শিরোনাম
ফুরিয়ে আসছে রাজশাহীর আম, দাম দ্বিগুণ
প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০১৭, ১৩:৪৭
ফুরিয়ে আসছে রাজশাহীর আম, দাম দ্বিগুণ
রাজশাহী ব্যুরো
প্রিন্ট অ-অ+

হিমসাগর, গোপালভোগ, লখনার মতো উন্নতজাতের আমগুলো বেশ কিছু দিন আগেই বাজার থেকে বিদায় নিয়েছে। এখন বাজারে বেশি পরিমাণে আছে ফজলি ও আশ্বিনা। স্বল্প পরিমাণে আছে আমরুপালি ও ল্যাংড়া। আম শেষ হয়ে আসায় ছোট হয়ে এসেছে আমের বাজার। ফলে এই মুহুর্তে আমের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।


বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহ থেকে আমের দাম বাড়তির দিকে। রোববারও মণে ১০০ টাকা বেশিতে আম বিক্রি হয়েছে। বাগানে আম প্রায় শেষ হতে আসায় দাম এখন উঠতির দিকে। বেশি দাম না দিলে বাগান মালিকরা আমই দিতে চাচ্ছেন না। ফলে কিনতে হচ্ছে বেশি দামে, বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশিতে। এতে আমচাষিরা লাভবান হচ্ছেন বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।


রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের হাট বসে পুঠিয়ার বানেশ্বরে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি মণ ফজলি বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৪০০ টাকা দরে। প্রতি মণ লাড়–য়া ভোগ বিক্রি হচ্ছে ছয় হাজার টাকায়। এছাড়া আশ্বিনা বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ তিন হাজার টাকায়। এছাড়া খুবই সামান্য পরিমাণে থাকা ল্যাংড়া বিক্রি হচ্ছে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায়।


রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার, শালবাগান ও শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকার আমের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মৌসুম প্রায় শেষ হয়ে আসায় কমেছে আমের দোকানের সংখ্যা। ফলে বেড়েছে দাম। এই তিন বাজারে আমরুপালি, মহারাজ ফজলি, সুরমা ফজলি ও আশ্বিনা আম বিক্রি হতে দেখা যায়।


শিরোইলের রাজন ফল ভাণ্ডারের বিক্রয়কর্মী রবিউল ইসলাম জানান, নানা জাতের ফজলি এখানে দুই হাজার ৪০০ থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। চোষা বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৮০০ টাকায়। খুব কম পরিমাণে থাকায় ল্যাংড়া ও আমরুপালির দাম আরও চড়া। এগুলো ছয় থেকে সাত হাজার টাকা মণ দরেও বিক্রি হচ্ছে।


বাদশা আমের আড়তের মালিক বাদশা শেখ বলেন, আম কমতে কমতে এখন ফজলি এবং আশ্বিনার মধ্যে সীমাবদ্ধ হতে শুরু করেছে। ফজলি বাজারে এসেছে প্রায় এক মাস আগেই। তবে আশ্বিনা আসছে গত সপ্তাহ থেকে। ফজলি বাজারে মিলবে আরও প্রায় ১৫ দিন। আর আশ্বিনা পাওয়া যাবে আরও প্রায় মাসখানেক। বাজারে আমের সরবরাহ কমার কারণে দাম বেড়েছে বলেও জানান তিনি।


শালবাগান বাজারের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিন ধরে রাজশাহীতে বৃষ্টি লেগেই আছে। এই বৃষ্টির কারণেও আমচাষি এবং ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে ঠিকমতো আম পাড়তে পারছেন না। এতে বাজারে আমের সরবরাহ কমেছে। ফলে দামও বেড়েছে কিছুটা। এরপরেও আম বিক্রি কমেনি। শেষ মুহুর্তে চাহিদাও বেড়েছে মৌসুমি এ ফলের।


সাহেববাজারের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, এবার আমের মৌসুম শুরু হয়েছিল রোজার ভেতর। তাই দাম ছিল কম। চাষি, ব্যবসায়ীরাও এতে খুব একটা লাভবান হননি। রোজার পর থেকেই আমের দাম বাড়তে থাকে। এখন আম শেষ হতে থাকায় দাম বাড়তেই থাকবে। বাড়তি এ দাম কমার সম্ভাবনাও কম। কারণ, মৌসুমের শুরুর দিকে যেসব চাষিরা আম বিক্রি করে খুব বেশি লাভবান হতে পারেননি, তারা এখন চড়া দাম ছাড়া আম বিক্রি করছেন না।


প্রসঙ্গত, রাজশাহীর প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। এবার আম এসেছিল এক লাখ ২৬ হাজার ৪৮০ গাছে। জেলায় এবার দুই লাখ মেট্রিক টনের বেশি আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। তবে মৌসুমের শুরুতেই ৯০ থেকে ৯৫ কিলোমিটার গতিবেগের এক কালবৈশাখীতে ঝরে পড়ে প্রচুর আম। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন চাষিরা। আমের দাম সাধ্যমতো বাড়িয়ে সে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন কোনো কোনো চাষি।


বিবার্তা/রিমন/নাজিম

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com