শিরোনাম
নড়াইলে খামারিদের মাথায় হাত!
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০১৭, ১৩:১৭
নড়াইলে খামারিদের মাথায় হাত!
শরিফুল ইসলাম, নড়াইল
প্রিন্ট অ-অ+

নড়াইলে গরু খামারিদের মাথায় হাত উঠেছে! সারা বছর কষ্ট করে কোরবানির সময় গরু বেচে লাভের মুখ দেখবে এমন আশায় জেলার খামারীরা পশু মোটা-তাজা করলেও ভারতীয় পশু হাটে আসায় সে লাভের মুখে ছাই পড়েছে। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে কোরবানির পশু দেশে প্রবেশ করায় প্রভাব পড়েছে নড়াইলের খামারিদের মধ্যে। ফলে এখন পূঁজি বাঁচানো নিয়ে চিন্তিত তারা।


খামারিহাবিবুর রহমান জানান, আমার খামারে ২০টি গরু রয়েছে। আমরা দেশীয় পদ্ধতিতে খড়-ভূসি খাইয়ে গরু মোটাতাজা করে থাকি যার কারণে আমাদের খরচ হয় বেশি। কোরবানির আগে পশু দেশে আনতে হবে কেন?


প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ভারতীয় গরু আনতে হলে বছরের সব সময় আনা হোক তাহলে আমাদের সমস্যা হবে না। আর হঠাৎ করে ঈদের সময় পশু আসলে আমাদের জন্য সমস্যা। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে গরুর খামার করা হয়েছে এখন আমাদের গরুর দাম কমে গেছে ভারতীয় গরু হাটে আসার কারণে। এখন আমরা লাখ লাখ টাকার ঋণ কীভাবে পরিশোধ করব?


খামারিমোয়াজ্জেম হোসেন জানান, তার খামারের দুটি গরু বিক্রি করতে পারছেন না। চার মাস আগে যে গরুর দাম ৮০ হাজার টাকা ছিল, সেই গরুই এখন ৬৫ হাজার টাকার বেশি দাম উঠছে না। এতে করে আমাদের মত খামরিরা আর গরু পালবেন না বলেও জানান তিনি।



খামারিমোশাররফ হোসেন বলেন, আমার খামারে ১৫টি গরু রয়েছে। এ বছর খড়, ভূসি, খৈলসহ গরুর খাবারের দাম অনেক বেশি ছিল। আশা করেছিলাম কোরবানির সময় গরু বিক্রি করে বেশি লাভ করব। কিন্তু বাজার গুলোতে ভারতীয় গরু আসার কারণে আমাদের লাভ তো দুরের কথা গরু মোটাতাজা করনে যে পরিমাণ অর্থ ব্যায় করা হয়েছে গরু বিক্রি করলে সে অর্থ আসবে কি না তা নিয়েই এখন আমি চিন্তিত।


জেলা পশু অফিসের হিসাব অনুযায়ী, এ বছর জেলায় কোরবানি গরুর চাহিদা হবে প্রায় ১৪ হাজার এবং ছাগলের চাহিদা হবে ৬ হাজার। অর্থাৎ জেলার চাহিদার চেয়ে তিনটি উপজেলায় মোট ৮ হাজারের বেশি গরু এবং ৩ হাজার ছাগল মোটাতাজা করছে জেলার কৃষকেরা। অর্থাৎ এ বছর জেলার চাহিদা থেকে ১১ হাজার বেশি পশু মোটাতাজা করা হয়েছে। যা দেশের বিভিন্ন হাটে বিক্রি করা হবে।


জেলা প্রাণিসম্পদ কমকর্তা ডা: আমিনুল ইসলাম জানান, জেলায় ছোট বড় আকারের চার হাজার ৮৪৫ টি খামার রয়েছে। এর মধ্যে নড়াইল সদর উপজেলায় ১ হাজার ২১০ টি, লোহাগড়া উপজেলায় ১ হাজার ৮২২ টি এবং কালিয়া উপজেলায় ১ হাজার ৩১৩ টি। জেলায় চাহিদার চেয়ে বেশি পশু পালন করা হয়েছে। ভারতীয় গরু হাটে আসলে জেলার খামারিদের কিছুটা সমস্যা হবে বলে তিনি মনে করেন।


পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম বলেন, জেলার পশুহাট গুলোতে যাতে কোনো প্রকার বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে না পারে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। পাশাপাশি সাদা পোষাকেও পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন। হাটগুলোতে জাল টাকার লেনদেন প্রতিরোধে জাল টাকা সনাক্তকরন মেশিন বসানো হয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।


বিবার্তা/শরিফুল/যুথি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com