ঠাকুরগাঁওয়ে ব্রীজ নির্মাণে ধীর গতি; ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ!
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৩, ০০:৫৭
ঠাকুরগাঁওয়ে ব্রীজ নির্মাণে ধীর গতি; ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ!
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের বিজিবি ক্যাম্পের সামনে ঠাকুরগাঁও-ঢাকা মহাসড়কের সত্যপীর ব্রীজ নির্মাণে ধীর গতি সহ নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। ব্রীজের কাজে নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহার, পুরাতন মালামাল দিয়ে এপ্রোচের কাজ করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কনকর্ড প্রগতি কনসোর্টিয়াম লিমিটেড এর বিরুদ্ধে।


ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্রীজের এস্টিমেট সংক্রান্ত তথ্য চাইলে তারা সড়ক ও জনপদ বিভাগকে দেখিয়ে দেয়। আবার সড়ক ও জনপদের কাছে গেলে তারা বলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছে সব তথ্য আছে। এমন দায়সারা আচরনে জনগণের কাছে নির্মাণ কাজের সঠিক তথ্য নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। 


সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এবং ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের পরিচালকের মধ্যে বার্ষিক কর্মসম্পাদক চুক্তিতে উল্লেখ আছে সরকারি দপ্তর/সংস্থা সমূহের প্রতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা জোরদার করা, সুশাসন সুসংহতকরণ এবং সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে রুপকল্প-২০২১ এর যথাযথ বাস্তবায়ন। কিন্তু এই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পূর্ণ উল্টোটা লক্ষ্য করা গেছে। 


সড়ক ও জনপদ বিভাগের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, জাইকা’র অর্থায়নে জুলাই, ২০১৯ হতে জুন, ২০২০ অর্থ বছরের জন্য ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের আওতায় দেশের পশ্চিমঞ্চালের ২৬টি জেলায় জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলা মহাসড়কে ৮২টি ব্রীজ নির্মাণের নিমিত্তে ২০১৯ সালের ১৮ জুন সরকারের সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে চুক্তি হয়। চুক্তি মোতাবেক ৭টি প্যাকেজে কাজটি বাস্তবায়ন করা হবে। 


২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল দরপত্র আহবান করা হয় এবং ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ সমাপ্তি হওয়ার কথা রয়েছে। সাইনবোর্ডের তথ্য অনুযায়ী প্যাকেজ পিডাব্লিউ-০৬ এন এর আওতায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কনকর্ড প্রগতি কনসোর্টিয়াম লিমিটেড ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর ব্রিজের কাজ শুরু করে। যা দুই বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা, কিন্তু ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারনে কাজ সমাপ্তি হচ্ছে না। এতে করে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং অনেকে দূর্ঘটনারও শিকার হয়েছেন। এই জনদূর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা। 


ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের কলোনী এলাকার বাবুল হোসেন বলেন, এই ব্রীজের কাজ যেভাবে করা হচ্ছে, তা কয়েক বছরের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাবে। হাজিপাড়ার বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, যেভাবে কাজটা হচ্ছে মনে হয় দেখারো কেউ নাই, বলারো কেউ নাই। জনগণের কোটি কোটি টাকা গোচ্ছা যাচ্ছে। 


ব্রীজের দায়িত্বে থাকা কনকর্ড প্রগতি কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের এ্যাসিটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার সাব্বির আজিজ বলেন, এই ব্রীজের এস্টিমেট দেওয়া সম্ভব নয়। এই প্যাকেজের আওতায় ৮টি ব্রীজ হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে গেলে সব তথ্য পাবেন।


ঠাকুরগাঁও সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাফিউল ইসলামের কাছে ব্রীজের কাজের বিষয়ে তথ্য চাইলে তিনি বলেন, এই তথ্য আমাদের কাছে নেই। এটা পেতে হলে বগুড়া অফিসে যেতে হবে। তিনি তথ্য না দিয়ে উল্টো সংবাদকর্মীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ  করেন। 


ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রীজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের পরিচালক খান মো. কামরুল আহসান মুঠোফোনে বলেন, এব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ম্যানেজারের সাথে কথা বললে সবকিছু জানতে পারবেন।


বিবার্তা/বিধান/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com