লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে রাতের অন্ধকারে ২৮৮ শতাংশ ফসলি জমির মধ্যভাগে খনন যন্ত্র দিয়ে (ভেক্যু মেশিন) মাটির রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) কামাল উদ্দিন ও স্থানীয় বাসিন্দা হেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, মেম্বার কামাল জমিটি হেলালের কাছে বিক্রি করবে বলেছে। এজন্যই হেলাল সেই মেম্বারের নির্দেশে রাস্তা নির্মাণ করেছে।
৫ জুন, সোমবার সন্ধ্যায় জমির মালিক ফাতেমা বেগমের মেয়ে জামাই ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান ও দৌলত পাটওয়ারী তাদের (কামাল ও হেলাল) বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন। এরআগে রবিবার (৪ জুন) গভীর রাতে উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের তোরাবগঞ্জ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
হাবিবুর রহমান ও দৌলত পাটওয়ারী জানায়, তোরাবগঞ্জ গ্রামে প্রয়াত আবদুল খালেক চেরাঙ্গের ২৮৮ শতাংশ জমি রয়েছে। ওয়ারিশ সূত্রে একমাত্র মেয়ে ফাতেমা বেগম ওই জমির মালিক। ফাতেমা ওই জমি স্থানীয় মোহাম্মদ ইউছুফসহ কয়েকজনের কাছে বর্গা দেয়। দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে জমিটি বর্গাচাষীরা চাষাবাদ করে ফসল উৎপাদন করে আসছে।
রবিবার রাতে হঠাৎ করে ইউপি সদস্য কামালের নেতৃত্বে হেলাল ভেক্যু মেশিন এনে জমির মাঝখান দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে। এতে বর্গাচাষীরা বাধা দিতে গেলে তাদেরকে মারধর করতে তেড়ে আসে মেম্বারের লোকজন। ফসলি জমির মাটি ভেক্যু দিয়ে কেটে ওই রাস্তা নির্মাণ করা হয়। খবর পেয়ে ফাতেমার মেয়ে জামাই হাবিবু রহমান ও দৌলত পাটওয়ারী সোমবার ঘটনাস্থল গিয়ে ঘটনার সত্যতা পায়। পরে খবর পেয়ে কমলনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
বর্গাচাষী মোহাম্মদ ইউছুফ বলেন, রাত আনুমানিক ২ টার দিকে ভেক্যু মেশিন দিয়ে হেলাল জমির মাঝখানে রাস্তা নির্মাণ করছিলেন। আমি বাড়িতে ছিলাম না। আমার স্ত্রী শব্দ শুনে বাধা দিতে গেলে তারা মারধর করতে তেড়ে আসে। হেলালকে জিজ্ঞেস করেলে তিনি জানায়, কামাল মেম্বারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। কামাল তার কাছে জমি বিক্রি করবে বলে জানিয়েছে।
সাংবাদিকদের দেখে অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিন দৌড়ে পালিয়ে গেছেন। তবে তার বাড়ির লোকজন বলেছেন, যে জমিতে রাস্তা করা হয়েছে তা তাদের নয়। তারা ওই জমিটি কিনবে। ইউপি সদস্য কামালের নির্দেশনায় ওই জমির ওপর দিয়ে রাস্তা করা হয়েছে। তিনি (চেয়ারম্যান) তাদেরকে জমিটি নিয়ে দিবেন বলে জানিয়েছেন।
তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) কামাল উদ্দিন বলেন, জমিটি বিক্রির জন্য মালিকের মেয়ে জামাই হাবিবের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সে লক্ষ্যেই জমিতে রাস্তা তৈরি করা হয়। কিন্তু এখন তারা এর বিরোধীতা করছে। রাতের অন্ধকারে কেন রাস্তা তৈরি করা হয়েছে, সে প্রশ্নে সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
তোবারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর্জা আশ্রাফুল জামাল রাসেল বলেন, ঘটনাটি কেউ আমাকে জানায়নি। ইউপি সদস্য কামাল এর সঙ্গে জড়িত আছেন কি না তাও আমার জানা নেই। ভুক্তভোগীরা যোগাযোগ করলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। ভুক্তভোগীদেরকে থানায় অভিযোগ দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিবার্তা/সুমন/সউদ/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]