পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বৈঠাকাটা নৌকার হাটে নানা আকারের নৌকা থাকলেও নেই ক্রেতাদের ভিড়। এবার পানি না বাড়ায় নৌকার চাহিদা বাড়েনি বলে জানিয়েছেন নৌকার কারিগরেরা।
প্রতি শনি ও মঙ্গলবার উপজেলরা বেলুয়া নদীতে ও নদীর তীরে রাস্তার উপরে বসে অর্ধশত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই নৌকার হাট। সকাল থেকে শুরু করে নৌকা ক্রয় বিক্রয় চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত। এছাড়া, সেখানে প্রতিদিনই নৌকা বেচা-কেনা হয়।
নাজিরপুর উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা স্বরূপকাঠী, কাউখালী, গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া, বাগেরহাট জেলার চিতলমারী সহ বরিশাল জেলার বিভিন্ন উপজেলার মানুষ নৌকা ক্রয় করতে আসেন এই হাটে।
শনিবার (০৮ জুলাই) সরেজমিনে হাটে দেখা যায়, ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতাই বেশি। ক্রয় বিক্রয় কম হলেও সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাটে ছিল ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি।
নৌকার কারিগর চান্দুমিয়া বলেন, এ হাটে মূলত ডিঙি নৌকা বেচা-কেনা হয়। আকারভেদে পাঁচ হাজার থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত একেকটি ডিঙি নৌকা বিক্রি হয়। আমি যে নৌকাটি নিয়ে আসছি সেটা আমার তৈরি করতে ৫-৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে দশ হাজার টাকায় বিক্রি করব। সাধারণত মেহগনি, কড়ই, আম, চাম্বল, রেন্ট্রি কড়ই গাছের কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরি করা হয়। এখানে বিলাঞ্চল হওয়ায় নৌকা বিক্রি সারাবছর চলে।
একই এলাকার পাইকারি ক্রেতা আইয়ুব আলী বলেন, আমি এই হাটে আসা কারগিরদের কাছ থেকে পাইকারি নৌকা কিনে একই হাটে খুচরা বিক্রি করি। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় আর ভাসমান সবজি চাষে নৌকার ব্যবহার বেশি তাই সারাবছর কম বেশি বিক্রি হয়। তবে আজ (সকাল ৮টা) এখনো কোনো কোনো নৌকা বিক্রি করতে পারি নাই।
হাটের আর এক কারিগর অমল ব্যাপারী জানান, কোনো কোনো হাটে নৌকা বিক্রি না করে বাড়ি যেতে হচ্ছে। এমনিতেই কাঠ থেকে শুরু করে নৌকা তৈরিতে যা যা দরকার সব কিছুর দাম ভেড়ে গেছে, তার ওপরে নৌকার দাম কম। আমরা খুব কষ্টে আছি।’
নৌকা কিনতে আসা ছলেমান শেখ বলেন, তুলনা মূলক ভাবে নৌকার দাম কম। চার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় অনেক ভালো নৌকা পাওয়া যায়। একটু কম দামেই কিনলাম।
বৈঠাকাটা ভাসমান বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা জানান, ভাসমান এ বাজারে পঞ্চাশ বছর আগে থেকে নৌকা বিক্রি করা হয়। তবে বাজারটি ভাসমান সবজি বাজার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বাজারে খাজনার পরিমাণ কম তাই ক্রেতা-বিক্রেতা বেচাকেনা করে সন্তুষ্ট।
নাজিরপুর টু বৈটাকাঠা বাজার পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার করা হলে ক্রেতা বাড়বে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ব্রিজের কাজ চলছে।
বিবার্তা/মশিউর/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]