লোকসান মাথায় নিয়ে কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই শুরু
প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮:৫৫
লোকসান মাথায় নিয়ে কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই শুরু
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় অবস্থিত কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড। বৃহৎ এ শিল্প কমপ্লেক্সটি চিনি উৎপাদন কারখানা, ডিস্টিলারি, জৈব সার কারখানা ও ওষুধ কারখানার সমন্বয়ে গঠিত।


কোম্পানিটি সামগ্রিকভাবে লাভে থাকলেও চিনি শিল্পে ৬১ কোটি ৭ লাখ টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে ২০২৩-২৪ মৌসুমে আখ মাড়াই শুরু করেছে দেশের সবচেয়ে বড় চিনিকলটি। এবারের মূল লক্ষ্য চিনিতে লোকসান কমিয়ে আনা।


শুক্রবার বিকেলে চিনি কলের কেইন কেরিয়ারে আখ ফেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এবারের মাড়াই মৌসুম উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের (বিএসএফআইসি) চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম এনডিসি। এর আগে মাড়াই উপলক্ষ্যে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।


কেরু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি বছর মাড়াই মৌসুম সফল করতে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। এ বছর ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে মিলস হাউজে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজন করে চিনিকলটি আধুনিকায়নের কাজ চলছে। এতে আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়বে।


সবকিছু ঠিকঠাক চললে মোটা অঙ্কের লোকসান কমিয়ে আনবে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি এমনটিই প্রত্যাশা মিল কর্তৃপক্ষের। তবে এলাকায় আখ চাষ ক্রমাগত কমতে থাকায় সংকটে পড়েছে দেশের ঐতিহ্যবাহী এই চিনিকলটি।


এ মৌসুমে মাত্র ৫৫ কর্ম দিবসের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৬৫ হাজার হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার মেট্রিক টন। চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছে শতকরা ৬.২০ ভাগ।


এ বছর কেরু চিনিকল জোনে দণ্ডায়মান আখ রয়েছে ৩ হাজার ৮০২ একর জমিতে। এর মধ্যে চিনিকলের নিজস্ব জমিতে আখ রয়েছে ১ হাজার ১৫৩ একর জমিতে। আর ২ হাজার ৬শ ৪৯ একর জমিতে আখ রয়েছে সাধারণ চাষীদের।


চাষীদের দাবির প্রেক্ষিতে চলতি মৌসুমে আখের মূল্য বাড়িয়েছে সরকার। এবার প্রতিমন (৪০ কেজি) আখের মূল্য ২২০ টাকা করা হয়েছে। তবে চিনির মূল্য বাড়লেও আশানুরূপ হারে আখের মূল্য বাড়েনি। ফলে আখের মূল্য আরো বাড়ানোর দাবি চাষীদের।


চিনকলটির ব্যবস্থাপক (হিসাব) গোলাম জাকারিয়া বলেন, চলতি বছর কেরু এন্ড কোম্পানি সামগ্রিক ভাবে ৮৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা লাভে আছে। তবে আমাদের চিনিতে লোকসান ৬১ কোটি ৭ লাখ টাকা। আমরা চিনির লোকসান পুশিয়ে আনার চেষ্টা করছি।


তিনি আরও বলেন, আমরা ডিস্টিলারি থেকে ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, ফার্মাসিউটিক্যালে ২২ হাজার, জৈব সারে ২৬ লাখ ২২ হাজার, কমার্শিয়াল ফার্মে ২২ লাখ ৯০ ও আকন্দবাড়িয়া ফার্মে ১৩ লাখ ৮৬ হাজার টাকা মুনাফা করেছি।


আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের (বিএসএফআইসি) চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম এনডিসি, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা, জেলা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান (পিপিএম-সেবা), চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মঞ্জু, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা।


এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন, আখ চাষি সমিতির সভাপতি আব্দুল বারী, কেরু শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ সবুজ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান প্রমুখ।


অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন (বিএসএফআইসি) সদর দপ্তরের সচিব রুহুল আমীন কায়সার।


উল্লেখ্য, ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের সবচেয়ে বড় চিনিকল দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। চিনি উৎপাদন কারখানা, ডিস্টিলারি, জৈব সার কারখানা ও ওষুধ কারখানার সমন্বয়ে গঠিত বৃহৎ এ শিল্প কমপ্লেক্সের চিনি কারখানাটি।


বিবার্তা/সাঈদ/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com