শিরোনাম
কৃষকের স্বপ্ন মিশে গেল জলে
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০১৭, ১৪:৩২
কৃষকের স্বপ্ন মিশে গেল জলে
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কঠোর পরিশ্রম করে দুই দফায় বন্যার হাত থেকে আমন ধানের ক্ষেত রক্ষা করেও কোনো লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত দমকা হাওয়ায় মাটিতে মিশে গেছে লালমনিরহাটের কৃষকদের স্বপ্ন। শুক্রবার রাতে হালকা বর্ষণ ও দমকা হাওয়ায় ধান ক্ষেত মাটিতে পড়ে গিয়ে কৃষকদের অভাবনীয় ক্ষতি হয়েছে কৃষিতে।


কৃষকরা জানান, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর আগাছা ও কচুরীপানা পরিস্কার করে প্রয়োজনীয় সার ও পরিচর্যার মাধ্যমে আমন ক্ষেত রক্ষা করতে সমর্থ হন জেলার হাজার হাজার কৃষক। বন্যার পানির সাথে আসা পলিতে বেশ মোটা তাজাই হয়ে উঠেছিল তাদের আমন ধান ক্ষেত। কিন্তু শুক্রবার রাতে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় মুহুর্তেই লণ্ডভণ্ড হয়েছে তাদের স্বপ্ন। মাঠের পর মাঠ আমন ক্ষেত মাটির সাথে মিশে গেছে। পানিতে পড়ে যাওয়ায় এসব ধান সমুলে চিটা হয়ে যাবে বলে কৃষকরা আশংকা করছেন।


জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতর জানায়, এ বছর জেলার ৫টি উপজেলায় ৮২ হাজার ২৫৯ হেক্টর জমিতে আমন রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নিরুপন করা হলেও অর্জন হয়েছে ৮৪ হাজার ৭১০ হেক্টর।


মহিষখোচা এলাকার প্রান্তিক কৃষক আব্দুল মজিত জানান, স্থানীয় এনজিওতে ঋন নিয়ে প্রায় এক বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আমন ধান রোপণ করেন। গেল দুই দফায় বন্যায় ডুবে গেলেও আপ্রান চেষ্টা এবং পরিচর্যা করে ফিরায়ে আনেন। কিন্তু গত রাতের বৃষ্টি ও বাতাসে তার সকল ধান গাছ মাটির সাথে মিশে গেছে। আর মাত্র ২০/২২ দিন হলেই ধান গোলায় নিতে পারতেন এ কৃষক। ধান নষ্ট হওয়ায় পরিবার পরিজনের খাবার শুধু নয়, ঋনের কিস্তি নিয়েও তিনি বড্ড চিন্তায় পড়েছেন।



মহেন্দ্রনগর এলাকার কৃষক মনসুর আলী, আক্কাস আলী ও মেজবাহ উদ্দিন জানান, খুব বেশী হলে ১৫/২০ দিনের মধ্যে ধান ঘরে তুলতে পারতেন তারা। এ সময় হঠাৎ এ বাতাসে তাদের ধান গাছ মাটির সাথে মিশে গেছে। গত বছরও একইভাবে তাদের জমির ধান চিটায় পরিণত হয়েছে। এবারও একই পরিণতি। ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার সুযোগও জুটছে না তাদের। পরিবার পরিজনের খাদ্য নিয়েও তারা চিন্তিত।


মোগলহাট এলাকার সবজি চাষি হাফিজ মিয়া জানান, এ বৃষ্টি আর দমকা হওয়ায় তার এক বিঘা জমির পটল, করলা, লাউ ও ছিমের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। প্রায় সবগুলো ক্ষেতের মাচাং বাতাশে ভেঙ্গে সবজির ডাল পালা ছিড়ে গেছে।


লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিধু ভুষন রায় জানান, এটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বাতাসে আমন ক্ষেত মাটিতে পড়ে যাওয়ায় ধানের ক্ষতি হচ্ছে। সমূলে ক্ষতি হবে না। তবে ধানে চিটার পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি পাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।



বিবার্তা/জিন্না/ইমদাদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com