আগামীকাল রামগড় স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কার্যক্রমের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:৫৩
আগামীকাল রামগড় স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কার্যক্রমের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বহুল প্রত্যাশিত দেশের ১৫তম ও পার্বত্যাঞ্চলের প্রথম খাগড়াছড়ির রামগড় স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন হচ্ছে আগামীকাল (১৪ নভেম্বর) মঙ্গলবার।


ভার্চুয়ালি রামগড় স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


রামগড় স্থলবন্দরের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. সারওয়ার আলম জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী ১৪ নভেম্বর ভার্চুয়ালি রামগড় ইমিগ্রেশনটি উদ্বোধন করবেন। এ লক্ষ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমস থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।


এছাড়াও সীমান্ত জটিলতার যে সমস্যা ছিল, ইতোমধ্যে সেটি সমাধান হয়ে গেছে। স্থলবন্দরের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণসহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজের জন্য প্রায় ২শ’ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে।


ডিসেম্বরে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হতে পারে।’ রামগড় ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ আবতাব উদ্দিন বলেন, ‘১৪ নভেম্বর ইমিগ্রেশন উদ্বোধনের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে যাবতীয় প্রস্ততি নিতে বলা হয়েছে। আমাদের দিক থেকে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা।’


সূত্র মতে, স্থলবন্দরের স্থায়ী কাঠামো তৈরি নিয়ে জটিলতার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় অস্থায়ী অবকাঠামোয় ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালু করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। জটিলতা নিরসন হলে বন্দর দিয়ে পণ্যবাহী গাড়িসহ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হবে। মূলত ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের আগে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শুরু করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করায় প্রথমে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালু করছে বাংলাদেশ বন্দর কর্তৃপক্ষ।


বন্দরের চার তলা প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, পোর্ট ভবন, চার তলার ডরমিটরি ভবন, এক্সেল কন্ট্রোল কক্ষ, বাংলাদেশ-ভারত ট্রাক টার্মিনালসহ নানা অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ হওয়ার আগে এই বন্দরে পণ্যবাহী পরিবহন যাতায়াতের সুযোগ তৈরি হতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।


রামগড় স্থলবন্দরটি পুরোপুরি চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ১১২ কিলোমিটার দূরত্বের এই স্থলবন্দর ব্যবহার করে মাত্র তিন ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ট্রান্সশিপমেন্টের পণ্য যেতে পারবে ভারতে। দেশটির সেভেন সিস্টার্স খ্যাত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যসহ মেঘালয়, আসাম, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে এই বন্দর দিয়েই।


একইসঙ্গে রামগড় স্থলবন্দর ব্যবহার করে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে পণ্য পরিবহন করতে পারবেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। এতে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যবসা- বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ পর্যটনে ব্যাপক পরিবর্তন ও উন্নতি হবে।


স্থলবন্দর চালুর লক্ষ্যে রামগড়ে মহামুনি এলাকায় ৪১২ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৪.৮০ মিটার প্রস্থের বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ নামে একটি আন্তর্জাতিক মানের সেতু নির্মাণ করেছে ভারত। ১৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেতুটি ২০২১ সালের ৯ মার্চ দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন এবং ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে রামগড় ইমিগ্রেশন ভবন ও চেক স্টেশনের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর কিছু লোকবলও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।


রামগড় পৌর মেয়র রফিকুল আলম কামাল বলেন, ‘ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালু হচ্ছে এতে আমরা আশার আলো দেখছি। তবে বন্দর টার্মিনাল নির্মাণ ও পণ্যবাহী পরিবহন সুবিধা চালু হলে এ অঞ্চলের মানুষ লাভবান হবেন। তখন চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের জন্য নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বয়ে আনবে। তবে এ বন্দরের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হবে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো। তারা সহজে ও কম খরচে অল্প সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহনের সুবিধা পাবেন।’


রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারী বলেন, ‘রামগড়সহ পুরো দেশ এই বন্দরের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় আছে। সবাই আশা করে বন্দরের কাজ শেষ হলে বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও আর্থিক সম্পর্ক বাড়বে। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এবং যোগাযোগ সুবিধা পাবে বাংলাদেশ ও ভারত।


বিবার্তা/মামুন/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com