
বান্দা ইবাদত করলে মহান আল্লাহ খুশি হন। কারণ ইবাদতের জন্যই আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন বান্দাদের। আমাদের জীবনে নতুন নতুন দিন আসে। আর দিন শুরু হয় সকালে।
সকালের কাজেই মহান আল্লাহ বরকত রেখেছেন। নবীজির এ বিষয়ে অনেক হাদিস রয়েছে। সকালের ঘুম শহুরে সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও গ্রামে এখনো মানুষ ভোর সকালে ওঠে কাজে যায়।
সকালের কাজে শারীরিক উন্নতি হয় বলেও চিকিৎসকরা বলেছেন। ঠিক তেমনই সকালের ঘুমে মানুষের সমস্যা দেখা দেয় সেটাও বলা আছে চিকিৎসা শাস্ত্রে। চিকিৎসকরা বলেন, সকালের ঘুম মানুষের শারীরিক ও মানসিক নানা সংকট তৈরি করে, এমনকি মানুষের মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। একইভাবে সকালের ঘুমের কারণে প্রতিদিন যে পরিমাণ কর্মঘণ্টা নষ্ট তা জাতীয় উন্নয়নে বিরূপ প্রভাব ফেলে। ইসলাম মানুষকে সকাল সকাল ওঠার নির্দেশ দেয়।
মুসলিমদের সংস্কৃতি হলো তারা ফজরের নামাজের মাধ্যমে দিন শুরু করে এবং সকাল সকাল কর্মস্থলে যোগদান করে। সকালবেলার গুরুত্ব বোঝাতে মহান আল্লাহ সকালের শপথ করে বলেছেন, উষাকালের শপথ! যখন তা আবির্ভূত হয়। (সুরা তাকভির: ১৮)
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকালকে এই উম্মতের জন্য বরকতময় করার দোয়া করেছেন। সুতরাং সকালে কাজ শুরু করলে বরকত পাওয়া যাবে। তিনি বলেছেন, হে আল্লাহ! আমার উম্মতের ভোরবেলাতে তাদেরকে বরকত ও প্রাচুর্য দান করুন। (সুনানে তিরমিজি ১২১২)
সুরা আল-বাকারার ২৫৫ নম্বর আয়াত যাকে আয়াতুল কুরসি বলা হয়। যে ব্যক্তি সকালে তা বলবে সে বিকেল হওয়া পর্যন্ত জিন ও শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে, আর যে ব্যক্তি বিকেলে তা বলবে সে সকাল হওয়া পর্যন্ত জিন ও শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে।
রসুল সা. বলেন, যে ব্যক্তি সকাল ও বিকেলে ‘কুল হুআল্লাহু আহাদ’ (সুরা ইখলাস), ‘সুরা ফালাক’ ও ‘সুরা নাস’ তিনবার করে বলবে, এটাই তার সবকিছুর জন্য যথেষ্ট হবে। (তিরমিজি ৩/১৮২)
১.
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ উচ্চারণ: আস্তাগফিরুল্লাহ ওয়া আতুবু ইলাইহি। আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তার নিকটই তওবা করছি। (প্রতি দিন ১০০ বার) (বুখারি ৬৩০৭, মুসলিম ২৭০২)
২.
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْماً نافِعاً، وَرِزْقاً طَيِّباً، وَعَمَلاً مُتَقَبَّلاً উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নি আস্আলুকা ‘ইলমান না-ফি‘আন্ ওয়া রিয্কান ত্বায়্যিবান ওয়া ‘আমালান মুতাক্বাব্বালান। অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট উপকারী জ্ঞান, পবিত্র রিযিক এবং কবুলযোগ্য আমল প্রার্থনা করি। এটি ফজর নামাজের সালাম ফিরানোর পর পড়বে। (ইবন মাজাহ ৯২৫)
৩.
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِير উচ্চারণ: লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মূলকু ওয়ালাহুল হাম্দু ইয়ুহ্য়ী ওয়াইয়ূমীতু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদির)। অর্থ: একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তার কোনো শরিক নেই, রাজত্ব তারই এবং সকল প্রশংসা তাঁর। তিনিই জীবিত করেন এবং মৃত্যু দান করেন। আর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। ১০ বার করে পড়বে। (তিরমিজি ৩৪৭৪)
৪.
اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَدَنِي، اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي سَمْعِي، اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَصَرِي، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ. اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكُفْرِ، وَالفَقْرِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ‘আ-ফিনী ফী বাদানী, আল্লা-হুম্মা ‘আ-ফিনী ফী সাম্‘ঈ আল্লা-হুম্মা ‘আ-ফিনী ফী বাসারী। লা ইলা-হা ইল্লা আনতা। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘উযু বিকা মিনাল কুফরি ওয়াল-ফাক্বরি ওয়া আ‘উযু বিকা মিন ‘আযা-বিল ক্বাবরি, লা ইলাহা ইল্লা আন্তা)। (৩ বার)
হে আল্লাহ! আমাকে নিরাপত্তা দিন আমার শরীরে। হে আল্লাহ! আমাকে নিরাপত্তা দিন আমার শ্রবণশক্তিতে। হে আল্লাহ! আমাকে নিরাপত্তা দিন আমার দৃষ্টিশক্তিতে। আপনি ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই।
হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই কুফরি ও দারিদ্র্য থেকে। আর আমি আপনার আশ্রয় চাই কবরের আজাব থেকে। আপনি ছাড়া আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই। (৩ বার) আবু দাউদ ৫০৯২, আহমাদ ২০৪৩০, বুখারি)
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]