লালমনিরহাটে একই পরিবারের দুই শিশু একিউট ফেলাসিল প্যারালাইসিস (এএফপি) রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এরা হলো সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের পূর্বঢাকনাই গ্রামের অসহায় দিনমজুর সৈয়দ আলীর মেয়ে শিমু বেগম (১৪) ও ছেলে নাহিদ হাসান (১২)।
বহু বছর ধরে দু’ভাই-বোন এই জটিল রোগে আক্রান্ত হলেও সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়নি।
আক্রান্ত দুই শিশুর মা লাকী বেগম বিবার্তাকে জানান, জম্মের সময় তাদের মেয়ে শিমু বেগম ও ছেলে নাহিদ হাসান স্বাভাবিক ছিলো। শিমু লোহাখুচি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী এবং নাহিদ ফকিরটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলো।
ছোট বেলায় তাদের সন্তানদেরকে নিয়মিত পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়েছিলো। ২০১১ সালে হঠাৎ করে শিমু ও ২০১২ সালে নাহিদ প্রাথমিক অবস্থায় শারীরিকভাবে দুর্বল হতে থাকে। ধীরে ধীরে হেঁটে স্কুল যাওয়ার ক্ষমতাটুকও হারিয়ে ফেলে। দিন দিন তাদের হাত-পা চিকন ও বাঁকা হয়ে পড়ছে। এমনকি তাদের বাকশক্তিও নেই। বর্তমানে তারা দুজনেই মাটিতে ও বিছানায় শুয়ে শুধুমাত্র আ-আ-উ-উ আওয়াজ ছাড়া আর কিছুই বলতে পারে না।
এ অবস্থায় তাদেরকে চিকিৎসকের কাছে নেয়া হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দু’ভাই-বোনের এএফপি রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানান। চিকিৎসকের ধারণা দু’ভাই-বোনের পোলিও অভাবজনিত কারণে হাত-পা ক্রমান্বয়ে চিকন ও মোড়ানোভাব হচ্ছে।
অশ্রুসিক্ত নয়নে মা লাকী বেগম আরো জানান, দু’টি সন্তানকে নিয়ে বর্তমানে খুবই কষ্টে আছেন। কষ্টের সংসারে দু’টি মাত্র সন্তানই ছিলো তাদের ভবিষ্যৎ ভরসা। এখন সন্তানের চিকিৎসা তো দূরের কথা, একদিন কাজ না করলে তাদের চুলায় আগুন জ্বলে না। আমরা কিভাবে এই জটিল রোগে আক্রান্ত সন্তানদের চিকিৎসা করাবো? দুঃখ, কষ্ট ছাড়া আর কিছুই নেই!
এ ব্যাপারে লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডা. আমিরুজ্জামান বিবার্তাকে বলেন, ওই এলাকায় আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করে। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলে খোঁজ খবর নেবো। প্রয়োজনে চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম গঠন করে ওই শিশু দু’টির চিকিৎসা করা হবে।
বিবার্তা/জিন্না/মোয়াজ্জেম/কাফী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]