শিরোনাম
প্রাচীন কবরের সমাধি ফলকে ‘অভিশাপ’
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০১৭, ১২:৪৭
প্রাচীন কবরের সমাধি ফলকে ‘অভিশাপ’
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

একশ বা দুশ বছরের ঘটনা নয়, আড়াই হাজার বছরের পুরনো কবর। এক নারীর সমাধিস্থলে মিললো দারুণ এক ইতিহাস, যা শুনলে চমকে যাবেন! গ্রিসের এথেন্সে ২৪০০ বছর আগের এক নারীর সমাধিস্থলে মিলেছে ৫টি ফলক। এথেন্সের কয়েকটি পানশালার কয়েকজন মানুষের অভিশাপ ছিল ফলকগুলো।


৪টি ফলকে খোদাই করে অভিশাপের কথা লেখা হয়েছে। অন্ধকার দুনিয়ার দেবতা ‘সিথোনিক’-এর কাছে অনুরোধ করা হয়েছে এথেন্সের কয়েকটি পানশালার চার জোড়া স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে। পঞ্চম ফলকটি ছিল ফাঁকা। সম্ভবত এ ফলকে অভিশাপের কথাগুলো উচ্চারণ করা হয়েছে।


একটি লোহার দণ্ডের মাধ্যমে ৫টি ফলককে এক করা হয়েছে। এগুলো গুছিয়ে ওই সমাধিস্থলে রাখা হয়। ওই সমাধি থেকে অভিশাপ সংশ্লিষ্ট দেবতার কাছে পৌঁছে যাবে প্রাচীনকালের মানুষের ধারণা এমনটাই ছিল।


একটি অভিশাপের ফলকে দিমেত্রিওস এবং পানাগোরা নামের দুজনকে উপলক্ষ করা হয়েছে। তাতে যা লেখা রয়েছে তার ভাষা অনেকটা এমন- তোমরা পানাগোরা ও দিমেত্রিওস এবং তাদের পানশালা ও সম্পদের ওপর ঘৃণা বর্ষণ করো। আমার শত্রু দিমেত্রিওস এবং পানাগোরাকে আমি অন্ধ করে দেব, রক্ত ও ছাইয়ের মাঝে, অন্যান্য মৃতের সঙ্গে...। আমি দিমেত্রিওসকে এমন শক্তভাবে বাঁধবো, যতটা শক্তভাবে সম্ভব এবং আমি তোমার জিহ্বায় একটা কাইনোটোস দিয়ে আঘাত করবো।’


কাইনোটোস শব্দের অর্থ কুকুরের কান। এটা প্রাচীন গ্রিসের জুয়ার একটি চাকতির নাম, যার মাধ্যমে সবচেয়ে কম মূল্যের কিছু বোঝানো হতো। জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির প্রশিক্ষক জেসিকা ল্যামোন্ট সম্প্রতি ‘জিৎসরিফ্ট ফার প্যাপিরোলোগি আন্ড এপিগ্রাফিক’ জার্নালে গবেষণাপত্রে এসব তথ্য প্রকাশ করেছেন।


একটি মানুষের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে পেরেক ঠোকানোর মতো কর্মকাণ্ড যেমন হবে, অভিশাপপূর্ণ ফলকের মাধ্যমে তেমনি ফুটে উঠেছে। ২০০৩ সালে গ্রিসের ইফোরেট ফর প্রিহিস্টোরিক অ্যান্ড ক্লাসিক্যাল অ্যান্টিকুইটিসের পুরাতত্ত্ববিদরা এক নারীর সমাধিস্থল খোদাই করে ফলকগুলো খুঁজে পান।


পিরাউইসের উত্তরে সমাধিটির সন্ধান মেলে। এটা পোর্ট অব এথেন্সের কাছেই। অবশ্য কবরটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ফলকগুলো নিয়ে গবেষণা করছিলেন। লাইভ সায়েন্সকে ল্যামোন্ট জানান, অভিশাপ-সম্বলিত ফলকগুলোকে কার্যকর করতে তা সমাধিতে রাখার নিয়ম পালন করা হতো প্রাচীন গ্রিসে। এমন একটি স্থান যেখানে দেবতার সঙ্গে মৃত বা ফলকের যোগাযোগ ঘটবে বলে বিশ্বাস করা হতো। হয়তো মৃত নারীর সঙ্গে অভিশাপের কোনো সম্পর্ক নেই। অভিশাপ প্রদানকারী ওই সময় এ নারীর কবরে ফলকগুলো রেখে দেয়ার সুযোগ পেয়ে যান।


ধরে নেয়া যায়, সমাধিস্থলে প্রবেশের ব্যবস্থা ছিল। ফলকে লেখা কথাগুলো স্পষ্ট ছিল। সম্ভবত কোনো পেশাদার অভিশাপ লেখক খোদাই করে এসব লিখেছিলেন। মারাত্মক ভাষায় অভিশাপ প্রদানের বিষয়টি এতদিন পর উদ্ধার হওয়ার ঘটনা সত্যিই বিরল। ল্যামোন্টের মতে, যিনি অভিশাপ করেছেন, সম্ভবত তিনি পানশালার মালিক ওই চার জোড়া স্বামী-স্ত্রীর প্রতিযোগী কোনো ব্যবসায়ী। কোনো না কোনো কারণে এমন অভিশাপ। তাদের সঙ্গে তার বিরোধও থাকতে পারে। সূত্র: ফক্স নিউজ।


বিবার্তা/জিয়া


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com