গুরুদাসপুরে কাঁচা মরিচের কেজি ৬শ টাকা
প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৩, ১৬:৪৮
গুরুদাসপুরে কাঁচা মরিচের কেজি ৬শ টাকা
গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নাটোরের গুরুদাসপুরে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬শ টাকা কেজি দরে। এটি এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। দীর্ঘদিন ধরে নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। এর মধ্যে কয়েকগুণ বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। সরবরাহ কম ও পরিবহণ সংকটের দোহাই দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।


১ জুলাই, শনিবার সরেজমিনে গুরুদাসপুরের বৃহৎ চাঁচকৈড় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। আড়তদাররা ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি বিক্রি করছেন ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে। ব্যবসায়ীরা খুচরায় তা ৬০০ টাকায় বিক্রি করছেন। যা গত মঙ্গলবার (২৭ জুন) বিক্রি হচ্ছিল ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি। অর্থাৎ তিন দিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ।


উপজেলার সব থেকে বড় সবজি বাজার চাঁচকৈড় হাট-বাজারের নাছরিন ভান্ডারের (আড়ৎ) মো.নাসিম শেখ জানান,উপজেলার নারায়নপুর,
আনন্দ নগর,কালাকান্দর,কাটাবাড়ি থেকে চাষিরা প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ কেজি কাচামরিচ তার আড়তে বিক্রি করতে আসেন। যা চাহিদার তুলনায় সামান্য। বাধ্য হয়ে পাইকাররা রাজশাহীর পুঠিয়া, বাঘা, তাহিরপুর, মোহনপুর, পাবনার ঈশ্বরদী, চাটমোহর, সাথিয়া বগুড়ার নন্দীগ্রাম,শাজাহানপুর,শেরপুর থেকে কিনে গুরুদাসপুরের বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করে।


গুরুদাসপুর পৌরসদরের আনন্দ নগর মহল্লার সবজি চাষি দেলবর হোসেন ও গোলাম মোস্তফা জানান,বেশ কিছুদিন ধরে চলমান খড়তাপের কারণে মরিচগাছের ফুল ঝরে গেছে,গাছ মরে গেছে। এরইমধ্যে শুরু হয়েছে বর্ষা মৌসুম। রোদে পুড়ে অবশিষ্ট যে গাছ জীবিত ছিলো জমিতে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতায় গাছগুলো পচে মারা গেছে। একারনে কাচা মরিচের দাম চড়া।


চাঁচকৈড় বাজারে সবজি বিক্রেতা মহরম আলী বলেন, ঈদে পরিবহন সংকট ও বৃষ্টির কারণে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম। ফলে বাজারে অতিরিক্ত দাম। আমাদের কোন কারসাজি নেই। আমরা বেশিদামে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করি। দাম বাড়ায় ব্যবসায়ীদের বিক্রি কমে গেছে ফলে আমরা ক্ষতির সম্মুখিত হচ্ছি। তবে সরবরাহ বাড়লে আশা করছি ২-৪ দিনের মধ্যে বাজার আবার স্বাভাবিক হবে।


ক্রেতা রফিক, শাজাহান, খালেক, আতিক সহ অন্তত ১০জন অভিযোগ করে বলেন,-‘পরিবহন ও বৃষ্টির দোহাই দিয়ে দাম বাড়ানো ব্যবসায়ীদের এক ধরনের কারসাজি। কাঁচা মরিচের এতো বেশি দাম কখনও কল্পনাও করতে পারেননি তারা। তাদের দাবি, ১৫ দিন আগেও এই মরিচের কেজি ছিল মাত্র ৭০ থেকে ৮০ টাকা। সে মরিচ কীভাবে ৬০০ টাকা হয়। তারা দ্রুত বাজার নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান।’


গুরুদাসপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা আনিসুর রহমান বলেন,-‘১৬ হাজার টাকার সামান্য বেতনে চাকরি করি। যদি একটি পরিবারে মাসে কাঁচা বাজার করতেই ৫-৭ হাজার টাকা লাগে তবে অন্য জিনিসপত্র কীভাবে কিনবো? তারপর আবার কাঁচা মরিচ নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড শুরু হয়েছে। এমন চললে মরিচ দিয়ে রান্না করে খাওয়া বাদ দিতে হবে।


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশীদ বলেন, গুরুদাসপুরে যে পরিমান কাচা মরিচ উৎপাদন হয় তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। প্রতিবেশী উপজেলাগুলো থেকে কাচামরিচ সরবরাহ করে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করতে হয়। অতিরিক্ত খরা ও বৃষ্টির কারণে মরিচের উৎপাদন কমেছে। এ ছাড়াও কোরবানির ঈদের কারণে পরিবহন সংকটে স্থানীয় বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম। ফলে বাজারগুলোতে মরিচের দাম ঊর্ধ্বমুখী।’


বিবার্তা/জনি/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com