শিরোনাম
ভুয়া মালিক সাজিয়ে জমি আত্মসাতে এমপি জাফর আলম! (পর্ব-১)
প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০২১, ১১:৫০
ভুয়া মালিক সাজিয়ে জমি আত্মসাতে এমপি জাফর আলম! (পর্ব-১)
সোহেল আহমদ
প্রিন্ট অ-অ+

কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম ও তার পরিবারের সদস্যেদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে জমি আত্মসাত চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। নিঃস্বত্ব (মালিকানাহীন) একাধিক ব্যক্তিকে জমির মালিক বানিয়ে পেকুয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে জমি রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন চকরিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম। আর এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি নানামুখী বিপাকে পড়েছেন আওয়ামী পরিবারের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাও। দলে অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে নিয়ে তাদের জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণের কাজও করাচ্ছেন জাফর আলম।


ভুক্তভোগীরা জানান, সংসদ সদস্য হওয়ার আগে জমি-জমা দখলে না গেলেও নির্বাচিত হওয়ার পর রূপ বদলাতে থাকেন জাফর আলম, এখন তিনি আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে চলছেন। পেকুয়া উপজেলার পেকুয়া মৌজায় ২০২০ সালে এক মাসের ব্যবধানে ৬টি দলিলে নিঃস্বত্বদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে সংসদ সদস্য নিজে ছাড়াও তার মেয়ে এবং নিকটাত্মীয়দের নামে প্রায় ১ একর জমির মালিক বনে গেছেন।


ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, জাফর আলম যে ব্যক্তিদের কাছ থেকে জমির মালিকানা নিয়েছেন এসব জমি তাদের পূর্বসূরীরা সম্পূর্ণ স্বত্ব ত্যাগ করে ১৯৬৪ সালে চট্টগ্রাম মহকুমা ডিসির নিকট সরকার বরাবরে হস্তান্তর (রেজিস্ট্রেশন) করেন। সে সময়ে আরএস খতিয়ানে বেশ কয়েকজন মালিক ছিলেন। তার মধ্যে কয়েকজন ১৯৬৪ সালে তাদের অংশ সরকার বরাবরে বিক্রি করেন। এরপর একই জমি তাদের উত্তরসূরীদের তথ্য গোপন করে রেজিস্ট্রি করেন জাফর আলম। আর অনিয়ম করে নিঃস্বত্বদের ভুয়া খতিয়ানের মালিক করেছেন তিনি।


অন্যদিকে কিছু মালিক সে সময়ে আরএস খতিয়ানের জমি বিক্রি করেননি এবং পরবর্তীতে বিএসও করেননি। ২০১৪ সালে মার্চে এসব জমির ভোগ দখলে থাকা ৫০ মালিক বিএস ৭৯২ নম্বর খতিয়ানের অপ্রত্যাহারযোগ্য আম-মোক্তারনামামূলে ফরিদুল গংকে হস্তান্তর করেন। আম-মোক্তারনামার এ তালিকায় জাফর আলমের নামও ছিলো। পরে আম-মোক্তারনামার শর্ত ভঙ্গ করে নিঃস্বত্বদের স্বাক্ষর নিয়ে দলিল সৃষ্টি করে এসব জমি কিনে নিয়েছেন জাফর। এখন এমপি জাফর ফরিদুল আলম গংয়ের জায়গা জবর-দখলের চেষ্টা করছেন। এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ায় গুম ও মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।


বিরোধীয় খতিয়ানের জমির কাগজাদি আইনজীবীরা পর্যালোচনা করে দেখেছেন, জাফর আলম ও তার আত্মীয়দের নামে ক্রয় করা এসব জমির মালিক নিঃস্বত্ব। এসব জমি বিক্রি করার আইনি কোনো অধিকারই তাদের নেই। আর আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রিযুক্ত আম-মোক্তারনামামূলে হস্তান্তরসহ যাবতীয় কাজ সম্পাদনের জন্য আম-মোক্তার নিয়োগ করার পর আইনত উক্ত আম-মোক্তারনামা কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কার্যকারিতা বলবৎ থাকে। এবং তা বলবৎ থাকাবস্থায় পরবর্তীতে নতুন কোনো দলীল সৃজিত হলে তা অকার্যকর ও নিজে নিজেই বাতিল দলিল হিসেবে গণ্য হয়। এছাড়া আইনত মামলা চলমান থাকলে কোনো জমি ক্রয়, বিক্রয় ও হস্তান্তর নিষিদ্ধ।


অথচ মামলা চলাকালীন এসব জমি নিজের ও আত্মীয়-স্বজনের নামে দাবি করে কক্সবাজারের পেকুয়ার কবির আহমদ চৌংবাজারে নিউ মার্কেট নির্মাণে তোড়জোর শুরু করেছেন সংসদ সদস্য জাফর আলম। ওই দলিলের ভিত্তিতে চালাচ্ছেন নির্মাণকাজও। জমির জবরদখল ঠেকাতে ২০১৫ সালে কক্সবাজারের যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে মামলা করেছে আরএস মূলে মালিক দাবিকারী পক্ষ। যার নং-১২৪/১৫।


জমির কাগজাদি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম, মেহের আলী ও মনছুর আলীকে ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর ১৮৭৯ নম্বর দলিলে পেকুয়া উপজেলার পেকুয়া মৌজার বিরোধীয় বিএস ৭৯২ খতিয়ানের ৪৬৩১ দাগ থেকে ১৫ দশমিক ৯০ শতক জমি লিখে দেন মমতাজ বেগম গং। এই জমির কাগজাদি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৪ সালের ২৪ মার্চ রেজিস্ট্রিযুক্ত আম-মোক্তারনামামূলে ফরিদুল আলম গংকে এই জমি হস্তান্তর করেন পেকুয়ার পূর্ব বাইম্যাখালী গ্রামের মৃত ছৈয়দ আহমদের স্ত্রী মমতাজ বেগম। এর আগে এই খতিয়ানের জমি ১৯৬৪ সালে ২৪ সেপ্টেম্বর মৃত ছৈয়দ আহমদ সম্পূর্ণ স্বত্ব ত্যাগ করে চট্টগ্রাম মহকুমা ডিসির নিকট সরকার বরাবরে হস্তান্তর করেছেন। আইনানুযায়ী এই জমি বিক্রির তার কোনো এখতিয়ার নেই।


২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর বিরোধীয় বিএস ৭৯২ খতিয়ানের ৩৭ শতক জমি জাফর আলমের নিকট বিক্রি করেন আনছার উদ্দিন গং। এর মধ্যে ৪৬৩১ দাগের ১৪ শতক এবং ৪৬৩৩ দাগের ২৩ শতক জমি। কিন্তু ১৯৬৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর একই খতিয়ানের মালিক আব্দুল আলী প্রকাশ আবদুল বারীর ওয়ারিশ ১৬৯৮ কবলামূলে এবং হাবিবুর রহমান, কবির আহমদ ও মকবুল আলীর ওয়ারিশ ১৬৯৩ নম্বর কবলামূলে মহকুমা ডিসির নিকট সরকার বরাবরে হস্তান্তর করেছেন। আইন অনুসারে এই জমি বিক্রির অধিকার নেই আনছার উদ্দিন গং-এর।


জাফর আলমের মেয়ে তানিয়া আফরিন। ২০২০ সাালের ১০ নভেম্বর ১৯৮৮ নম্বর দলিলে বিরোধীয় বিএস ৭৯২ নম্বর খতিয়ানের ৪৬৩৩ দাগের ৬ শতক জমি মিনার রাইস মিলের পক্ষে তানিয়া আফরিন গং-এর কাছে বিক্রি করেন জাকের হোছাইন চেীধুরী। এই জমির কাগজ অনুযায়ী, দলিলে ৪৬৩১ দাগ লিপি না থাকায় দলিলের গ্রহীতাগণ ৪৬৩১ দাগের জমির দাবি করার সুযোগ নেই।


বিএস ৭৯২ নম্বর খতিয়ানের মালিক মুছা আলী ও সাইর বিবি পেঠান আলীর ওয়ারিশ করম আলী গং ১৬৯৪ ও ১৬৯৬ নম্বর দলিলে এবং গোলাম ছোবহান, আজিজুর রহমান ও মকবুল আলীর ওয়ারিশ ১৬৯৩ দলিলমূলে ১৯৬৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ৪৬৩১ দাগে তাদের প্রাপ্ত জমি সম্পূর্ণ স্বত্ব ডিসি বরাবরে হস্তান্তর করে দেন। সেই জমির মালিক দাবি করে আবদুর রহমান গং পেকুয়া মেীজার বিরোধীয় বিএস ৪৬৩১ দাগের ৬ দশমিক ৪৬ শতক জমি ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর এমপি জাফর আলমের মেয়ে তানিয়া আফরিন গং এর কাছে। এই দাগের জমি আগে সরকার বরাবরে হস্তান্তর করায় আবদুর রহমান গং জমি বিক্রির অধিকার হারান।


পেকুয়া উপজেলার পেকুয়া মৌজাপেঠান আলীর ওয়ারিশ ১৯৬৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ১৬৯৪ এবং মৃত মকবলি আলীর ওয়ারিশ ১৬৮৩ কবলামূলে প্রাপ্ত জমি সম্পূর্ণ স্বত্ব চট্টগ্রাম মহকুমা ডিসি বরাবরে হস্তান্তর করে দেন। সেই জমির মালিকানা দাবি করা হেলাল উদ্দিনের কাছ থেকে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবরে মৃত লাল মোহাম্মদের ছেলে সংসদ সদস্য জাফর আলম জমি কিনে নেন। অথচ বিএস দাগ ৪৬৩১, ৪৬৩৩ ও ৪৬৩৪-এর জমি বিক্রির অধিকারই নেই হেলাল উদ্দিনের।


পেকুয়ার পূর্ব বাইম্যাখালী গ্রামের আব্দুর রহিম বাদশা। তিনি তার কাছে থাকা একই খতিয়ানের সাকল্যে থাকা জমি অর্পণ করার পর ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর ১৯১৯ নম্বর দলিলে জাফর আলম এর কাছে হস্তান্তর করেন। কিন্তু এর আগে ২০১৪ সালের ২৪ মার্চ মাসে রেজিস্ট্রার্ড আম-মোক্তারনামায় তিনি জমি অন্যপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন। আইন মতে, যার কারণে জমির গ্রহীতা বা পরবতী ক্রেতারা কোনো জমি পাবে না। অভিযোগ আছে, এরপর জমি নিজের দখলে নিতে এমপি জাফর আলম প্রভাব খাটিয়ে বাদশার স্বাক্ষর আদায় করে নেন।


চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা কামরুল হাসান চৌধুরী। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে পৈত্রিকভাবে পাওয়া ৬ একর ৯ শতক জমি রয়েছে। ওই জমি বর্গা দিয়ে চাষবাস করে আসছিলেন তিনি। এই জমি জবর দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন জাফর আলম এমপি’র সহধর্মীনী শাহেদা বেগম ও পেকুয়া সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা মেহের আলী। গত ৯ আগস্ট বাঁশখালী উপজেলার ছোট ছনুয়ার বাসিন্দা মো: হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে তার জমির ভূয়া মালিক বানিয়ে চকরিয়া সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে জমি রেজিষ্ট্রি সম্পাদন করেন।


এরপর গত ৯ সেপ্টেম্বর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত, কক্সবাজার-এ ক্রিমিনাল ল এমেন্ডম্যান্ট এ্যাক্ট এর ৪ ধারা অনুযায়ী এই নালিশী মামলা দায়ের করেন তিনি। যার পিটিশন নং-১৫/২০২০। পরে ১০ সেপ্টেম্বর আদালতের বিচারক নালিশী দরখাস্তটি আমলে নিয়ে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে অভিযোগ তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নিদের্শ প্রদান করেন।


মামলার বাদি পেকুয়া উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নিঃস্বত্ববান ব্যক্তিদের কাছ থেকে জমি রেজিস্ট্রি নিয়েছেন জাফর আলম। বিরোধীয় জমির রূপ ও শ্রেণী পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে। এর প্রেক্ষিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ও লোকাল ইনভেস্টিগেশনসহ ৫টি সম্পূরক পিটিশন বিচারিক আদালতে দাখিল করা হয়েছে।


তিনি বলেন, ২০১৪ সালে ফরিদুল আলম গং এসব জমি আমাদের অনুকূলে রেজিস্ট্রি আম-মোক্তারনামা সম্পাদন করে দেন। কথা ছিলো জমি রেজিস্ট্রি নিয়ে উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণকাহ বাস্তবায়ন করা হবে। কিন্তু সাংসদ জাফর আলম আমাদের জমিতে এসে মার্কেট নির্মাণকাজ আরম্ভ করেছেন। তিনি সাংসদের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে জমি জবরদখলের চেষ্টা করছেন। এমপি জাফর আলম দলে অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে আমাদের নিঃস্ব করার মিশনে নেমেছেন।


কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ভূক্তভোগী এসএম গিয়াস উদ্দিন বিবার্তাকে বলেন, আমরা আদালতে আম-মোক্তারনামা থেকে এমপিসহ শর্তভঙ্গকারীদের নাম কর্তনের আবেদন করেছি। জমিতে আওয়ামী পরিবারের ২ শতাধিক নেতা-কর্মীর স্বত্ব আছে। এমপি দলে অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে মার্কেট নির্মাণ কাজ করার চেষ্টা করছেন।


বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ও ষ্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরেফা পারভীন তাপসী বলেন, কোনো ব্যাক্তি অপর কোনো ব্যাক্তির জমি জায়গা দখল করে নিয়ে নিজে ভোগ দখল করতে পারবে না। (স্পেসিপিক রিলিফ এ্যাক্ট ১৮৭৭ এর ধারা ৮ ও ৯ অনুযায়ী জোরপূর্বক দখলের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হবার বিধান আছে।) এছাড়াও এটা সুস্পষ্ট মৌলিক অধিকার লংঘন, যেখানে বাংলাদেশ সংবিধান এ স্পষ্টভাবে ৪২ নং অনুচ্ছেদ এ প্রত্যেক নাগরিক এর সম্পত্তির অধিকার আছে। জোরপূর্বক কোনো মানুষ অপর কোনো মানুষের জমি দখল বা নিজ নামে নামজারির কোনো সুযোগ নেই।


অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য জাফর আলম বিবার্তাকে বলেন, জমি দখলের অভিযোগ সত্য নয়। আপনি কি মনে করেন, আমি আইন পরিষদের সদস্য হয়ে আইন বহির্ভূত কাজ করবো? আমি কিছু জমি শরিকদের নিয়ে কিনেছি। এরপর সেখানে ডেভেলপার দিয়ে কাজ চলছে। ডেভেলপাররা তো শতভাগ কাগজ যাচাই-বাছাই না করে কাজ শুরু করবে না। এটা মিথ্যা অভিযোগ।


নিঃস্বত্ব ব্যক্তিদের জমির মালিক বানিয়ে জমি রেজিস্ট্রির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৯৫৭ সালে আরএস খতিয়ানে জমির মালিকানা পেয়েছে মাহমুদ আহমদ ও এনামুল হক গং। তারা একপক্ষেকে জমি বিক্রি করেছে। এরপর তাদের কাছ থেকে আরেক পক্ষ সেসব জমি কিনেছে। আমরা সেই পক্ষ থেকে এসব জমি কিনেছি। এরপর নামজারি খতিয়ান বিএস করেছি। ডেভেলপাররা আপ-টু-ডেট বিএস না হলে তো কোনো জমিই নেয় না। এই খতিয়ানের মধ্যে ৭ একর জায়গা আছে। এর মধ্যে ২ দশমিক ৬ একর নিয়েছি। আরো ৫ একর তো সেখানে আছে। আমি কারো কোনো জমি নেই নি।


বিরোধীয় জমিতে মার্কেটের কাজ চলমান আছে জানিয়ে জাফর আলম বলেন, তারা আদালতে মামলা করেছে। তদন্ত দল এসেছে আমরা কাগজপত্র দেখিয়েছি। এরপর আর তাদের জায়গা থাকবে না। আমি তাদের জমি নিয়েছে এসবঅভিযোগ ভোগাস। তিনি বলেন, এখনো চকরিয়ায় ১০০ একর জমি অবৈধ দখলে আছে। জমি দখলের অভিযোগ মিথ্যা। এগুলো ভুয়া মালিক। এসব কাজে আমার সম্পৃক্ততা নেই। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।


ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠা চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাফর আলম আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের সাথে সুসম্পর্কের দোহাই দিয়ে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বিবার্তাকে বলেন, দলের কোনো নেতা বা এমপির কোনো অনৈতিক কর্মকান্ডে সমর্থন দেয়ার প্রশ্নই উঠে না। আমার নির্বাচনী এলাকায় দলের নেতা-কর্মীদের কোনো অন্যায় কাজে ছাড় দেয়া হয় না। অনেকের বিরূদ্ধে ‌অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনী ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। সেখানে কক্সবাজার বা অন্য কোনো জেলার নেতা আমার নাম ব্যবহার করে কোন অপকর্ম করলে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।


দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কেবলই সাংগঠনিক সম্পর্ক, এর বাইরে কারো সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে হানিফ বলেন, দলের কোনো নেতাকর্মীর অনৈতিক কর্মকান্ড সামনে আসলে আমরা আ্ইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি। আমার নাম ব্যবহার করে কোনো অন্যায় কাজ করার সুযোগ নেই। কেউ কখনো বলতে পারবে না আমি কারো কোনো অন্যায় কাজে প্রশাসন বা কারো কাছে সুপারিশ করেছি। আমার নাম ব্যবহার করে কেউ অন্যায় করছে সঠিকভাবে এমন কোনো তথ্য দিলে আমি ‌‌অবশ্যই তার বিরূদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেবো।


কক্সবাজার-১ আসনের এমপি জাফর আলমের বিরুদ্ধে জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমি দখল বা কোন অনৈতিক কাজের অভিযোগ এখন পর্যন্ত তার (জাফর আলম) বিরুদ্ধে কেউ দেয়নি। তবে দলের প্রভাব খাটিয়ে কোনো এমপি বা নেতা যদি অনৈতিক কর্মকান্ড করে থাকে বা মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এমন সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ যদি আসে আমরা তার বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো।


বিবার্তা/বিআর

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com