারা। গত ১৪ আগস্ট জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে চেয়ারম্যান ওয়াসিম ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা ছিনতাই ও হামলার অভিযোগ জানিয়ে মামলার আবেদন করেন সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মমতাজুল ইসলাম। আবেদনে তিনি জানান, থানায় আবেদন নিয়ে গেলেও তা রাখেনি পুলিশ।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বিবার্তাকে বলেন, আমি আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক। আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সকল এমপি, সকল জনপ্রতিনিধি, দলের নেতাদের সাথে আমার দাফতরিক যোগাযোগ আছে। কেউ যদি কোনো অপকর্মে আমার নাম ব্যবহার করে সেটা একটা অপরাধ। আমার নাম ব্যবহার করতেই পারে যেহেতু আমি দলের একটা পদে আছি। এখন দেখতে হবে এই অবৈধ কাজের জন্য আমি কাউকে সমর্থন দিচ্ছি কি-না।


সন্ত্রাসী, ইয়াবা বয়বসায়ীদের শেল্টার দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম বিবার্তাকে বলেন, বাংলাদেশে যেকোনো বিষয় নিয়ে প্রচার, অপপ্রচার আছে। সন্ত্রাসীদের সাথে আমার কোনো প্রয়োজন নেই। আমি কসম খেয়ে বলছি তাদেরকে (আবু ছৈয়দ ও শওকত) চিনি না। একদিন মগনামাতে গেছি, তারা বললো আমরা একটা ছবি তুলবো। এই দু'জনের ছবি দেখেও সন্দেহ করছি। তাদের আমি চিনি না কিন্তু আমার কাঁধে হাত দিয়ে ছবি তুলেছে।


তিনি বলেন, ওয়াসিমের আত্মীয় স্বজনরা সবাই আওয়ামী লীগ। তার বাবা-মা, মামারা আওয়ামী লীগ করে। সে হানিফ ভাই, কাদের ভাইয়ের মিটিংয়েও গেছে। ওয়াসিম আওয়ামী লীগে যোগ দিলেও তাকে কিন্ত আমরা কোনো পদ-পদবি দেইনি। তাকে প্রাথমিকভাবে ওয়ার্ডের সদস্যপদ দেয়া হয়েছে। পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরোধিতা করার প্রশ্নই উঠে না উল্লেখ করে জাফর আলম বলেন, আমি ও আমার পরিবার নৌকায় ভোট দিয়েছি। আমার কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থী ৬০০ ভোট পেয়েছে। আমি বিপক্ষে কাজ করলে এটা কিভাবে সম্ভব হলো?


মগনামা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম বিবার্তাকে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে কি-না আপনি এসে তদন্ত করে দেখেন। বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন স্বীকার করে ওয়াসিম বলেন, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেবো কি-না এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। এই বলে তিনি কল কেটে দেন।


বিবার্তা/সোহেল/গমেজ/এমবি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com