তহশীলদারের দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ২০:৪১
তহশীলদারের দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা বীণা রাণীর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে ভূক্তভোগীরা পৃথক দু’টি অভিযোগ বিভিন্ন দফতরে দাখিল করেছেন।


অভিযোগ এবং ভূক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসটি উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী এলাকায় অবস্থিত। ইউনিয়ন উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা বীণা রাণী গত ১০ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে এ অফিসে যোগদান করেন। যোগদানের পর হতেই নিরাপত্তাহীনতার অজুহাতে প্রতিদিন তার স্বামী প্রদীপ বাবুকে সাথে নিয়ে অফিসে আসেন। মূলত বীণা রাণী সু-কৌশলে তার স্বামীর মাধ্যমে নামজারি, খতিয়ান লেখা ছাড়াও বিভিন্ন কাজের বিনিময়ে আর্থিক লেনদেন করে থাকেন। টাকা ছাড়া কোন কাজই করতে চান না তিনি।


উক্ত ইউনিয়ন ভূমি অফিসের আওতাভুক্ত ভূক্তভোগী মরাদাতেয়া গ্রামের ভূমিহীন রাজ কুমার ও তার স্ত্রী অরুণ বালা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সহকারি কমিশনার (ভূমি) পলাশবাড়ী কর্তৃক ৪২৫০/২০১৯ নম্বর দলিল মূলে গত ৩১/০৭/২০১৯ তারিখে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তাহা নামজারিসহ খাজনা পরিশোধ পূর্বক জমি ভোগদখল করা ছাড়াও জমির নামজারী কেস নং-১৩৭৯ (ওঢ-ও)/২০২২-২৩ খারিজ খতিয়ান নং-৭৪৩, হোল্ডিং নং-৭৪৩ প্রস্তুত করে নেয়। উক্ত জমি সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে একই গ্রামের আজাদুল ইসলাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ল্যান্ডসার্ভে ট্রাইবুনাল মোকদ্দমা ৫৩৪/১৯ দায়ের করেন। তৎকালীন উপ-ভূমি সহকারি কর্মকর্তা ডিএম মোমিনুল ইসলাম এবং জসবন্ধু পাল সরকারি স্বার্থ আছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল ছাড়াও আদালতে যোগাযোগ করেন। বর্তমান তহশীলদার বীণা রাণী সরকারি স্বার্থ রক্ষার্থে আদালতে যোগাযোগ না করে বাদী পক্ষের সাথে যোগসাজসে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে গত ০২/১০/২০২২ তারিখে আদালতে উপস্থিত না হয়ে বিবাদীকে কোন প্রকার নোটিশ প্রদান না করে একতরফা ভাবে জমি কর্তন পূর্বক বিআরএস খতিয়ান প্রস্তুতের আদেশ প্রদান করেন। ওই আদেশের প্রেক্ষিতে আজাদুল ইসলাম গংরা রাজ কুমার গংদেরকে জীবননাশের হুমকিসহ জমি দখলের পায়তারা করছে। রাজু কুমার এ ব্যাপারে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার (ভূমি) বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন।


অপরদিকে জেলা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কার্যালয়ের স্মারক নং-২০২২/৪৭৮(২), তারিখ ৩১/০৩/২০২২ইং মোতাবেক জমি সংক্রান্ত একটি মামলা একই ইউপি’র হরিনাবাড়ী গ্রামের মৃত- বাচ্চা মিয়ার পুত্র মো. ভোলা মিয়া, একই গ্রামের মৃত রহিম উদ্দিনের পুত্র মো. আবুল কালাম আজাদের সহিত ২৩১/২০২২ পিটিশন মামলা চলমান। মামলাটি সরেজমিনে তদন্ত জন্য হরিনাথপুর ইউনিয়ন উপ-সহকারী (ভূমি) কর্মকর্তা বীণা রাণীর উপর ন্যস্ত করেন। উপ-সহকারী কমকর্তা বীণা রাণী মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে উক্ত পিটিশন মামলা সঠিকভাবে তদন্ত না করে মনগড়া তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করায় ভুক্তভোগীরা বিপাকে পড়েন। ভুক্তভোগী ভোলা মিয়া উপায়ন্তর না দেখে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রতিকার চেয়ে অসাধু-অর্থলোভী উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বীণা রাণীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে গত ০৭/০৮/২০২৩ তারিখে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। তহশীলদার বীণা রাণী ভোলা মিয়ার নামে খারিজ খতিয়ান নং-১১৪৩, হোল্ডিং নং-১১৪৩ মোতবেক বাংলা সনের ১৪৩০ পর্যন্ত গত ২৩/০৮/২০২২ তারিখে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে নেন।


ভুক্তভোগী অন্যান্যরা জানান, তহশীলদার বীণা রাণী উক্ত ভূমি অফিসে যোগদানের পর থেকে একের পর এক অনিয়ম-দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা করেই যাচ্ছেন। ভূক্তভোগীরা প্রতিবাদ করতে চাইলেই তার স্বামী প্রদীপ বাবু জেলা শহরের লোক হিসেবে পরিচয়ে দিয়ে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। দীর্ঘদিন যাবৎ তহশীলদার বীণা রাণীর আচরণে এলাকার সাধারণ মানুষ অতিষ্ট।


অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বীণা রাণীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বিবার্তাকে জানান, অভিযোগের বিষয়ে সঠিক কোন কিছু জানা নেই।


এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুল হাসানের সাথে কথা হলে তিনি বিবার্তাকে জানান, মৌখিক ভাবে বিষয়টি আমি অবগত আছি।


এলাকার সাধারণ মানুষসহ ভূক্তভোগী পরিবারগুলো উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।


বিবার্তা/খালেক/রোমেল/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com